সরস্বতী বন্দনা
সরস্বতী বন্দনা
" পূর্ণ হলো বাসনা, দেবী কমলাসনা,
ধন্য হল দস্যুপতি গলিল পাষাণ ।"
ওগো বাগ দেবী!
তোমারই কৃপায় একদিন,
দস্যু রত্নাকর হতে সৃষ্টি হয়েছিলেন
আদিকবি বাল্মীকি।
পাষাণ হৃদয় গলে জন্ম নিয়েছিল
পৃথিবীর আদিতম শ্লোক।
"মা নিষাদ প্রতিষ্ঠাং ত্বমগমঃ শাশ্বতীঃসমাঃ---"
অনির্বচনীয় সৃষ্টি সে দুটি চরণ
আজও গুঞ্জরিয়া ওঠে কবিকুলের হৃদয় অন্দরে ।
হে দেবী, কাব্যলক্ষ্মী তুমি।
তোমার চরণ স্পর্শে পাষাণের বুকে হয়েছিল
মধুর রসের সঞ্চার।
সৃষ্টি হয়েছিল কাব্য নির্ঝরিনী,
বয়ে গিয়েছিল কুলুকুলু ছন্দে,
প্লাবিত করেছিল কত কবির হৃদয়,
সৃষ্টি হয়েছিল অজস্র কবিতা।
আজ মাগো, কবিতার অনাদর বড়
বিদ্যারও দেবী তুমি ভারতী, বীণাপানি ,
বিদ্যার্থীর জীবন শুরু তোমারই চরণ বন্দনায়।
সে বিদ্যার আজ একী অবক্ষয়!
দেখে যাও তুমি মাগো ।
বীণা, পুস্তক হাতে, অক্ষমালা, কমন্ডলু সাথে,
এসো আজ এইখানে একবার,
ধরনীর ধুলি পরে রাখো দুটি রাতুল চরণ।
কমলাসনখানি প্রস্তুত রেখেছি
হে দেবী, তোমারই তরে।
তোমারে পুজিতে মাগো, সযতনে তাই,
এনেছি গেঁথে শব্দের এই মালা খানি।
কিছু আর নাই যে আমার।
এসো দেবী, এ অবিদ্যার যুগে,
বিদ্যা ব্যতীত শক্তি যেথা বড় বল,
সেইখানে এসে একবার দেখা দাও তুমি।
অবিদ্যা যেখানে যত আছে,
ঘুচে যাক হে কল্যাণী তোমারই ছোঁয়ায়।
কবির কলম হোক নিঃশঙ্ক,
মধুরতর ভাষ্যে রচিত হোক এ যুগের নবতর কাব্য।
