ভরসা
ভরসা
পুতুল বেশকিছুদিন থেকেই লক্ষ্য করছে দীর্ঘদিনের অব্যবহৃত বারান্দার জল যাওয়ার মোটা পাইপটার ভেতর একটা চড়ুই খড়,কাঠি যখন যা পাচ্ছে তাই নিয়ে ভেতরে ঢুকছে।সে বুঝতে পারে পাখিটি তার অনাগত সন্তানদের জন্য একটা বাসা তৈরী করছে,একটা সুরক্ষিত আশ্রয়।
চড়ুই দম্পতি খুব ব্যস্ত এখন।মাঝেই মাঝেই পাইপের ভেতর থেকে তাদের ছানাদের কিচির মিচির শুনতে পায় পুতুল।প্রায় তার সাধ জাগে ঐ চড়ুই ছানা গুলোকে দেখতে,চড়ুই দম্পতির সংসারের হাঁড়ির খবর জানতে।কটা ছানা তাদের,কোন ছানাটা সব থেকে বেশী দুষ্টু,কোনটা শান্ত,কোনটা বেশী কিচির কিচির করে,কোনটা খাবার জন্য বাকিদের সাথে বেশী মারামারি করে,কোন ছানাটা আবার সবতেই উদাসীন এই সব খবর জানতে পুতুলের বেশ ইচ্ছা জাগে।তার এই শিশুসুলভ ইচ্ছার জন্য মাঝে মাঝে সে নুলির মধ্যে উঁকি মেরে দেখেও।
কি জানি উপরওয়ালার কেমন ইচ্ছা!একদিন সকালে উঠে পুতুল দেখে একটা চড়ুই ছানা উঠোনে পড়ে আছে আর মা চড়ুইটি কার্নিশে বসে খুব ডাকছে।পুতুল এক ছুটে উঠোনে এসে চড়ুই ছানাটিকে আলতো করে পরম মমতায় হাতে তুলে নেয়। ভালো করে চোখও ফোটেনি ছানাটার।তারপর ছানাটার জন্য একটা ছোট্টো নরম বিছানা করে প্রতিদিন তাকে পরম আদরে-স্নেহে-ভালোবাসায় লালন করতে লাগল।এই সব কিছুই মা চড়ুইটি প্রতিদিন লক্ষ্য করত,দেখত। প্রথম প্রথম না হলেও পরে তার সেই দৃষ্টিতে ছিল পুতুলের প্রতি ভরসা আর বিশ্বাস।
ছানাটা এখন উড়তে শিখে গেছে।প্রায় সে এসে দেখা দিয়ে যায় তার আর এক মাকে।

