অশনি সঙ্কেত
অশনি সঙ্কেত
মামী আজ আসি আবার একদিন আসবো'' এসব বলে আমি আমার মামার মেয়েকে নিয়ে আমার বাড়ি ফিরতে যাবো এমন সময় মামি পিছু ডেকে বললেন '' তোর দাদা কে পাঠাচ্ছি দাড়া।"
-" না গো মামি লাগবে না।" বললাম আমি কিন্তু ওটাই হলো আমার কাল। আমি আর বোন হেঁটে হেঁটে যাচ্ছি আমার বাড়ি। বেশি দূর নয়। কিন্তু কিভাবে পথ টা বেড়েই চলেছে বুঝতে পারছি না। আমার বোন আমার থেকেও বুদ্ধিমতী সেও কিছু বুঝতে পারছে না।
"কি হবে এবার?" মনে মনে বললাম। জানি না আর কোনো উপায় আছে কিনা।
-"ওই দেখ দিদি সিংহ দুয়ার এর মত কিছু দেখি।" সামনের দিকে আঙুল তাক করে বলছে।
-" কি বলিস সিংহ দুয়ার? আবার এখানে?কই দেখি?" বলে ওর আঙ্গুল অনুসরণ করে দেখতে দেখি সত্যি একটা সিংহ দুয়ার কিন্তু এখানে কি করে এলো। কিছু না ভেবে আমরা ঢুকে গেলাম সিংহ দুয়ার এর মধ্যে। ঢোকার ইচ্ছা ছিলো না, তবুও ঢুকে গেলাম। ঢুকতে দেখি যা ভেবছিলাম সেরকম নয় ভিতর টা। ভেতর টা পুরো ভাঙ্গা কোথাও বলি খসে পড়েছে। আবার কোথাও দেখি উপরে ছাদ এর কোথাও কোথাও ভাঙ্গা।
"কি ওটা? দেখ দিদি কি ওটা?" বোনের কিছু চোখে পড়েছে যেনো। সেই দিকে আমিও তাকায়।
"সত্যি তো! কেমন উপরে ছাদের কিছুটা অংশ কাঠের তৈরি।ওটা খোলা যাবে ওটা? আবার সামনে দেখছি আর পথ নেই।" সব কিছু দেখে আমি বলি।
"ওই দেখ দিদি একটা সিড়ি দেখছি ওটা দিয়ে ওঠা যাবে কি?"বোন সিড়ির দিকে তাকিয়ে বলে।
"হ্যাঁ তাইতো! দেখ তো ওটা দিয়ে ঠেলা দিলে উপরের রাস্তা টা খোলা যায় কিনা?" আমি বোনে
র চোখের দৃষ্টি অনুসরণ করে দেখে বলি। তারপর আমরা ওই সিড়ি দিয়ে জোরে জোরে কাঠেতে মারলাম। দেখি কিছুক্ষন পর দেখি খুলে গেছে। আমরা সিড়ি টা দার করাই। ভাবছিলাম ওটা দার করানো যাবে না তবু দেখি দিব্যি দাড়িয়েছে। সিড়ি দিয়ে বোন আগে উঠেগেলো আমিও ওঠার চেষ্টা করলাম করলাম। আমার হাত পা কাপছে। ভয় লাগছে এই বুঝি পরে গেলাম। দেখি আমি উঠে যেতে পারলাম। উপরে উঠে দেখি আরও একটা ঘরে চলে এসেছি। কিন্তু এটা তো বাইরে দিয়ে চোখে পড়েনি। ভালো করে লক্ষ্য করতে বুঝলাম ওটা আমারই বাড়ির আমার দাদার ঘর। কিন্তু এভাবে কীকরে এলাম।
"এই দিদি দেখ তোর বাড়ি চলে এলাম।" ভালো করে দেখে বুঝতে পারে বোন। তবু আমার মনের খিটকা গেলো না। হটাৎ আমরা শুনতে পাই খুব জোড়ে দরজা বন্ধ হওয়ার শব্দ। পেছনে ঘুরে তাকায়। দেখি দরজা বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা দৌড়ে যায় দরজার কাছে। দেখি আর সেটা খুলছে না। আমরা জানলার কাছে যাই। আমি জানলা দিয়ে খুব জোড়ে জোড়ে চেঁচিয়ে পাশের বাড়ির লোক কে ডাকছি দরজা খুলে আমাদের মুক্তি দিতে। কিন্তু কোনো লাভ হলো না। হঠাৎ জানলার ধার থেকে দুটো শিখল এসে বেধে যায় বোনের হাত। আমার হাতেও বাঁধতে আসছে কিন্তু তার আগেই আমি সরে যায়। তখন দেখি শব্দ করে দরজা খুলে যায়। আমি দৌড়ে এ ঘর থেকে ও ঘরে যাই কোথাও হাত দিচ্ছি না ভয়ে যদি আমিও বন্দী হয়ে যায়। এমন সময় মার গলা শুনি।কিন্তু কোথায় মা আমি তো দেখতে পাচ্ছি না। মনে হচ্ছে, মনে হচ্ছে আমাকে সজোরে কেউ ঠেলছে। তারপর আমার চোখ খুলে যায়। বুঝতে পারি ওটা দুষ স্বপ্ন। তবু সেই ভয় এখনও কাটছে না আমার।