Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Soumi Goswami

Romance Tragedy

1  

Soumi Goswami

Romance Tragedy

আনকান্ভিশানাল লাভ

আনকান্ভিশানাল লাভ

6 mins
898


আজ আমি একটা মেয়ের গল্প বলব যে হয়তো আমাদের বাড়ির খুব কাছে বা ঠিক সামনের রাস্তার মোড়ে বড় বাড়ীটাতে থাকে।যাকে আমরা রোজই দেখি কিন্তু তার মনের খবর পাইনি কোনদিন।গল্পটা বলার সুবিধার জন্য ধরে নিই মেয়েটার নাম টুসু।এবার আসি গল্পে।

টুসু ছিল বাড়ির মানুষগুলোর নয়নমনি।ওকে নিয়েই যেন বাঁচে ওর বাবা মা।অপরূপ সুন্দরী না হলেও টুসুর মুখখানা ছিল লাবণ্যে ভরা।শিশু হোক বা বৃদ্ধ সবার মন জয় করতে ওর কোন তুলনা নেই।আসলে টুসুর মনটা ছিল অন্য ধাঁচের।অন্যের কষ্টকে যেমন টুসু সইতে পারতো না তেমনি আবার নিজের কষ্টকে নিজের মধ্যে রাখতে ওর জুড়ি মেলা ভার।

টুসু প্রেমে ভয় পেত।না কাউকে ভালোবাসতে সে কার্পণ্য করবে না যেমন সত্যি ঠিক ততটাই সত্যি ভালোবাসার আঘাত ও সইতে পারবে না।তাই টুসু কোনদিন ও পথ মাড়াইনি।তার মানে এই নয় যে টুসুর কোনদিন কাউকে ভালো লাগেনি।কিন্তু ওর ভাললাগা কোনদিন ভালোবাসার রূপ নিতে পারেনি।ভয় ওই একটাই।প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হবার সাহস টুসুর ছিলনা ।তাই ওর মনের এই ভাললাগা সবার আড়ালেই রয়ে গেল।এমনকি যাকে ভালো লাগত তার অজানা রয়ে গেল।

টুসু বিয়ে করে সংসারে এলে সে বোঝে এ সংসারে তার ঠাঁই হবে না কোনদিন।টুসুর নিজের কোন ভূলের জন্য এই সংসারে জায়গা করে নিতে পারেনি তা নয় ।আসলে বিয়ে করে আসার পর থেকেই ওর শ্বশুর শাশুড়ির মনে হয়েছে হয়তো টুসু ওনাদের ছেলেকে ওনাদের থেকে আলাদা করে দিতে পারে।তাই টুসুকে শশুর বাড়ীর লোকেরা পছন্দ করে নিয়ে এলেও টুসু কোনোদিন ওদের আপন হতে পারেনি।টুসু যে ওদের মনের কাছে যাবার চেষ্টা যে করেনি তা নয় কিন্তু টুসুর আর ওই মানুষগুলোর মধ্যে দূরত্বটা দিন দিন শুধু বেড়েইছে।টুসুর স্বামীর যে ব্যাপারটা নজর এড়িয়ে গেছে তা নয় কিন্তু টুসুর স্বামী হওয়ার অনেক আগে ও একজন আদর্শবান ছেলে।আজকের দিনে যেখানে বৃদ্ধ বয়েসে বাবা মাকে ছেড়ে দেওয়ার হাজারো ঘটনা ঘটে তেমনি বাবা মায়ের জন্য নিজের স্ত্রীকে তার প্রাপ্য সম্মানটুকু না দেওয়ার নজির ও তো চোখে পড়ে।এখন বৃদ্ধাশ্রমগুলোয় যেমন ঘর খালি পাওয়া ভার তেমনি বাবা মায়ের সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে না পারার জন্য নিজের স্ত্রীকে ডিভোর্স দেওয়ার ঘটনা ও আকছার শোনা যায়।তাই বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান নিজের স্ত্রীকে নির্দ্বিধায় বাপের বাড়িতে ছেড়ে দিয়ে আসতে কোন গ্লানি বোধ করে না। বিবেকের দংশন তার হবার কথাই নয়।সে তো যথার্থ পুরুষের মতই কাজ করেছে।বাবা মা অনেক কষ্ট করে বড় করে সন্তানকে।তাদের সাহারা হবার বদলে সেই মেয়েটার সাথে থাকা সম্ভব নয় যে বৃদ্ধ বাবা মায়ের দাবিগুলো মানিয়ে নিতে পারছিল না।হয়ত বাবা মায়ের দাবিটা অন্যায় ছিল কিন্তু তবুও......

