বিশ বিশ না বিশে বিষ
বিশ বিশ না বিশে বিষ
বিশ বিশ না বিশে বিষ
থাক না হয় সেসব কথা
আচ্ছা থাকলে কি চলে? বল!
বিশ না বিষ না কুড়ি
এ নিয়ে নানা বাকবিতণ্ডা, কথার ফুলঝুড়ি।
কেউ আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ,
কারো বা সর্বনাশ!
কারো চালচুলো, দুমুঠো ভাত, পরনে কাপড় বাচ্চার দুধ সবই গেছে।
কেউ আবার কামিয়ে নিয়েছে কোটি দশেক ভদ্রতার মুখোশ পরে সমাজপতিদের বেশ ধরে।
কেউ চাল-ডাল,তেল-লবণ
দেদারছে ঢেলেছে সওয়াবের আশায়।
কেউ আবার সিন্ডিকেট করেছে
ভালো দামের আশায়।
হাসপাতালে ডুকরে মরা রোগী যেমন কম নয়; তেমনি আবার বেঁচে ফিরবার
তালিকাটাও ফেলনার নয়।
ঘর কোনে আড়ষ্ট হয়ে কেউ খুঁজেছে স্বস্তি,
কেউবা আবার সেজেছে নিধিরাম সর্দার। করোনাকে পাশে ঠেলে,
শত ভেদাভেদ ভুলে মানুষ হয়ে মানুষের তরে জীবন রেখেছে বাজী।
যাক জীবন যাক গেলে।
ওদের মতো করে আমিও ছুটে চলেছি হাতির ঝিলের আঁকাবাঁকা পথ বেয়ে
রাতের নীরবতা ভেঙে সংবাদ পরিবেশনায়।
ভয়কে জয় করে নিত্যকার পথচলায়
আমিও হেঁটেছি নিয়তির উপর নিজেকে বিলায়ে
একটা দীর্ঘসময়।
এর মাঝে অনেক রথী-মহারথীর
প্রস্থানের গল্প শুনেছি নীরবে- নিভৃতে।
আবার কেউ বিদায় নিয়েছেন বর্ণাঢ্য আয়োজনে।
জয়-পরাজয়ের চলমান যুদ্ধের মাঝে বারংবার হয়েছে কৌতুকের অবগাহন।
তারপর -
মাস সাতেক পাড়ি দিয়ে
নিত্যকার মতো সেদিনও
আমাদের ভোর হলো দক্ষিণের জানালায়
কাঁচা সোনা রোদে।
মাছরাঙ্গার ছোঁয়ায়
জলের পরে কচুরীর সিংহাসনে
যেমন আলতো দোলা লাগে;
তেমনি আমার অর্ধাঙ্গিনীর ঠোঁট ছুঁয়ে
চাপা হাসিটা সেদিন আর দেখা গেল না।
বোশেখের ঝড়ের আগে মলিন আকাশে
যেমন মেঘেরা ভেসে বেড়ায়,
তেমনি পাংশু মুখে ও আমার দিকে
ফ্যালফ্যাল দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল -
আমি কোভিড পজেটিভ।
সামান্য সময় থমকে যাওয়া আমি
হতবাক দৃষ্টিতে অপলক তাকিয়ে রইলাম
আমার শব্দভাণ্ডার
কে বা কারা যেন কেড়ে নিয়েছে!
কন্ঠরোধে আমি যেন হারিয়ে ফেলেছি
সব বাকশক্তি।
সম্ভিত এলে আমি তাকিয়ে দেখি
ওর শাণিত চোখে
ভয় জয়করা কঠিন কোমল হাসি।
যেন ওর কিছুই হয় নি।