নোনতা আনন্দ
নোনতা আনন্দ
যদিও রূপকথার গল্প, তবু তা মনে বাসা করে,
রাজকন্যা না, তবু সব কন্যা আজও অপেক্ষা করে।
কবে আসবে এক রাজপুত্তুর মোটরগাড়ি চড়ে!
রাজপুত্তুর নয়, তবু এমনিই পুত্তুরেরা কেউ কেউ,
স্বপ্ন দেখে, মন দিয়ে পড়াশোনা করে ।
কালো মেয়ে, সাধারণ মেয়ে এক্কেবারে নয়,
শুধু ডানা কাটা পরীই তাদের মন কাড়ে।
সক্কলেই ছোটোবেলায় স্বপ্নের কাজল পরে,
নিজের মনে একা একাই মায়ার পৃথিবী গড়ে।
যদি বাস্তবটাও কিছুটা স্বপ্নের মতো হয়,
তাহলেও কিছু না পাওয়ার দুঃখটা সয়ে যায়।
কিন্তু একেবারে ছিঁটেফোঁটাও না মিললে,
তখন যে মানুষ দুঃখের সাগরে ভেসে যায়।
তাই গল্প যে জীবন নয়, এই কথাটা বুঝতে হয়,
পারলে জীবনটাকেই গল্প বানাতে হয়।
প্রত্যেকটা মানুষের জীবনই আসলে এক একটা গল্প,
কেউ কেউ আছে যারা শুনতে চায় অল্প অল্প !
কিন্তু মুশকিল হলো অনেকেই জীবন লুকোতে চায়,
হয়তো এভাবেই নিজের সুখ দুঃখ লুকোয়।
আবার এমনও হয়, কেউ হয়তো বলতে চায়,
কিন্তু কি করে বলবে বুঝে না পায়।
সবচেয়ে ভালো আগে নিজের জীবনটাকেও পড়া,
ছোটোবেলা থেকে জীবনে যা ঘটেছে সব মনে করা।
তারপর বলার সময় না হয় কিছু বাদ দিলেও হবে,
বলতে বলতে অনেক ভুলে যাওয়া কথা মনে পড়বে।
তেতো, টক, নুন, ঝাল, মিষ্টি সব মিলে একটা জীবন,
নিশ্চয়ই করতে পারে কারো না কারো মন জয় !
একটা রূপকথার গল্প ছিল, রাজার তিন কন্যা,
রাজার প্রতি সকলের ভালোবাসা ছিল যেন বন্যা।
কোনো জিনিস বেশি পেলেও মনে জাগে সন্দেহ,
পরীক্ষা নিলেন রাজা, মনে যদিও ছিলো স্নেহ।
বড় মেয়ে বললো ভালোবাসি যেন হিরে-চুনি-পান্না!
শুনে রাজা ভুলে গেলেন সারাজীবনের যতো কান্না।
মেজো মেয়ে ভালোবাসে সোনা রূপোর মতন,
শুনে খুশী হন, আনন্দে লাফায় রাজার মন।
ছোটোমেয়ে ছিল সরল মতি, বলে "নুনের মতন"।
শুনে রাজার মাথা হয়ে ওঠে একদম গরম!
ছোটো মেয়েকে ত্যাজ্য করে একদম বনে পাঠান।
পথে এক রাজপুত্তুরের সাথে হয় দেখা ও ভালোবাসা,
দুজনের মনেই জাগে ভালো থাকার আশা।
রাজকন্যার মনের দুঃখ শুনে রাজপুত্রও দুঃখ পান।
রাজাকে খেতে নেমন্তন্ন করে নুন ছাড়া খেতে দেন,
এভাবেই অবশেষে রাজা নিজের ভুল বুঝতে পারেন।
শুধুমাত্র বেঁচে থাকাই জীবনের জন্যে আনন্দ বা নুন,
ছোট্ট, সামান্য এই কথাটা কতজন আর বোঝেন!

