Sanghamitra Roychowdhury

Tragedy Romance Classics

4  

Sanghamitra Roychowdhury

Tragedy Romance Classics

অন্য কারোর সঙ্গে বেঁধো ঘর

অন্য কারোর সঙ্গে বেঁধো ঘর

7 mins
3.6K


তবুও তুই খুব চেনা,


আমার সারা শরীর জুড়ে,


মনের কোটরখানা ঘিরে।


চোখের পাতা ভেজানো জলে,


আলতো হাতে ছোঁবার ছলে।


ভরা পেটের ঢেঁকুর তোলায়,


টিকলি নূপুর ঝুমকো খোলায়।


****************


লাইন ক'টা লিখে চোখের জলে ভাসছিলো চন্দ্রা।


ও আর ভাবতেই পারছে না। যা জেনেছে, এমনকি যা দেখেছে, সেসব কিছুতেই মানতে পারছে না চন্দ্রা। একটা মানুষকে এতোটাই ভুল চিনলো? এতো বছরের চেনা পরিচয় সম্পর্ক.... এসবের মধ্যে দিয়ে তাহলে একটা মানুষকে চেনা যায় না? এসব শুধুই ভুল...... ভ্রম তাহলে! আজকাল চন্দ্রা গুছিয়ে কিছু ভাবতেই পারছে না। কিছু লিখতেও পারছে না। কলেজে ঠিকমতো ক্লাস নিতে পারছে না, পড়াতে পারছে না। স্টুডেন্টরাও লক্ষ্য করেছে চন্দ্রার এই অন্যমনস্ক ভাব, জিজ্ঞেসও করেছে তারা, "ম্যাম, আপনার কি শরীর খারাপ?" ম্লান হেসেছে শুধু।


কলিগদের প্রশ্নের জবাবেও দায়সারা উত্তর দিয়ে পাশ কাটিয়ে গেছে চন্দ্রা। কিন্তু নিজেকে কি করে ফাঁকি দেবে চন্দ্রা? আয়নার সামনে দাঁড়ালে নিজের চোখে চোখ রাখতে পারছে না। আয়নায় ওর নিজের প্রতিবিম্ব ওকে ব্যঙ্গ করছে। আয়নার ভেতরের চন্দ্রাটা ঠোঁটে কুটিল হাসি ফুটিয়ে বলছে যেন আয়নার বাইরের চন্দ্রাকে, "গেলি তো হেরে ভূত হয়ে? কার কাছে হারলি? হারলি তো হারলি, তাও কিনা একটা.........!" আর্তনাদ করে উঠলো চন্দ্রা। ওর সেই কান্না পাক খেয়ে খেয়ে ওর ফ্ল্যাটের দেওয়ালে দেওয়ালে ধাক্কা খেয়ে প্রতিধ্বনিত হয়ে ফিরে আসতে লাগলো চতুর্গুণ হয়ে চন্দ্রার কানে, "হেরো, হেরো, হেরো......" চন্দ্রা দু'হাতে কান ঢেকে বসে পড়লো মেঝেতে।


**********************


"একটা হরিণ শাবকের ছবি তুলেছিলাম আমি, গুজরাটের গির অরণ্যে বেড়াতে গিয়ে। বাড়ীতে ফিরে এসে ছবিটা প্রিন্ট করিয়ে একটা সুন্দর বাহারি ফটোফ্রেমে বাঁধিয়ে টাঙিয়ে রেখেছি, বসার ঘরের দেওয়ালে। আজকাল রোজই আমার বর অয়ন অফিসে চলে যাওয়ার পরেই ফটোফ্রেম থেকে বেরিয়ে এসে হরিণ শিশুটি আমার আঁচল কামড়ে ধরে এঘর ওঘর ঘুরে বেড়ায়, আমাকে হয়তোবা শকুন্তলা ভাবে। তারপর......"


