অপেক্ষা
অপেক্ষা
গল্পটা মৌপ্রিয়া আর দেবজ্যোতির।মৌপ্রিয়ার বয়স তখন পনেরো।কৈশোরের সেই গোধূলি বেলায় ওর জীবনে এলো দেবজ্যোতি।সে তখন বছর আঠারোর যুবক।দুর্গাপুজোর এক নবমীর সন্ধ্যায় স্কুল বাড়ির সেই বট গাছ তলায়, আলো-আঁধারিতে দেবজ্যোতি বলেছিল 'ভালোবাসি তোমায়'।ভালোবাসা শব্দটার ভার যে কতটা সেটা তখনো ঠিকঠাক বুঝে উঠতে না পারলেও দেবজ্যোতির মুখ থেকে শোনা কথাগুলো মৌপ্রিয়ার হৃদস্পন্দনকে বাড়িয়ে দিয়েছিল কয়েক গুণ।বাড়ি ফিরে এসে রাতে আর ঘুম আসেনি মৌপ্রিয়ার।সেই থেকেই শুরু বিনিদ্র রাত্রি যাপনের। তারপর থেকে কত রাত না ঘুমিয়ে কেটেছে। দেবজ্যোতি সাথে কথা বলতে বলতে ভোর হতে দেখেছে ,কখনো বা কেটেছে দেবজ্যোতিকে ফিরে পাবার অপেক্ষায়।মাঝে মাঝেই নতুন নতুন মানুষের কাছে সুখ খুঁজতে গেছে দেবজ্যোতি আর তার ফেরার অপেক্ষায় থেকেছে মৌপ্রিয়া। ভালোবাসা শব্দটার প্রকৃত অভিব্যক্তি তো অপেক্ষাতেই লুকিয়ে।মৌপ্রিয়ার অপেক্ষা,দেবজ্যোতির ফিরে আসা আর তারপর ওকে আবার আগলে রাখা এসবের মধ্যে দিয়ে কেটে গেছে মাঝের অনেকগুলো বছর।পনেরো বছরের সেই মৌপ্রিয়া এখন সাতাশ বছরের প্রাপ্তবয়স্কা।বয়েস আর অভিজ্ঞতা দুইই ওকে অনেকটা পরিণত করেছে।জীবনটা যে নেহাতই কাক ভোরে দেখা কোন মিষ্টি স্বপ্ন নয় এটা এখন ভালই বোঝে মৌপ্রিয়া,কাঁধে তার এখন অনেক দায়িত্ব।তবে বারো বছর আগে দেবজ্যোতির জন্য যে রাত জাগা শুরু হয়েছিল সেটা আজও থামেনি। এখন রাত ১২টা ১৫।মৌপ্রিয়া জেগে আছে ফেসবুকে একটা ভিডিও লাইভ দেখার জন্য।আজ দেবজ্যোতির বিয়ে।আর সেটা লাইভে দেখার অপেক্ষায় বসে মৌপ্রিয়া। দেবজ্যোতিকে বরের সাজে দেখার ইচ্ছে যে ওর অনেকদিনের।