প্রতিক্রিয়া
প্রতিক্রিয়া
সত্যম-শিবম-সুন্দরম অথবা স্বর্গ-মর্ত্য-পাতাল,
ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর সবেতেই এই তিনের খেল !
এমনকি নিউটনও তিনটি সূত্রের কথা,
খুব জোর দিয়ে বলেছিলেন।
জিনিষ কেন মাটিতে পড়ে?
কথাটা তো ভেবেছিলাম আমিও আগে,
কিন্তু নিউটন! মহাকর্ষের কথা,বলে ফেলেছেন,
আমার জন্মেরও অনেক আগে ভাগে!
তবে হাইস্কুলে পড়তে গিয়ে আমার ,
ওনার ঐ তিন নম্বর সূত্রটাই বেশী ভালো লাগে ।
আক্ষেপ রয়ে গেছে অনেক বেশি জিজ্ঞাসা ছিল মনে,
কিন্তু সেগুলো জিজ্ঞেস করা হয়নি স্যারদের সনে ।
লোকে বলে, ইচ্ছে থাকলেই হয় উপায়,
কিন্তু মনে যে থাকে মাথায় গাট্টা খাবার ভয় !
স্বপন স্যার পড়িয়ে ছিলেন পদার্থ তিন প্রকার,
তরল, কঠিন ও গ্যাসীয় শুধু এই মাত্র ।
কিন্তু মানুষেরা কোন ক্যাটাগরিতে তাহলে ?
তবে কি আমরা সকলেই অ পদার্থ ?
একজন স্যারের বক্তব্য স্কুলটা নাকি এক গোয়াল,
তবে কি আমরা মানুষও নই? শুধুমাত্র গরু ছাগল !
স্কুল জীবনে একবার খেতে হয়েছিলো বেতের বাড়ি,
যতোই আস্তে মারুন স্যার, তবু খুব লেগেছিলো।
অপরাধ ? আমার যে খুব ভুলো মন!
প্র্যাকটিক্যাল খাতা স্কুলে আনতে ভূল হয়েছিলো।
অবশ্য একই ভূল করেছিলো আরো কয়েকজন।
ছিলো কিন্তু সকলের বেলায় একই নিয়ম-কানুন !
তার মধ্যে অনেকেই বুক টান করে বীরের মতো,
হাত পেতে বেতের বাড়ি খেয়েছিলো!
ভীতুরা আবার কেউ কেউ বেতের বাড়িটা খাবার
আগে বা পরে ভ্যাঁ করে কেঁদে ফেলেছিলো।
কিন্তু আমার বেলায় জমে উঠেছিলো এক প্রহসন !
যতবার হাতটা পাততে বলেন স্যার,
লক্ষ্মী মেয়ের মতোই পেতে ফেলি হাতটা।
এরপরেই কি অপূর্ব ও আশ্চর্য কান্ড!
কি করে চটপট সময়ের হিসেব কষে ফেলে মাথাটা।
বেতটা ওপর থেকে নিচে নেমে আসার মুহুর্তেই,
স্যাট্ করে নিজের কাছে ফিরে আসে আমার হাতটা।
বিনা অপরাধে বেতের বাড়ি খায় কাঠের টেবিলটা !
পাঁচ - ছয়বার এরকম হবার পর হঠাৎ ______
ক্লাসসুদ্ধ সকল ছেলেমেয়ে ওঠে একসাথে হেসে।
স্যারের মূখেও রাগ কমে একচিলতে হাসি দেখা দেয়,
বুঝে গেছেন যে এবার একদম ফেঁসে গেছেন নিজেই।
কথা দেন বেশি লাগবেনা, স্যারের মান বাঁচাতে,
এবারে হাতটা চুপ করে থাকে কোনোমতে।
পরে ভেবে দেখি ওটা যে ছিলো প্রতিবর্ত প্রতিক্রিয়া!
আক্ষেপ করে কি হবে, সেইসব দিন গেছে চলিয়া !