লেখাটা থামালো চন্দ্রা, এসব কী লিখছে ও? কেন লিখছে? চন্দ্রা মনে মনে ভাবলো, "আমি কি তবে পাগল হয়ে যাচ্ছি?" পরক্ষণেই আবার নিজেই নিজেকে শোনালো, "আমি কেন পাগল হবো? কার জন্য? একটা........" আবার চিন্তার সুতোটা ছিঁড়ে গেলো। চন্দ্রা ঠিক করলো, ও কোনো কাউন্সেলরের কাছে যাবে। ও বুঝতে পারছে, ইমিডিয়েটলি ওর নিজের কাউন্সেলিং দরকার, আরো খারাপ কিছু মানসিক পরিস্থিতি তৈরী হবার আগে। আগে চন্দ্রা নিজের সাইকোলজিটা বুঝতে চায়। সত্যিই কি চন্দ্রা ওভাররিয়্যাক্ট করছে? নাকি ওর এই মানসিক যন্ত্রণা অস্থিরতা সব স্বাভাবিক, যেমন একজন পরিপূর্ণ স্বাভাবিক নারীর হওয়া উচিৎ!


কলিং বেলের জোরালো আওয়াজে চন্দ্রার চিন্তাগুলো এলোমেলো হয়ে গেলো আবার। দেওয়াল ঘড়িটার দিকে তাকালো চন্দ্রা, অয়নই হবে, অয়নের ফেরার সময় হয়েছে, হ্যাঁ অয়নই।


দরজা খুলে দিয়েই পিছন ফিরে চন্দ্রা শোবার ঘরে ঢুকে গেলো তড়িঘড়ি।


**********************


- কি হোলো, রাগ পড়লো? ভাঙলো অভিমান?


 অভিমানিনী?


- উঁহু।


- কি, উঁহু?


- তুমি তো আমাকে আর আগের মতো ভালোই


বাসো না!


- ওও, এই? আর তুমিও যে সারাদিন লেখা আর


লেখা করো, পড়া আর পড়ানো করো, তার বেলা? আমার বুঝি অভিমান হতে নেই?


- নেইই তো! ওসব মান অভিমান আমার একার।


বুঝলে মশাই?


খুব স্বাভাবিক কথোপকথন, শুনে সবাই ভাববে এই দম্পতির মধ্যে সমস্যা কোথায়? এতো মান-অভিমান পালা শেষে এখন মানভঞ্জন পালা শুরু হবে। কিন্তু না, এতোটা সহজ সরল সমাধান বোধহয় আর নেই চন্দ্রার জীবনে! কোনোকালেই কী ছিলো?


এই মহান প্রশ্নটির উত্তরটাই চন্দ্রা জানতে চায় মনে- প্রাণে, তাছাড়া জানাটা বোধহয় চন্দ্রার কাছে খুব জরুরিও এই মুহূর্তে।


  

***************


কাল সারা রাত ঘুম হয় নি চন্দ্রার, জীবনটাকে ওর ব্যর্থ, একটা ভারী বোঝার মতোই মনে হচ্ছে কেবল, অয়নের বাবা হবার ক্ষমতা নেই জানার পর থেকে। চন্দ্রা ভাবলো, ও কী এমন অপরাধ করেছিলো যে বিনা কারণে ও মা হবার গৌরব অর্জন করতে পারবে না? অয়ন চা করে এনে চন্দ্রাকে খুব আস্তে আস্তে ডাকলো, কিন্তু চন্দ্রা চোখ বুজেই রইলো। ওর একেবারে ইচ্ছে করছে না অয়নের দিকে তাকাতে। স্বগতোক্তির মতো অয়ন বলে চলেছে, "বিশ্বাস করো চন্দ্রা, আমি জানতাম না নিজের এই অসম্পূর্ণতা, আসলে জানার সুযোগও তো ঘটে নি কখনো। আমি ইচ্ছে করে তোমায় ঠকাই নি, নিজেই নিজের কাছে ঠকে গেছি। তোমায় আমি মুক্তি দিতে চাই।" চন্দ্রার চোখের জলে তখন বালিশ ভিজছে। কেঁপে উঠলো চন্দ্রা অয়নের কথা শুনে। আর ঠিক তখনই চন্দ্রার মনে হোলো যে এই অসম্পূর্ণতা তো চন্দ্রার নিজেরও থাকতে পারতো! তখন কি তবে বারো বছরের ভালোবাসার সম্পর্ককে পায়ে ঠেলে অয়ন এভাবেই চলে যেতে চাইতো, চন্দ্রাকে একলা ফেলে? চন্দ্রা অয়নের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়লো। আর তারপর দু'জনেই শুদ্ধস্নাত হোলো দু'জনের চোখের জলে।



