কাঁটাতারের বেড়া
কাঁটাতারের বেড়া


'অফিসে আছি' ফোন করেই বেরিয়ে পড়তাম
সেলফোনে বউ দেখত অফিসেরই নম্বর।
--- দুপুরে ফোন করেছিলাম, কোথায় ছিলে?
: খেতে গিয়েছিলাম।
--- মিনিট পনেরো আগেও করেছিলাম।
: আর বোলো না... সমীর এসেছিল।
--- ফিরতে দেরি হল?
: আদিত্যর ছেলে হাসপাতালে। দেখতে গিয়েছিলাম।
--- এত ফিসফিস করে কথা বলছ, কার সঙ্গে?
: রাঘবের। ওর কানটা গেছে। জোরে বললে শোনে না, অথচ আস্তে বললে...
--- আজ তো রবিবার। এত সকালে কোথায় যাচ্ছ?
: নির্মলের বাড়ি।
সমীর, আদিত্য, রাঘব, নির্মল বলে আমি কাউকেই চিনি না।
তবু ঘরের কোণে কোনও কালো মেঘ উঁকি দেয়নি। হঠাৎ কী করে হাত থেকে পড়ে গেল আয়না। ঘরময় কাচে-কাচ।
এখন কাজের মধ্যে নিজেকে ডুবিয়ে রাখি
কোনও মেয়ের ছবি এখন আর আমার মানিব্যাগে থাকে না
তবু অফিসে ফোন করে বউ 'এনগেজ্ড' পেলে বলে---
কার সঙ্গে কথা বলছিলে? আবার শুরু করেছ?
বাড়ি ফিরে দেখি টেবিলে খাবার ঢাকা
ও দিকে মুখ করে শুয়ে আছে ও।
আমি কড়িকাঠের দিকে তাকাই
চোখের সামনে ভেসে ওঠে কাঁটাতারের বেড়া
ও পাশে ধু ধু করছে মাঠ
মাঠে লক্ষ লক্ষ ভেড়া
ওরা কাঁটাতারের ফাঁক দিয়ে এক এক করে টপকাচ্ছে।