টুসুর বর অরিন জানত টুসুর কোন ভুল ছিল না।কিন্তু অরিনের সত্যি কিছু করার ছিল না।অরিন বেশ বুঝতে পারত ওর বাবা মা কতটা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ছিলেন টুসুকে নিয়ে।তাই টুসুকে এই সংসার থেকে আলাদা করা ছাড়া আর কোন উপায় ছিল না অরিনের কাছে।অবশ্য অরিন শুধু ছেলে হবার দায়িত্ব পালন করেছে যে তা নয় ও টুসুকে কথা দিয়েছে যখন সময় পাবে ও যাবে টুসুর কাছে।

মেয়েটা যেন সত্যি অদ্ভুত।ওকে ওর সংসার থেকে অরিন আলাদা করে ছিঁড়ে ফেলল কিন্তু মেয়েটার যেন তাতেও কষ্ট নেই।কোন অভিযোগ নেই কারুর বিরুদ্ধে।প্রথমটায় অরিন বুঝে উঠতে পারে না যে সংসার ছেড়ে চলে যাবার কথাটা টুসুকে জানাবে কিভাবে।কিন্তু টুসুর এত শান্তভাবে কথাটা মেনে নেওয়াটা যেন অরিনও মেনে নিতে পারে না।অরিনের মনে হয় টুসু কি তাহলে দুঃখ পায়নি?ও কি ওর আগের জীবনে এমন কাউকে পিছনে ফেলে রেখে এসেছে যার সাথে দেখা হবার সুযোগেই ও খুশি।না হলে যে মেয়ে বিয়ে করে আসার পর থেকেই যে সংসারটাকে এত সুন্দর করে গুছিয়েছিল সত্যি তার এই সংসার ছাড়তে কোন কষ্ট হচ্ছে না।

টুসু সেই আগের বাড়িতে ওর বাবা মায়ের কাছে ফিরে এলে ওনারা সব ঘটনার কথা শুনে টুসুকে নিজেদের কাছে রাখাটাই ঠিক বলে মনে করেন।টুসু যাতে মনে কষ্ট না পায় তাই ওনারা সব সময়ে টুসুকে বোঝাতে চেষ্টা করতেন টুসুর জীবনে এমন বিশেষ কিছু ঘটনা ঘটেনি যার জন্য টুসুকে জীবনের পথে এগিয়ে চলাই থামিয়ে দিতে হবে।আজকের দিনে এ ঘটনা খুব স্বাভাবিক।টুসু এখানেও নিজের রক্তাক্ত হৃদয়টা কাউকে দেখাতে পারে না।আসলে ওযে কাউকে দুঃখ দিতে শেখেনি।তাই ওর বাবা মা যাতে দূঃখ না পায় ও সব সময়ে সেদিকে খেয়াল রাখত।

দিন যখন এমনি করে কাটছে হঠাৎই ও একদিন সামনাসামনি হল ওর সেই প্রথম জীবনের ভাললাগার মানুষটার।একদিন টুসু বাজারে গেছে নিজের একটা দরকারে।ওই দোকানেই ও দেখতে পায় দিনুকে।না,কোন কেনাকাটা করতে আসেনি দিনু।ও আসলে ওই দোকানে কাজ করে যে।দিনু টুসুকে দেখেই চিনতে পারে।টুসুর পছন্দের জিনিসটা ওকে খুঁজে পেতে সাহায্য করে দিনু।সেদিনের মত কাজটা শেষ হলেও টুসু দিনুকে দেখে খুশি হতে পারেনা।

আগের দিনুর মাজা গায়ের রং সঙ্গে অমন বলিষ্ঠ চেহারা দেখেই টুসুর প্রথমে ওকে ভাল লেগেছিল।কিন্তু আজ টুসু যে দিনুকে দেখেছে তার সাথে আগের দিনুর যেন কোন মিলই পাওয়া যায় না।আগের সেই বলিষ্ঠ শরীরে যেন ভাঙ্গন ধরেছে।মাথাতেও রুপোলি তারের মত হয়ে থাকা পাকা চুলগুলো সময়ের আগেই বার্ধক্য আসার কথা জানান দেয়।আজ টুসু থাকতে না পেরে বাড়িতে গিয়ে ওর মাকে দিনুর কথা জিজ্ঞাসা করেই ফেলে।ওর মাও এ ব্যাপারে টুসুকে কোন সাহায্য করতে পারে না।টুসুর মনে দিনুকে নিয়ে একটা চিন্তা যেন কাঁটার মত খচখচ করতেই থাকে।

টুসু নিছকই কৌতুহলের বশবর্তী হয়ে আবার ও পৌঁছে যায় সেই দোকানটাতে যেখানে দিনু কাজ করত।কাউন্টারে দিনুকে টুসু দেখতে পায় না।এদিকে যে জিনিস কেনার নাম করে ও এই দোকানে এসেছিল তা নেওয়া হয়ে গেছে ওর।শেষে বাধ্য হয়ে দোকানের মালিকের কাছে দিনুর কথা জিজ্ঞাসা করলে ও জানতে পারে দিনু আজ কাজে আসেনি।টুসু আরও একটু সাহসে ভর করে দোকানের মালিকের থেকে দিনুকে বাড়ির ঠিকানাটা জোগাড় করে।

