সুরথ ও সমাধি
সুরথ ও সমাধি
বাসন্তী পূজোর শুভেচ্ছা জানিয়েছে এক বান্ধবী,
রাজা সুরথের কথা জেনে অবাক হলাম খুবই !
কবে থেকেই তো চন্ডী পাঠের সময় শুনে এসেছি, মহিষাসুর মর্দিনী, মহামায়া,দেবী কৌশিকীর কাহিনী।
রহস্যময় সে রাতে জ্যোতি এসে দেবতাদের দেহ হতে,
ঋষি কাত্যায়নের আশ্রমে সৃষ্ট দেবী, হিমালয় পর্বতে!
লোহিত বর্ণের অষ্টাদশভূজা মহালক্ষ্মী বা কাত্যায়নী।
মধূ-কৈটভ,শুম্ভ-নিশুম্ভ,চন্ড-মুন্ড,রক্তবীজের হয়রানি,
এসব ঘটনা,মহালয়ার অনুষ্ঠানে শুনে সকলেই জানি।
আসলে আমরা ততটুকুই জানতে পারি যা জানায়,
রাজা সুরথের কথা কেন ধামাচাপা দেন ঠাকুর মশাই,
বাঙালিকে দিতে চায়না কি ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই !
শুধুমাত্র বাংলাতেই দুর্গা পূজো নিয়ে কেন মাতামাতি,
পাল যুগেও পাওয়া গেছে এখানে দেবী দুর্গার মূর্তি !
প্রশ্নটা মনে এলেও কোনো উত্তর মেলেনি এতদিন,
রাজা সুরথ নাকি সেই চিত্রগুপ্তের বংশধর ছিলেন।
চৈত্র-বংশের নামেই হয়তো মাস টি র নাম চৈত্র,
এ মাসের শুক্লা প্রতিপদ থেকেই হিন্দু নববর্ষ শুরু!
নবদুর্গার ষষ্ঠ রূপ কাত্যায়নীকে পূজা করেন গুরু,
শুধু মাত্র একটি বিশেষ রাত যে রহস্যময় তা নয়,
সারা ভারতের অনেকেই পালন করেন নবরাত্র।
বিজাতীয় এক জাতির সাথে সুরথ যুদ্ধে লিপ্ত হন,
এই সুযোগে তাঁর পার্ষদ, মন্ত্রী ও সভাসদেরা _____
তাঁর সমস্ত ধন-সম্পত্তি ও সেনাবাহিনীর দখল নেন।
সুরথ মনের দুঃখে বোলপুরের জঙ্গলে চলে আসেন,
এক আশ্রমে তিনি "মেধা" নামে সন্ন্যাসীর দেখা পান।
বনে "মেধা"র আশ্রয়ে থেকেও রাজার মনে সুখ নেই,
অস্থির মন রাজ্যের সব প্রজাদের কথা চিন্তা করেই।
এমন সময় "সমাধি" নামে এক বৈশ্য সেখানে এলেন,
তাঁর অবস্থা অনেকটা সুরথ রাজার মতনই করুণ।
নিজের স্ত্রী-পুত্র তাঁকে, গৃহ হতে করেছে বিতাড়ন।
ধন সম্পত্তি নিয়ে নেওয়া সত্ত্বেও তিনি ক্রুদ্ধ নন !
দুজনের চিন্তা ধারার মিল দেখে তাঁরা আশ্চর্য হন ।
ঋষি "মেধা"কে তখন জিজ্ঞেস করেন এর কারণ ।
মেধা ঋষি, মহামায়ার প্রভাবের কথা করেন বর্ণন!
তিনটি কাহিনী শোনার পর দুজনের হয় বোধদয়,
তিন বছরের তপস্যা ও পূজোয় দুর্গা ঠাকুর হন সদয়।
