চমক
চমক


হুট করে লকডাউনের সিদ্ধান্তে কেঁপে উঠল অর্চনা। পৃথিবী ভয়াবহ অসুখে ভুগছে যদিও তবুও দার্জিলিং এর কনভেন্টে রাখা তার নবছরের ছেলে আকাশকে কীভাবে নিয়ে আসবে সে এখন কলকাতায়??? এদিকে মায়ের কেমোথেরাপিরই বা কী হবে??? ইগোর কাছে হেরে ফোনটা করেই ফেলল অর্ণবকে। এত রাতে ওদের প্রাইভেট মোমেন্টে হয়তোবা কল করাটা ঠিক হয়নি। ওর নতুন স্ত্রী রাগ করতে পারে। আসলে অর্ণব যদি আকাশকে একটু এনে দিতে পারত, দিন দুয়েক তাহলে মাকে এভাবে একা ফেলে তার যেতে হতোনা, আকাশ তো ওরও ছেলে। অর্ণব পরদিন দুপুরে যখন কলব্যাক করল, ততক্ষণে রওনা দিয়েছে সে শিলিগুড়ির উদ্দেশ্যে গাড়ি ভাড়া করে। প্রয়োজনে অর্ণবকে জীবনে কখনোই পাওয়া গেল না, এটাই আপশোষ থেকে
গেল তার।
তিনদিন পর কলকাতায় ফিরল সে ছেলেকে নিয়ে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে, ভাবলো এবার অবশেষে অভাগা কপাল সাথ দিলো এইবার। কিন্তু পৃথিবীর এই গভীর অসুখের সময় তার জন্য আরো কিছু চমক বাকি ছিল। গাড়ি থেকে নামতেই দেখে বাড়ির সামনে গুটিকয়েক লোক, এই লকডাউনের মধ্যেও.... স্ট্রেঞ্জ তো !!! একজন বলল, দিদি মাসিমা হাঁসফাঁস করছিলেন, সবেমাত্র সামনের নার্সিংহোমে ভর্তি করা হলো, আপনি দ্রুত যান, মনে হয় একটা মাইল্ড অ্যাটাক।
দ্রুত পাগলের মতো ছুটে গেল, রিসেপশন থেকে মা কোন রুমে আছে জেনে গিয়ে দেখে ডাক্তার বাবু নতশিরে সদ্য বের হয়ে যাচ্ছেন ঘর থেকে। "নো মোর"- শব্দদুটির চমকে অজ্ঞান হয়ে গেল অর্চনা।