দশ বছর পর
দশ বছর পর


বিয়ের দশ বছর পেরোনোর পর কি নতুন করে মন প্রেম চায় ? কে জানে বাবা ?
রোহিত আর উর্মিলার প্রেম করে বিয়ে । আজ ১০ বছর পর দুজনেই যেন দুটো জগতে বাস করে । ছেলে অনীষকে নিয়ে ব্যস্ত উর্মিলা আর বিজনেস , ট্যুর নিয়ে ব্যস্ত রোহিত ।
রোহিত একটা অজানা প্রোফাইল থেকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পেতে কনফার্ম করেছিলো । নাম রীতা । কোনো ছবি নেই কিন্তু বন্ধুত্ব বেশ জমে উঠেছে ।
আজ একটা টেণ্ডার পাশ ছিলো । বেশ ফূর্তি মনে । রাতে খাওয়া দাওয়া শেষ । দুজনে দুপাশে মাঝখানে ছেলে শুয়ে । ছেলে ঘুমোচ্ছে আর বাবা মা ফোন ঘাঁটতে ব্যস্ত ।
রীতার পিং , " কি মশাই কী খবর ? খুব খুশি মনে হচ্ছে ? "
ধরফর করে উত্তর দিলো রোহিত , " কী করে জানলে ? "
" তোমার পোস্ট দেখে । প্রেমের গান , কবিতা পোস্ট করছো যে । "
" ও হো তাই বলো । ওই একটা টেণ্ডার পাশ হলো । "
কানের কাছে টাইপের আওয়াজ পেয়ে ছেলে ঘুম গলায় বললো , " বাপি , মাম্মাম শুয়ে পড়ো । "
" শুচ্ছি বাবা । তুমি ঘুমোও । ", বললেন রোহিত ।
আবার চ্যাট শুরু । " তোমার ছবি তো পাঠাও এবারে একটা । " লিখলো রোহিত ।
" কল্পনায় একটা রূপ ভাবো না ! "
" চলো কোথাও ঘুরে আসি । "
" কোথায় ? "
" বকখালি । "
" হুমম এই রবিবার তবে টিকিট করো । "
" ওকে ম্যাডাম । "
কথামতো গোপনে দুটো টিকিট কেটে রাখলেন রোহিত । রীতা বলেছে দক্ষিণবঙ্গ বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়াবে । স্ত্রীকে ক্লায়েন্ট এসেছে বলে স্যুট পড়ে বেরিয়ে গেলেন ।
রীতা তার ছবি দেখে চিনেছে তাই সে স্ট্যান্ডে ঠিক চিনে নেবে । একা দাঁড়িয়ে রোহিত । বাসের মাত্র পাঁচ মিনিট দেরী । কেউই তো এলো না । ফিরে যাবে ভাবছে এমন সময় কাঁধে টোকা ।
না ফিরেই বললেন , " চলো চলো । ছেড়ে দিলো বলে । "
হনহনিয়ে বাসের দিকে এগিয়ে গেলেন মহিলার সাথে । বাসে উঠে পিছন ফিরে বলতে যাবেন , " জলদি এসো " , ঠিক তখনই বোঝেন এ তাঁর স্ত্রী উর্মিলা ।
" তুমি ? "
" অবাক হলে ? আমি সেই রীতা যার সাথে তুমি ফেসবুকে কথা বলে প্রেমে পড়েছো । কেমন ? "
মাথা হেঁট করে রোহিত বললো , " সরি উর্মিলা । "
" ইটস ওকে । এরকম হয়েই থাকে । তবে আমি আছি সবসময় পাশে তাই এরকম ভুল করলেও সংশোধন হয়ে যাবে । "
ছেলেকে নিয়েই এসেছিলেন উর্মিলা । সবই প্রিপ্ল্যানড তাই ওর টিকিট আলাদা কেটেছিলেন একই বাসে । ভুল তো মানুষমাত্রই করে , তবে তা শুধরে দিতে পাশে কাউকে পেলে তার থেকে বাঁচা যায় ।