ঠাকুমা আমার স্বপ্নের পরী
ঠাকুমা আমার স্বপ্নের পরী


আমি পড়তাম আর --
ঠাকুমা আমার মুখে মুগ্ধ চোখে তাকাতো।
বকুনি দিয়ে বলতাম,
কী দেখছো সারাক্ষণ?
তখন ঠাকুমার মুখ-ভরা হাসি --
চারদিকে উপচে পড়তো।
অমন ভুবনমোহিনী হাসি,
রাগ, দুঃখ, ব্যথা ভুলানো হাসি আর দেখিনি।
আমি তখন শুধু ঐ একজনকেই বকুনি দিতে আর
শাসন করতে পারতাম।
ঠাকুমাকে যাই বলতাম তাতেই হাসতো।
'বুড়ি' বললে হেসে বলতো ---
বুড়ির বরটা তো কচি,
এতেই বুড়ির আনন্দ!
আমাকে বর বললেই --
আমি রেগে কেঁই মেঁই করতাম।
তাতেও বুড়ি হাসতো।
ঠাকুমার হাতের পোস্ত, সুক্তো কিংবা ডাল-আলু --
আজও মুখে লেগে আছে।
ঠাকুমা ছিলো গল্পের ঝুরি,
বলার ধরণটা ছিলো জাদু!
ঠাকুমার হাতে সত্যিই জাদু ছিলো --
পিঠে আঙুলের নখ ছোঁয়ালে
গোটা শরীর আর মন -- তরতাজা, প্রাণবন্ত হতো!
মাথার চুলের ভিতর আঙুল বুলালে
রাজ্যের ঘুম নিমেষে আমাকে ভর করতো!
ঠাকুমা ছিলো আমার শৈশব আর কৈশোরের সম্মান --
সকলে আমায় যন্ত্র ভাবতো,
শুধু ঠাকুমা আমায় মানুষ ভাবতো।
তাঁর স্নেহে আমার জীবন সুরভিত ছিলো!
বুড়ি ঠাকুমাই আমার স্বপ্নের পরী ছিলো!