টুসু যেন সেদিন মরিয়া দিনুর সাথে দেখা জন্য।দোকান থেকে পাওয়া ঠিকানামত টুসু এসে দেখে দিনুর ঘরের দরজা বন্ধ।অনেকক্ষন বেল বাজানোর পর দরজাটা খোলে দিনু।আজ দিনুকে দেখে চমকে ওঠে টুসু।এ কে সামনে এসে দাঁড়িয়েছে।এই কি সেই দিনু যাকে টুসুর খুব ভালো লাগতো।কথায় কথায় টুসু জানতে পারে দিনুর ম্যালেরিয়া ধরা পড়েছে।দিনুকে দেখাশোনা করার মত আর কেউ নেই বাড়িতে।তাই দরজাটা খুলতে দেরি হয়ে গেল।মা মরা দিনু গত বছর বাবাকে ও হারায়।ওর একমাত্ৰ দিদির বিয়ে হয়েছে অনেকদূরে।

সেদিনের পর থেকে টুসুর সেবা যত্নে একটু একটু করে সুস্থ হয় দিনু।যদিও টুসুর ক্ষেত্রে কাজটা খুব সহজ ছিল না।ও বাড়িতে প্রথম দিনই ওর মাকে সব সত্যিটা খুলে বলেছিল।একই সঙ্গে এও জানিয়েছিল ও দিনুকে দেখাশোনা করতে চায়।টুসু নিজের সীমার মধ্যে থেকেই দিনুর সেবা করেছে আর ওই কটা দিনেই ওর ভাললাগাটা ভালোবাসায় পরিণত হয়েছে তা শুধু টুসুর মনই বোঝে।

টুসু দিনুকে সুস্থ করে একদিন টুসু দিনুর কথায় জানতে পারে ও একটা মেয়েকে খুব ভালোবসে।দিনু ওকে বিয়ে করতে চায় কিন্তু মেয়ের বাবার তাতে মত নেই। আসলে দিনু যে কোন বড় মাপের চাকরি করেনা।দোকানের সামান্য সেলসের চাকরির কোন দাম নেই যে বাজারে।কিন্তু দিনু মেয়েটাকে ছেড়ে বাঁচার কথাও কল্পনা করতে পারে না।দিনু কাউকে ভালোবাসে শুনে টুসুর কেমন অস্থির লাগে।ওর ভালবাসার মানুষটাকে অন্য কারুর হাতে তুলে দিতে হবে ভেবেই যেন ও শিউরে ওঠে টুসু।ও জানে ও দিনুকে ওর ভালোবাসা রূপে পেতে পারেনা কিন্তু তবুও...

দিনুর মুখ থেকে ভালোবাসার কথা শুনলে কষ্ট হয় টুসুর।যে জায়গাটা ওর হতে পারত সেটা আজ অন্য কারুর।আসলে নিজের সংসার ছাড়ার পর টুসু এখানেই সুখ খুঁজেছিল।যদিও এটা ছিল মরীচিকার মত।টুসু সবটা জানার পরও সেই মরীচিকার পিছনে ছুটে গেছে।আসলে দিনুর সঙ্গে থাকলে টুসুর মনটা নিজের থেকেই ভালো হয়ে যেত।ওর জীবনের না পাওয়ার দুঃখগুলো ওকে এসে কাঁদিয়ে যেতনা তখন।আজ যখন সত্যিটা ওর সামনে এল তা প্রথমে মানতে টুসুর খুব কষ্ট হয় হচ্ছিল ঠিকই কিন্তু নিজের ভাবনাকে ওকে গ্রাস করতে দেয়না টুসু।ও আড়ালে চোখের জল মুছে নিজের মনকে শক্ত করে ।সব দুঃখটাকে নিজের মধ্যে রেখে ও ঠিক করে যে ও সব রকম ভাবে সাহায্য করবে দিনুকে ওর ভালোবাসকে নিজের জীবনে ফিরে পেতে।

টুসু ওর বাবাকে বলে দিনুর জন্য একটা ভালো চাকরির ব্যবস্থা করে দেয়।বিয়ের কথাবার্তা পাকা হলে ও নিজে দিনুর বিয়ের সব দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেয়।ঠিক সে সময়ে দিনুর দিদি বাথরুমে পড়ে গিয়ে পা ভাঙে।এদিকে দিনুর চাকরিটা নতুন বলে ও বেশি ছুটি নিতে পারেনা।তাই টুসু একা হাতে সব সামলায়।

বিয়ের দিন সকালে দিনুকে গায়ে হলুদ দিতে গেলে টুসুর চোখের পাতা বারবার ভিজে যায়।সারাদিনের রীতি সব পালন করা হলে টুসু অসুস্থতার কথা বলে নিজের ঘরে ফিরে আসে।টুসু নিজের শক্তি হারাচ্ছিল।ও ধীরে ধীরে আরো একবার দিনুকে ভালোবেসে ফেলেছিল এই দিনগুলোতে।এই ভালোবাসায় ছিল না কোন শর্ত ছিল না কোন অঙ্গীকার।শুধু ছিল ভালোবাসা যা ছিল এক একটা মনের।।।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance