Rajdip Ranjan Saha

Crime Thriller

4.0  

Rajdip Ranjan Saha

Crime Thriller

উন্মাদ ছাত্র!!

উন্মাদ ছাত্র!!

9 mins
273


কেমন হতো যদি কয়েকজন উন্মাদ ছাত্র ইস্কুলে পড়তো। আর তারা যদি আপনাদেরই বন্ধু হতো!!! 


তারা কী আদৌও উন্মাদ না কী এর পেছনে অন্য কোনও কারণ আছে?? 


সুরেন্দ্র কে সে? অফিসার ধীমানের সঙ্গে তার কী সম্পর্ক!!?? 


কী আছে সুরেন্দ্রর ডায়েরিতে??? 


সুরেন্দ্রর নিরুদ্দেশ হওয়ার পেছনে কী অন্য কোনও কারন আছে?? 


এই সব প্রশ্নের উত্তর দিতেই এসে গেছে


"উন্মাদ ছাত্র"।


ছাত্র!! 


সে পড়াশোনায় যেমনই হোকনা কেন? সেতো ছাত্রই হয়।কিন্তু এমনো কিছু ছাত্র আছে যার দুষ্ট ছাত্রদেরকে ভয় পায়.. 


সুরেন্দ্র এক রহস্যময় ছাত্র যার জীবনের উপন্যাসের মাত্র কয়েকটি পাতাই মানুষ পড়েছে বাকি পাতাগুলোতে অনেক রহস্য লুকিয়ে আছে যেটা কেউ যানে না। 


কিন্তু এটা কী করে সম্ভব তার পরিবারেরতো জানার কথা কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপার তারাও জানেনা সেই রহস্য গুলোকে। 


সুরেন্দ্র নিরুদ্দিষ্ট এদিকে তার বন্ধু উন্মাদ ছাত্রদের মুখে শুধু একটাই নাম অপ্সরা তিলোত্তমা। 


কে এই তিলোত্তমা? কোন রহস্য সে উন্মোচন করবে? কার আসল রূপ প্রকাশিত হবে? কে পিছন থেকে ছুঁড়ি ঘোরাচ্ছে? সুরেন্দ্রর অন্তর্ধানের রহস্য কী? 


এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিতেই এসে গেছে


"উন্মাদ ছাত্র"। 


আজ ছয়মাস হয়ে গেলো নরেন্দ্রপুর হাইস্কুলের অন্যতম ভালো ছাত্র সুরেন্দ্র নিখোঁজ সম্পূর্ণ নাম সুরেন্দ্রনাথ মিত্র মজুমদার। পড়াশোনায় খুবই ভালো কিন্তু ওই যে হাইস্কুল সবধরনের সেখানে তো সবধরনের ছাত্ররা বিভিন্ন জায়গা থেকে পড়তে আসে.. সেইরকমই সুরেন্দ্র ক্লাসের প্রথম স্থানাধিকারী ছাত্র হওয়ার জন্য তার প্রতি অনেক ছাত্রই ঈর্ষান্বিত হতো.. সুরেন্দ্র শুধু মাত্র ক্লাসের ভালো ছেলেদের সঙ্গে মিশতো, কারন সে ক্লাসের বদমাশ ছাত্রদের খুব ভয় পেত। সে খবরের কাগজে পড়েছিল মানস নামের এক ছেলেকে তার সহপাঠীরা জলে ফেলে হত্যা করছিল কারন মানস পড়াশোনায় খুব ভালোছিল ও তার অন্যান্য বন্ধুরা পড়াশোনা না করার জন্য স্যারের থেকে বকা শুনতো তাই তারা রাগে-ক্ষোভে মানসকে হত্যা করছিল, শুধু তাই নয় ওই বন্ধুরা মানোসের বাবা কে ফোন করে তার থেকে দেড় লক্ষ টাকা দাবি করে মানোসের বাবা পুলিশকে সমস্ত ব্যাপার জানালে পুলিশ সেই বন্ধুদের জেরা করলে সেই বন্ধুরা স্বীকার করে যে তারাই মানোসকে হত্যা করে। আপনারা হয়তো ভাবছেন মানসের মৃত্যু প্রসঙ্গ কেন আনা হচ্ছে কারন এই মানস ছিল সুরেন্দ্রোর খুব ভালো বন্ধু এই ঘটনার পর থেকেই সুরেন্দ্র চুপচাপ হয়ে যায়। সে ভয়ে ভয়ে থাকে যদি তার সঙ্গেও এমন কিছু ঘটে। তাই সে শুধু মাত্র ভালো ছেলেদের সঙ্গেই কথা বলে।


নাই কিরে সুখ? নাই কিরে সুখ?—


 এ ধরা কি শুধু বিষাদময়?


যতনে জ্বলিয়া কাঁদিয়া মরিতে


 কেবলি কি নর জনম লয়?—


কাঁদাইতে শুধু বিশ্বরচয়িতা


 সৃজেন কি নরে এমন করে’?


মায়ার ছলনে উঠিতে পড়িতে


 মানবজীবন অবনী ‘পরে?


বল্ ছিন্ন বীণে, বল উচ্চৈঃস্বরে,—


 না,—না,—না,—মানবের তরে


আছে উচ্চ লক্ষ্য, সুখ উচ্চতর,


   না সৃজিলা বিধি কাঁদাতে নরে।


কার্যক্ষেত্র ওই প্রশস্ত পড়িয়া,


   সমর-অঙ্গন সংসার এই,


যাও বীরবেশে কর গিয়ে রণ ;


   যে জিনিবে সুখ লভিবে সেই।


পরের কারণে স্বার্থে দিয়া বলি


   এ জীবন মন সকলি দাও,


তার মত সুখ কোথাও কি আছে?


   আপনার কথা ভুলিয়া যাও।


পরের কারণে মরণের সুখ ;


 “সুখ” “সুখ” করি কেঁদনা আর,


যতই কাঁদিবে ততই ভাবিবে,


   ততই বাড়িবে হৃদয়-ভার।


গেছে যাক ভেঙ্গে সুখের স্বপন


   স্বপন অমন ভেঙ্গেই থাকে,


গেছে যাক্ নিবে আলেয়ার আলো


   গৃহে এস আর ঘুর’না পাকে।


যাতনা যাতনা কিসেরি যাতনা?


   বিষাদ এতই কিসের তরে?


যদিই বা থাকে, যখন তখন


   কি কাজ জানায়ে জগৎ ভ’রে?


লুকান বিষাদ আঁধার আমায়


   মৃদুভাতি স্নিগ্ধ তারার মত,


সারাটি রজনী নীরবে নীরবে


 ঢালে সুমধুর আলোক কত!


লুকান বিষাদ মানব-হৃদয়ে


   গম্ভীর নৈশীথ শান্তির প্রায়,


দুরাশার ভেরী, নৈরাশ চীত্কার,


   আকাঙ্ক্ষার রব ভাঙ্গে না তায়।


বিষাদ—বিষাদ—বিষাদ বলিয়ে


   কেনই কাঁদিবে জীবন ভরে’?


মানবের মন এত কি অসার?


   এতই সহজে নুইয়া পড়ে?


সকলের মুখ হাসি-ভরা দেখে


   পারনা মুছিতে নয়ন-ধার?


পরহিত-ব্রতে পারনা রাখিতে


   চাপিয়া আপন বিষাদ-ভার?


আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে


  আসে নাই কেহ অবনী ‘পরে,


সকলের তরে সকলে আমরা,


প্রত্যেকে আমরা পরের তরে।


সুরেন্দ্র নিয়মিত ডায়েরি লিখত, ও সেই ডায়েরি তাতে কাউকে হাত দিতে দিতনা শুধুমাত্র....।


.. সুরেন্দ্রর অন্তর্ধান রহস্য উন্মোচন করতে গিয়ে এসডিও ধীমান সেনগুপ্ত এক চরম সত্যের মুখোমুখি হয়েছে যা তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। এদিকে ছয় উন্মাদ ছাত্রদের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না,একের পর এক অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটছে মৃত ব্যক্তিদের মুখে এক কাগজ পাওয়া যাচ্ছে যাতে একটি করে গুপ্ত সংখ্যা দ্বারা লিখিত কোড বা সংকেত পাওয়া যাচ্ছে!! সব মিলিয়ে এক জটিল রহস্য যা উন্মোচন করা অসম্ভব!!কী সম্পর্ক আছে ধীমান ও সুরেন্দ্রর মধ্যে যার জন্য অফিসার ধীমান ব্যক্তিগত ভাবে এই ঘটনার রহস্য উন্মোচন করার চেষ্টা করছেন এদিকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী মালিনীর প্লাস্টিক সার্জারির রিপোর্ট রহস্য, স্বর্গীয় জলপরী তিলোত্তমা সবই কী কাকতালীয় নাকী ধীমানের সেই ভয়ংকর অতীতের সাথে জড়িত!! 


৬ মাস আগে....:-


দিনটা ছিল ২০২১এর ১২ই ফেব্রুয়ারি। লকডাউনের পর প্রথম স্কুল খুলেছে আর সেদিনই টিফিনের পর থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, তার ব্যাগ আছে কিন্তু সে নিখোঁজ। স্কুল থেকে তার বাবা-মাকে জানানো হলে, তার বাবা-মা পুলিশে খবর দেয়, পরেরদিন পুলিশ স্কুলে এসে তদন্ত করে শুধু তার জলের বোতল পায় নীচের একটি অন্ধকার ঘর থেকে।এই স্কুলে বর্তমান বিডিও অভিমন্যু প্রামাণিকের ছেলে প্রমিত প্রামানিক পড়ে।এই ঘটনার সময় প্রমিতের পিতা পশ্চিমবঙ্গের বাইরে আছেন অন্য একটি কেসের জন্য তিনি পশ্চিমবঙ্গে আসবেন ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে। তাই এই কেসের ভার এসে পড়ে এসডিও ধীমান বসুর ওপর।ধীমানের এক দুঃখজনক অতীত আছে যে অতীত সম্পর্কে সে কাউকে কিছু বলে না সেটি একমাত্র তার দ্বিতীয় স্ত্রী মালিনী ও অফিসার রত্নাকর সামন্ত জানে। এর আগে সে যতগুলো কেসের দ্বায়িত্ব তার ওপর পড়েছে সেই সমস্ত কেসে সবাই ন্যায্য বিচার পেয়েছে, এইবার সুরেন্দ্রর অন্তর্ধান রহস্যের কেসের দ্বায়িত্ব তার ওপর পড়েছে। ইতিমধ্যেই সে তদন্ত শুরু করে দিয়েছে। 





(তিন দিন পর)১৬ই ফেব্রুয়ারি ২০২১:-গত তিন দিন ধরে তদন্ত করতে গিয়ে সে স্কুলের আসেপাশের স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানতে পারে যে সুরেন্দ্রর আগে আরও অনেক ছাত্র ই নাকি এই স্কুল থেকে নিখোঁজ হয়ে গেছিল তাদের নাকি মৃতদেহ কখনো স্কুলের পেছনে পুকুরে বা স্কুলের মাঠে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। সব থেকে রহস্যময় ব্যাপার হলো রিপোর্ট অনুযায়ী তাদের দেহে প্রচুর বীর্য ছিল। এই সময় ধীমান সিদ্ধান্ত নেয় স্কুলের শিক্ষক ও সুরেন্দ্রর বন্ধুদের সাথে কথা বলবে, এই সময় সে প্রধান শিক্ষকের সাথে এই ব্যাপারে কথা বলতে গেলে সেখানে অফিস স্টাফদের থেকে তিনি জানতে পারেন প্রধান শিক্ষক হাসপাতালে ভর্তি, তিনি গতকাল রাতে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এই সময় প্রধান স্টাফ সুমন অফিসার কে জানায়:-


সুমন সাহা:-ভুবন বাবু(প্রধান শিক্ষক ভুবন বরণ ভট্ট)সবসময় চাইতেন তার বিদ্যালয় কে সবার কাছে অন্যভাবে প্রদর্শিত করতে, তিনি এই স্কুলর উন্নতি করতে চান। কিন্তু!!.. 


অফিসার ধীমান:-কিন্তু কী? সুমন বাবু!! 


সুমন:-কিন্তু স্কুলের শিক্ষকরা তাকে সমর্থন করতো না।


অফিসার:-কেন? কেন অন্য শিক্ষকরা তাকে সমর্থন করেনা? 


সুমন:-প্রত্যেক সরকারি স্কুলে ২০-২২ কিংবা ১৫-১৭ বছর শিক্ষকতায় অভিজ্ঞ শিক্ষক কেই প্রধান শিক্ষক বা প্রধান শিক্ষিকার পদে নিযুক্ত করা হয়। কিন্তু ভুবন বাবুর ক্ষেত্রে এর অন্যথা ঘটে তিনি রামকৃষ্ণ মিশন পড়া এক মেধাবী ও আইসিএসই পরীক্ষায় প্রথম স্থানাধিকারী ছাত্র, তাই তার রেজাল্ট দেখেই অল্প বয়সেই তাকে প্রধান শিক্ষকের পদে নিযুক্ত করা হয়। এরফলে বহু বছরের শিক্ষকতায় অভিজ্ঞ শিক্ষকদের একটু হলেও রাগ হয়, তাই তারা তাকে মান্য করন না।


অফিসার:-তাহলে এখন সহযোগী প্রধান শিক্ষক কে? 


সুমন:-রথীন্দ্র বাবু। 


অফিসার:-তাহলে ওনাকে এক্ষুনি অফিসঘরে আসতে বলুন। 


সুমন:-বঙ্কু(দ্বিতীয় স্টাফ)তুই রথীন্দ্র বাবু কে বল এক্ষুনি অফিস রুমে আসতে। 


বঙ্কু (হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এসে) :-সুমনদা উনি আসছেন। 


(ইতিমধ্যেই রথীন্দ্র বাবু অফিস রুমে এলেন) 


রথীন্দ্র বাবু:-বলুন অফিসার!! কী হয়েছে?? 


অফিসার:-আপনি একটি নোটিশ জারি করুন যে আগামী ২২তারিখ সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ২৩ তারিখে সমস্ত নবম শ্রেণীর ছাত্রদের স্কুলে আসতে হবে। পুলিশ আধিকারিকরা তাদের সাথে কথা বলবেন। 


অফিসার ধীমান যত এই কেসের তদন্ত করছেন রহস্যের জট যেন ততোই পাকিয়ে যাচ্ছে। অফিসার ধীমান এটা বুঝতে পেরেছেন যে এই স্কুলে অনেক রহস্য আছে যতদিন যাচ্ছে সেগুলো আরো ঘোলা হয়ে যাচ্ছে। সুরেন্দ্র আদৌও জিবীত আছে কিনা এরও কোনও নিশ্চয়তা নেই। 


২২শে ফেব্রুয়ারি:-সকাল ১০টার মধ্যে সকল শিক্ষক-শিক্ষিকারা এসে উপস্থিত হয়েছেন স্কুলে, জেরা শুরু হয়ে গেছে, একটি চার্টলিস্ট তৈরী করা হলো, সমস্ত শিক্ষক- শিক্ষিকারা নিজেদের বয়ান দিলেন তাদের মধ্যে মিতালী ম্যাম যিনি নিঃসন্তান ছিলেন সুরেন্দ্র কে তিনি নিজের পুত্র সম স্নেহ করতেন তিনি বয়ান দেওয়ার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন। 


২৩ তারিখে ছাত্রদের থেকে বয়ান নেওয়ার সময় বিভিন্ন মত উঠে আসে:-তাদের মধ্যে বিভাগ-ক এর:-


বিভাস মল্লিক (রোল নং-২৯) তার দাবি সুরেন্দ্রর নাকি খুব অহংকার ছিল। 


মনোময় দাস(রোল নং-৩৭)সে বলে সুরেন্দ্র বিনা দোষে তাদেরকে স্যারেদের থেকে বকা খাওয়াতো।


মনমোহন সিংহ (রোল নং-১১) তার কথায় সুরেন্দ্র ছিল খুবই দয়ালু।ইত্যাদি..। 


এছাড়াও বিভাগ-খ এর ছেলেদের মধ্যে:-


প্রসেনজিৎ তালুকদার (ক্রমিক নং-৫) তার মতে সুরেন্দ্র খুবই চুপচাপ থাকত, সে খুবই সৎ ছিল। 


সৌমসিক বিশ্বাস(রোল নং-৩১) তার কথায় সুরেন্দ্র শুধু মাত্র ভালো ছাত্রদের সাথে কথা বলতো, আর স্যারেদের সামনে সে ভালো থাকত কিন্তু স্যার চলে যেতেই নাকি সে ও তার ছয় সঙ্গী খারাপ ছাত্রদের সঙ্গে বাজে ব্যবহার করতো।.. ইত্যাদি। 


কিন্তু সবথেকে আশ্চর্য অফিসার ধিমানের কাছে মনে হয়েছে বিডিও অভিমন্যু প্রামাণিকের ছেলে প্রমিতের(রোল নং-৮,বিভাগ-ক)কথায়:-তার মতে সুরেন্দ্র নিয়মিত ডায়েরি লিখত, এবং সেই ডায়েরিতে শুধু মাত্র তার ছয় বন্ধুই দেখত আর কাউকে দেখতে দিত না, সুরেন্দ্র ওই ডায়েরি প্রত্যেক দিন স্কুলে আনত,ও স্কুলে বসেই সে ডায়েরি লিখত...। 


আশ্চর্য ব্যাপার এইটাই যে বিভাগ-ক এর রোল নং ২-৭ তারা ছয় জন আসেন নিজেদের বয়ান দিতে, আর অফিসার ধীমানের মনে হয় যে ওই ছ'জনই হলো সুরেন্দ্রর প্রিয় ছয় জন বন্ধু।


