STORYMIRROR

Md Ahmed

Horror

4  

Md Ahmed

Horror

(ভৌতিক সত্য ঘটনা)-ভয়ংকর কালো বিড়াল ও আমরা

(ভৌতিক সত্য ঘটনা)-ভয়ংকর কালো বিড়াল ও আমরা

4 mins
3.2K

আজকে যে ভৌতিক ঘটনা বলবো সেটা আমার নিজ চোখে দেখা। কোনো দিন ভাবতেও পারি নাই এমন কোনো ঘটনার সম্মুখীন হবো ,কখন কার কোন বিপদ আসে তা কেউ বলতে পারে না। শহর ছেড়ে আমার মেজো চাচা গ্রামে বাড়ি করেছে ,আমার চাচার দুই ছেলে এক মেয়ে ,মেয়ে টা সবার ছোট। বড় ছেলের নাম রাফি ছোট ছেলের নাম শাফি ,রাফি আমার থেকে ৩-৪ বছরের ছোট তবে ছোট হলেও আমাদের বন্ধুর মত সম্পর্ক।

 আমি চাচার বাড়িতে মাসে একবার হলেও বেড়াতে যায়। আমার গ্রাম খুব ভালো লাগে ,রাতের বেলা চাঁদের আলোয় গ্রামের রাস্তায় ঘুরতে মজা করতে আমার খুব ভালো লাগে , তাই আমি গ্রামে ছুঁটে যেতাম। একবার শীতে চাচার বাড়ি বেড়াতে গেলাম তখন আমি ইন্টার এ পড়ি সবে মাত্র কলেজে ভর্তি হয়েছি। আর রাফি তখন ক্লাস নাইন এ পড়ে। 

সে বার চাচাদের গ্রামে একটা বড় মেলা হচ্ছিলো ,আমি আর রাফি বিকেলে মেলায় ঘুরতে গেলাম। অনেক বড় মেলা অনেক কিছু মেলায় পাওয়া যাচ্ছে ,আমরা নাগর দোলা তে উঠলাম অনেক কিছু খেলাম ,কিন্তু এতো তাড়াতাড়ি যে রাত হয়ে যাবে ভাবতেও পারি নাই। এশার নামাজের যখন আজান পড়লো তখন রাফিকে বললাম রাত হয়ে গেছে এখন চল বাড়ি যাই ,রাফি বললো কি যে বলো কেবল এশার আজান দিলো বাড়ি যাওয়া এখনো দেরি আছে ,চলো আমরা সার্কাস দেখি। আমিও ওর কথায় কিছু না ভেবে বললাম চল আজকে সার্কাস দেখবো।

 কিন্তু সার্কাস দেখা শেষ হলে যে রাত ১২ টা বাজবে তা কল্পনায় করি নাই। মেলা থেকে বের হয়ে বাড়ির দিকে হাটতে শুরু করলাম ,তখন আমার মনে কেমন যেন ভয় ভয় লাগতে ছিলো কারণ চাচা বাড়ি যে পথ দিয়ে যাবো সে পথে একটা স্মশান ঘাট আর একটা পুরোনো কবর স্থান আছে ,বুকটা ভয়ে দুরু দুরু করতে লাগলো। রাফিকে বললাম তোর কারণে এতো রাত হয়ে গেলো ...শীতের রাত আকাশে জোসনার আলোয় দুজন পথ চলছি।


 কাঁচা রাস্তার দুপাশে খেজুর গাছ ,গাছে রসের হাড়ি ঝুলছে ,ধুলো ভরা রাস্তা টা চাঁদের আলোয় চক চক করছে। একেবারে হাটতে খারাপ লাগছেনা আবার কিছুটা ভয় ভয় ও করছে সামনে কি হয়। শ্মশান গেট আর কবর স্থান না পেরুনো পর্যন্ত ভয় কাটছে না। মনে মনে দোয়া পড়ছি আর হেটে চলছি ,কিছুটা দূর থেকে শ্মশান গেটের ছোট্ট একটা বাতির আলো চোখে পড়লো ,তখন বুঝতে পারলাম সামনে শ্মশান গেট।

 আমার ভয় টা আরো বেশি কাজ করতে লাগলো ,জীবনে প্রথম এমন ভাবে রাতে শ্মশানএর সামনে দিয়ে যাচ্ছি। দোয়া পড়তে পড়তে শ্মশান এর গেট ভালো ভাবে পার হলাম কিন্তু শ্মশান পার হবার পর পেছনে দেখি একটা বড় কালো কুচকুচে বিড়াল আমাদের পিছু নিয়েছে। আমাদের পিছু পিছু আসছে আর মিঁউ মিঁউ ডাকছে। বিড়াল টা এত কালো ছিল যে শুধু তার চোখ দুটো দেখতে পাচ্ছিলাম ,অনেকক্ষণ ধরে বিড়াল টা পিছু লেগে থাকলো।

 রাফি ক্ষেপে গিয়ে রাস্তা থেকে কয়েক টা মাটির ঢিল নিয়ে বিড়াল এর দিকে ছুড়তে লাগলো কিন্তু অবাক হয়ে গেলাম ঢিল একটাও বিড়ালের গায়ে লাগলো না। তখন আরো বেশি ভয় করতে লাগলো আর মনে হলো ইটা হয়তো কোনো বিড়াল না অন্য কিছু ,হটাৎ দেখি বিড়াল টি আর আমাদের পিছনে নেই ,আর আমরাও তখন পুরোনো কবর স্থান পার হয়ে চলে এসেছি তখন মনে একটু সাহস ফিরে পেলাম।

 কিন্তু তার কিছু দূর যেতেই দেখলাম সেই বিড়াল টা আবার আমাদের সামনে এবার আমার খুব ভয় পেলো কারণ এবার বিড়াল টা অনেক বড় দেখতে পেলাম এতো বড় বিড়াল আমি আগে কোনোদিন দেখি নাই ,রাফি তখন বুঝে গেছে এটা বিড়াল না অন্য কিছু। রাফি বললো ভাই কোনো দিক তাকাবে না সোজা হাটতে থাকো ভয় করোনা ভাই,হটাৎ যা দেখলাম যা আমার চোখ কে বিশ্বাস করাতে পারলাম না।

 দেখলাম বিড়াল টা সামনের একটা বড় শিমুল গাছে উঠে পড়লো আর অনেকটা বড়ো আকৃতি ধারণ করলো। আমার দৃশ্য টা দেখার পর সারা শরিল কাঁপতে শুরু করলো ,রাফিও ভয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারছে না ,মনে মনে আল্লাহ কে ডাকছি আর বলছি আল্লাহ বিপদ টা দূর করে দাও। দুজন পথে দাঁড়িয়ে আছি সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারছি না যদি বিড়াল টা আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পরে।

 বিড়াল টা আমাদের দিকে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে ,কাছে পেলে যেন আমাদের খেয়ে ফেলবে। হটাৎ কিছু দূর থেকে একটা টর্চ লাইটের আলো দেখতে পেলাম ,কে যেন আমাদের দিকে আসছে। লোকটি আমাদের কাছে আসতেই আমাদের দিকে টর্চের আলো মেরে বললো কে ওখানে রাফিরা নাকি ,রাফি বললো হ্যা। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফিরে এলো ,দেখলাম আমার চাচা আমাদের খুঁজতে বের হয়েছে।

 চাচা রেগে গিয়ে বললো এতো রাতে কোথায় ছিলি তোরা ,চাচা কে বললাম ওই দেখো শিমুল গাছে কি ,,,চাচা গাছের দিকে টর্চের আলো মারলো কিন্তু কিছুই দেখতে পেলো না ,চারপাশে টর্চের আলো দিয়ে কোথাও সেই বিড়াল কে দেখতে পেলো না। হাফ ছেড়ে বাচলাম চাচার সাথে বাড়ি তে এসে সব ঘটনা খুলে বললাম।

 চাচা সব কথা শুনে বললো আজকে তোমরা অনেক বড় বিপদ থেকে বেঁচে গেছো আল্লাহ কে অনেক ধন্য বাদ। এরপর থেকে চাচা বাড়ি গেলেও রাতে শ্মশানআর কবর স্থানের রাস্তার দিকে যাইনা। আল্লাহ কে অনেক শুকরিয়া যে সেদিন চাচাকে আমাদের খুঁজতে পাঠিয়েছিল। ঘটনাটি আজও আমায় ভীত করে। 

আজকে এই পযন্ত ,সবাই ভালো থাকবে। 


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Horror