বুড়োর ঝুলি
বুড়োর ঝুলি


বুড়োর ঝুলি তিন বিঘা জমি। বুড়ো অজয় দেব। যেদিন সংসারে ঝগড়া হয় সেদিন ই জমি বিক্রির প্রসঙ্গ ওঠে। আবার রাগ কমতেই ভুলে যায়। এই জমিটা তার বিশেষ অর্থ, যার বলে সে মাথা উচু করে বাচে।
দাদু আর কত দিন জমি আগলে বসে থাকবে।
সারা জীবন।
অনেকটা ঘা এর গন্ধে খেপে ওঠে সমর। ঘা এ আচড় দিতে ইচ্ছে হয়। সে যে কাজ করত সেটা বন্ধ হয়ে গেছে। দাদু যদি তাকে সাহায্য করে, তবে সে একটা দোকান খুলতে পারে।বাপের পেনশন থেকে খাওয়া খরচ চলে। বাবার কথা হচ্ছে, বড়ো করিয়েছি, এবার রোজগার কর আর খাও। জমিটা মাঝ সমুদ্রে একটি দ্বীপের মতো মনে হয়, যেখানে ছায়া আছে আশ্রয় আছে।
এই নীরব আশ্রয়ের আর এক ভাগীদার রাজীব। সে চাকরি করে। বাড়ির ছাদ করতে গিয়ে বেশ কিছু লোন হয়েছে। রাজীব মাঝে মাঝে দাদুর খবর নেয়। চবনপ্রাশ, প্রেশারের ওষুধ এনে দেয়।
দাদু কেমন আছেন? বুড়ো সন্দেহের চোখে তাকায়।
বলল, যেমন ঈশ্বর রাখেন।
এভাবে যত দিন গড়িয়ে চলতে লাগল, ততই এই দুজনের মধ্যে এক প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হল। দুজনেই অপেক্ষা করতে থাকে দাদুর মৃত্যুর। সে দিন ও এল। দু:খ তো হল কিন্তু তার চেয়ে ও বেশি এক চাপা উত্তেজনা ছিল যে জমিটা দাদু কাকে দিয়ে গেছেন।
পরে জানা যায়, জমি টা আগেই বিক্রি হয়ে গিয়ে ছিল। শুধু বাকি ছিল রেজিস্ট্রি করা। সেটাও মৃত্যুর আগে করে দিয়েছেন।