হাদিকা
হাদিকা
কেন প্রেম জমালে বুকে,
কেন আলিঙ্গন?
কেন ধুলো ভরা রোদ্দুরে ছুটে চলা?
হারাবার ভয়!
কেন খুঁজে ফেরা
মরণরোধক ওষুধ দ্বারে দ্বারে?
যদি মিলে যাবে বিধাতায়,
তবে কেন দেখালে আশা?
কেন ছোঁড়াছোঁড়ি, কেন ভ্রুকুটি,
কান্নার আওয়াজে স্বান্তনা?
কেন রেখে গেলে নিষ্পাপ মায়া?
কোলঘুম থেকেও শান্তি মাটির বিছানায়?
তুমি বড্ড সাহসী!
না হয় একাকী থাকার সাধ হলো কি করে!
এক সপ্তাহের জীবনে
আমাদের কোলের উষ্ণতায় মন ভরেনি তোমার?
আরো উষ্ণতা চাই। আরও !
তবে এতটা না চাইলেও কি হতো না?
মাটির ঘর কি উষ্ণ থাকে কোলের চেয়েও?
দুর্লভ ওষুধে খুঁজে পাওয়া প্রাণের আশা।
গুটি গুটি পায়ে ইনজেকশনের সুঁচের খোঁচা
অপারেশনের তীব্র ব্যথার চেয়েও ভয়ংকর।
তোমার ককিয়ে ওঠা, যন্ত্রণা, ভ্রুকুটি
ক্ষতবিক্ষত নাসারন্ধ্র বেয়ে
একবার টেনে নেয়া শ্বাস
অপরিপক্ক ফুসফুস হয়ে ছেড়ে দেয়ার পর স্বস্তি।
তোমার প্রতিটি হৃদস্পন্দনে খুঁজে ফেরা শান্তি,
আশায় বাঁচা, কত শত স্বপ্ন লালন করে।
কিন্তু সব মিথ্যে করে
সপ্তাহ শেষে রং বদলালে।
সোনালী থেকে হলুদ ,
আরো হলুদ, তারপর কালচে থেকে নীল।
হৃদয় ভেঙ্গে ব্যস্ত তোমার চলে যাওয়া।
মিলিয়ে গেলে খোদায়,
আরশে জান্নাতের পাখি হয়ে।
এনআইসিইউর দরজায় হতবিহ্বল দাঁড়িয়ে
তোমায় বুঝে নেয়া।
অতটুকুন শরীরের ভার
কতটা বেড়ে গিয়েছিল জানতে!
খুব ভয় পেয়েছিলে তুমি
সুঁই ফোটাবার মত করে ?
না! ভয় পেলে তুমি কুঁকড়ে উঠতে।
আমরা চেয়েছিলাম তুমি ভয় পাও,
কান্না করো, হাত পা ছোঁড়ো যত পারো!
তুমি নিথর ছিলে পুরোপুরি !
হৃদয় ভেঙ্গে ব্যস্ত তোমার চলে যাওয়া।
আরশে আজিমের মালিকের কাছে আর্জি
মহামহিম দেখে রেখো তারে।
ব্যস্ত এই নগরে রাখতে পারিনি তারে।
দিতে পারিনি একটু জায়গা করে।
অভিমান করে ছেড়ে গেল
এক সপ্তাহের অতিথি।
তোমার দয়া আর আমাদের দোয়ায় থাকুক
যোজন যোজন দূরেও।