চোখ মেলে চেয়ে চন্দ্রা দেখলো রোদ উঠে গেছে অনেক ঝাঁঝালো, তবে জানালার স্মোক গ্লাসের ভেতর থেকে অতটা চোখে লাগছে না। ঘরের সবদিকে চোখ বুলিয়ে অয়নকে দেখতে পেলো না চন্দ্রা। নিজের মনেই একটু ম্লান হাসলো চন্দ্রা। আহা, এই একটু আগের স্বপ্নটা কেন সত্যি হয়ে উঠতে পারে না, চন্দ্রার জীবনে? তারপর ভাবলো আবার, স্বপ্ন তো সবসময় মধুরই হয়! স্বপ্ন কী কখনো সত্যি হয় বাস্তবে? স্বপ্ন তো স্বপ্নই! বুক চিরে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো চন্দ্রার। নাহ্, এবার ওকে তৈরী হতে হবে, কলেজে যেতে হবে, পুজোর ছুটির আগেই সিলেবাস শেষ করতেই হবে। ক'দিন খুব ডিস্টার্বড রয়েছে, ভালো করে কাজে মন বসাতে পারে নি, কিন্তু এভাবে তো চলবে না। চন্দ্রা নিজের মন শান্ত শক্ত করার আপ্রাণ চেষ্টা শুরু করলো।



**********



কলেজ থেকে ফেরার পথে আজ চন্দ্রা একবার ঢুঁ মেরেছিলো অয়নের স্টুডিওতে। ওখানে গিয়ে চন্দ্রা শুনলো অয়ন ডার্করুমে, ডেভেলপিং করছে, গত ফটোশ্যুটের কাজটা আর্জেন্ট, তাই। ওও, হঠাৎ মনে পড়লো চন্দ্রার, আউটডোর থেকে ফটোশ্যুটের সময় তোলা নেচার স্পেশাল কিছু ছবি আগেরদিন পাঠিয়েছিলো বটে অয়ন! কিন্তু সেগুলো তো চন্দ্রা আর্কাইভে পাঠিয়ে দিয়েছে, দেখারও আগ্রহ হয় নি বিন্দুমাত্র। আজ স্টুডিওতে এসে আবার চন্দ্রার মনটা একেবারে তিতকুটে হয়ে গেলো। এই ডার্করুম কথাটাই সহ্য করতে পারছে না চন্দ্রা।



ডার্করুম..... এই একটা কথাই চন্দ্রার মাথায় আগুন ধরিয়ে দেয় আজকাল। ডার্করুম কী এতোটাই ডার্ক? নিশ্ছিদ্র ঘুটঘুটে অন্ধকারে ভরা? চন্দ্রার মন মাথা তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে। কোনোরকমে টলতে টলতে ফিরলো চন্দ্রা। ফ্ল্যাটে ঢুকে চেঞ্জ করতেও ইচ্ছে হোলো না, বাইরের জামা কাপড়েই বিছানায় শুয়ে পড়লো চন্দ্রা। চোখটা ওর ফ্যানের ঘুরন্ত ব্লেডের ওপর, তার মধ্যেই চন্দ্রা মনঃসংযোগ করলো, দৃষ্টিটা স্থির করলো ফ্যানের গোল হাঁড়ির মাঝখানের চকচকে ধাতব চাকতিটার ওপরে। ঠিক অর্জুনের লক্ষ্যভেদ করার সময়কার মতো। চন্দ্রা যেন অনেকদূরে কোনো শূন্যে, মহাশূন্যে হারিয়ে যাচ্ছে।



আজ কাউন্সেলিংয়ের দ্বিতীয় সেশন ছিলো চন্দ্রার। নাহ্, ভদ্রমহিলার কথাই মানবে চন্দ্রা। এভাবে দুই নৌকায় পা দিয়ে চলা যায় না, তাতে দুর্ঘটনাই ঘটে।



হ্যাঁ, চন্দ্রা স্থির করে ফেলেছে, এবার ও নিজের নৌকাতেই শুধু থাকবে, শুধু নিজের জন্য।



বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো চন্দ্রা, ছোট্ট একটা ট্রলিব্যাগে নিজের নিত্যব্যবহার্য্য টুকিটাকি, দরকারী কাগজপত্রের ফাইল, আর সামান্যকিছু কাপড়জামা গুছিয়ে নিলো। তারপর রান্নাঘরে গিয়ে ওর প্রিয় সেই ব্রাউনরঙা বড়ো কফিমগটাতে এককাপ কফি করে নিলো, ঘন দুধ আর কড়া মিষ্টি দিয়ে। তারপর বসার ঘরে গিয়ে মিউজিক প্লেয়ারটা অন করলো, অনুপম রায়ের অ্যালবামের গানগুলো চন্দ্রার ভারী প্রিয়, পরপর বাজছে। বসে বসে বেশ আয়েশ করে কফিটা শেষ করলো চন্দ্রা। গান শুনতে শুনতেই গিয়ে খালি কফিমগটা ধুয়ে রেখে এলো চন্দ্রা জায়গামতো। বাইরের গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিটা তখন বেশ বড়ো বড়ো ফোঁটায়।


লেটারহেড থেকে নিয়ে একটা সাদা পাতায় লিখলো চন্দ্রা অয়নের দেওয়া সেই ভীষণ দামী গোল্ডেন পেনটা দিয়ে.......


"এই বৃষ্টি ধুয়ে দিক সব অভিমান,


জমে থাকা দুঃখ গ্লানি হয়ে যাক ম্লান।


তুলুক ঝঙ্কার সাতসুর আবার রিনিরিনি,


বৃষ্টির নূপুরের তাল বাজুক আরো ঝিনিঝিনি......


খুব ভালো থেকো, হে বন্ধু বিদায়,


নিলাম বিদায় আমি অভিমানিনী।"


কাগজটা চন্দ্রা চাপা দিলো পেনটা আর ফ্ল্যাটের ডুপ্লিকেট চাবির গোছা দিয়ে।



শেষবারের মতো চন্দ্রা একবার ঝাপসাচোখ বুলিয়ে নিলো পুরো ফ্ল্যাটে, আনাচেকানাচে। বারো বছর ধরে তিলতিল করে সাজানো সংসার, এই ফ্ল্যাট সব কিছুর মায়া কাটিয়েছে চন্দ্রা। অয়ন যে উভকামী একথাটাও অনেক ঘৃণাতেও মানিয়ে নিয়েছিলো চন্দ্রা। নিজের মনকে বুঝিয়েছিলো হয়তো একটা ভুল করে ফেলেছে, ভুল তো মানুষ মাত্রেই করে। আর সে ভুলের ক্ষমাও মানুষই করে। আপনজনেরা ক্ষমা করে কাছে টেনে নেয়। তাছাড়া সাংবিধানিক অধিকারের জায়গা থেকে ইণ্ডিয়ান পিনাল কোডের আইপিসির ৩৭৭ ধারার সংশোধনের পরে এখন তো সমকামিতা আর অপরাধও নয়। মানিয়ে নিয়েছিলো চন্দ্রা, কাছের মানুষের জীবনের বিচিত্র সব খেয়ালখুশির সঙ্গে। বড্ডো ভালোবাসতো যে চন্দ্রা অয়নকে, ঐ মানুষ অয়নকে, অয়নের শিল্পীস্বত্বাকে, অয়নের কাজের জগৎটাকে, অয়নের সাফল্য-খ্যাতি সব কিছুকে। অয়নের বাবা হয়ে ওঠায় সমস্যা আছে, কিন্তু যৌনতায় বা দৈহিক সম্পর্কে কোনো সমস্যাই নেই, এতেও মানিয়ে নিয়েছিলো চন্দ্রা। ডার্করুমের ভেতরে উঁকি দিতে গিয়ে চোখে পড়েছিলো পুরুষসঙ্গীর সাথে অয়নের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের দৃশ্য, গা গুলিয়ে উঠেছিলো চন্দ্রার, তবু মানিয়ে নিয়েছিলো নিজের সাথে লড়াই করে। দূরে ঠেলে দিতে পারে নি চন্দ্রা তার একান্ত ভালোবাসার ঐ প্রিয়তম মানুষটাকে, তার অয়নকে।



তারপর সপ্তাহ দুয়েক আগে অয়নের ফোনে একটা মেসেজ থ্রেড চোখে পড়ে গেলো একদিন চন্দ্রার। খুব সাবধানী অয়ন, চেপে রেখেছে এতোদিন। কিন্তু ঠিক চন্দ্রার চোখে পড়ে গেলো। মেসেজ থ্রেডটা ডিলিট করতে ভুলেছিলো নির্ঘাত অয়ন, আর ভাগ্যিস ভুলেছিলো! আসলে সত্য কখনো চাপা থাকে না, প্রকাশ পাবেই। চন্দ্রা সব মেনে নিয়েছিলো, কিন্তু কিছুতেই অয়নের চিটিং করাটা আর মানতে পারলো না। বারোটা বছর! অয়ন চন্দ্রাকে বিয়ে করেছে শুধুমাত্র সোশ্যাল স্টেটাস টিকিয়ে রাখার জন্য! নিজের সমকামী জীবন নির্বিঘ্নে উপভোগ করার জন্য, কোনো সন্তানের দায়িত্ব নিতে চায় না বলে, আর হ্যাঁ, শুধুমাত্র ফূর্তির জন্য.... নিজের ভ্যাসেক্টমি অপারেশন করিয়ে নিয়েছে! এতো নীচে অয়ন নামতে পারলো, চন্দ্রার জীবনটাকে বলিতে চড়িয়ে? নাকি বরাবরই এরকম নীচেই ছিলো? শুধু হদ্দ বোকা ইমোশনাল চন্দ্রাই বুঝতে পারে নি, চিনতে পারে নি অয়নের এই ধূর্ত অমানুষ রূপটাকে। আর আপোষ করার কোনো প্রশ্নই ওঠে না, মনঃস্থির করে বাড়ী ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে পৌঁছতে কয়েকটা দিন সময়ের দরকার ছিলো, আর মনের চাপে শরীরটাও বড়ো ক্লান্ত ছিলো। এখন চন্দ্রা তৈরী পুরোপুরি, মানসিক ও শারীরিক দু'দিকেই।



দরজা খুলে বাইরে বেরোতেই সিঁড়ির স্কাইলাইট ওপেনিং দিয়ে একঝলক ঠাণ্ডা ভেজা হাওয়া এসে চন্দ্রার মুখে ঝাপটা মারলো। বুক ভরে নিঃশ্বাস নিলো চন্দ্রা, অনেকদিন পরে। শরীরটা, মনটা... সব হালকা হয়ে গেছে চন্দ্রার। মুক্তির স্বাদ চন্দ্রার শরীরে, মনে। তবুও খুব ছোট্ট একটা কাঁটা, একটু বেদনা দিলো চন্দ্রার গলার ভেতর, এই বেদনাটা চন্দ্রা খুব চেনে। কত বিনিদ্র রাত, কত অসহ্য দুপুর, কত ক্লান্ত বিকেল আর অগণিত হতাশ শূন্যতায় ভরা সকাল চন্দ্রা একা একা পার করেছে এই গলায় কাঁটা বেঁধা বেদনাটাকে সঙ্গী করে। সত্যি বলতে কী, আপাতত এই বেদনাটার সাথেই চন্দ্রার প্রেম, অবিচ্ছেদ্য সে প্রেম!




শব্দ করে খোলা দরজাটা বন্ধ হয়ে লকড হবার আগে ভেসে এলো দু'জনের জন্যই, অনুপমের গলায়........


"........ তুমি অন্য কারোর সঙ্গে বেঁধো ঘর....."!!!


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Tragedy