প্রমিতের কথানুযায়ী যেদিন সুরেন্দ্র নিখোঁজ হয় সেদিন সে ডায়েরি টা নিয়ে এসেছিল। ডায়েরিটা সুরেন্দ্রর ব্যাগে থাকা উচিত,আর ব্যাগটা প্রমাণ হিসেবে ল্যাবে রাখা আছে। 


সেই মতো অফিসার ধীমান ল্যাবে গিয়ে ব্যাগের মধ্যে খোঁজাখুঁজি করলে ব্যাগে ডায়েরি বাদে সমস্ত খাতা বই আছে। খোঁজখুঁজি তে তাকে অন্য অফিসার পূবালী সাহায্য করে। অনেক খোঁজখুঁজির পর অফিসার পূবালী একটি চিরকূট পায়। যাতে একটি সংকেত লেখা ছিল:-


"_16_18_1_13_9_20 এর কাছে আছে আমার মনের ডায়েরি।"


অফিসার ধীমান:-কেউ কী আমাদের সাথে ভ্রনিতা করছে?? 


অফিসার পূবালী:-আচ্ছা স্যার এমনও তো হতে পারে যে এই সংকেতের আমরা কোনো কিছু জানতে পারবো। এই কোডের পর লেখা আছে যে "এর কাছে আছে আমার মনের ডায়েরি"। আচ্ছা হতেই তো পারে যে এটা ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট বা ইউটিউব এর কোনো চ্যানেল যেখানে এই ডায়েরিটা পাওয়া যাবে। 


অফিসার ধীমান:-তাহলে আসল ডায়েরিটার কী হলো? 


অফিসার পূবালী:-এটাতো সত্যিই একটা রহস্য। 


এদিকে যেমন ডায়েরি খুঁজে না পাওয়াটা যেমন রহস্য তেমনই অন্যদিকে সন্তান কে হারিয়ে সুরেন্দ্রর বাবা-মায়ের যেন কোনো দুঃখই হয়নি, তারা যোগাযোগও করেনি পুলিশের সঙ্গে, পুলিশই তাদেরকে যা ফোন করছে এটাও একটা রহস্য। তবুও কেন অফিসার ধীমান এই কেস টিকে ব্যক্তিগত ভাবে সমাধান করছেন।





ঘড়িতে ঠিক রাত সাড়ে দশটা বাজে। মালিনী এখন ত্রিপুরাতে, সেখানকার ইউনিভার্সিটিতে বাংলা নিয়ে পড়ছে। রাতের খাওয়া শেষ করে মোবাইলটা অন করতেই কয়কটা নোটিফিকেশন ঢুকলো, সেটাকে ক্লিক করতেই দেখলো তার বন্ধু ঋদ্ধি গোয়ায় তোলা কিছু ছবি ইনস্টাগ্রামে আপলোড করেছে। ঋদ্ধির প্রোফাইল দেখতে গিয়ে ধীমানের চোখে পড়লো ঋদ্ধির ইউজারনেমটা। সেখানে ঋদ্ধি সেনের বদলে লেখা ছিল R4 89 _S5 14। তখনই ধীমানের মাথায় এলো সেই কোডটার কথা যেটাকে মনে রাখার জন্য সে ফোনে ছবি তুলে রেখেছিল। কোডটা দেখার পর সে বুঝে গেল যে ডায়েরিটা বর্তমানে কার কাছে আছে। 





এবার আপনারা বলুনতো ডায়েরিটা এখন কার কাছে আছে?আর কে এই ছজন বন্ধ, আর কীভাবেই বা অ্যাটেন্ডেন্সের খাতার হারিয়ে যায়? কোন সত্যের মুখোমুখি হয়েছে ধীমান? ধীমানের এমন কী অতীত যার রহস্য কেউ উন্মোচন করতে পারেনি? কী সম্পর্ক ধীমান ও সুরেন্দ্রর মধ্যে? ধীমানের দ্বিতীয় স্ত্রী মালিনী হলে প্রথম স্ত্রী কে? সুরেন্দ্র কে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না কেন? সে কী আদৌ জীবীত ? নাকী মৃত? কী এমন ঘটেছে এই ছয় মাসে?


জীবনের প্রয়োজনে ছুটে ছুটে যখন আমরা হয়রান,


তখন প্রশান্তির জন্য নির্দিষ্ট একটি মাথা গুজার ