স্বাধীনতার শব
স্বাধীনতার শব
স্বাধীনতার হাল হয়েছে পেনসন না থাকা
হাঁপানি বাতের ব্যাথায় ভোগা খিটখিটে বুড়ো,
স্বরাজ বসুর মতো ।
স্ত্রী ভারতী, ছেঁড়া শাড়িতে সাক্ষাৎ ভারতমাতা
ছেলেরা কেউ বাইরে চাকরি করছে,
নকশাল টাইমে মরেছে একজন,
কেউ হয়েছে পাড়ার দাদা।
কলেজে পড়ার সময় বাড়ি ছেড়ে পালানো
বড় মেয়ে বাপের বাড়ি ফিরে এসেছে,
আরেক মেয়ে এখন প্রতিবন্ধী –
কলঙ্কময় সে রাতের পর
বাইরে বেরোতে পারে না...
মানে, যাকে বলে একদম সুখের সংসার।
বাজারে কিছু ধার জমে গেলেও অবশ্য
কোনও রোববার দুপুরে খাসির মাংসের
খুসবু বেরোয়, পুজোয় সবার নতুন জামা হয়,
ছাদ দিয়ে বর্ষায় কয়েক ফোঁটা করে জল পড়লেও
ইলিশ ভাজার গন্ধও পাওয়া যায় এক আধদিন।
সন্ধেয় ছাদের টবে ফোটা বেলফুলের গন্ধ ভাসে হাওয়ায়,
ভারতীর বন্ধু পাশের পাড়ার হাসিনা ঈদের দিন সিমুই দিয়ে যায় ।
নাতি নাতনিরা ক্রিসমাসের ছুটিতে এসে
টুপি আর কেক নিয়ে হুটোপাটি করে ।
স্বাধীনতা ত্রিবর্ণরঞ্জিত নাকি
তার রং বিপ্লবীদের রক্তের মতো লাল,
অথবা বর্ডার পেরোনো মানুষর মতো পাণ্ডুর
কিংবা কারাগারের অন্ধকারের মতো কালো...
সেসব না জেনে দিব্যি এদের কেটে যাচ্ছে দিন ।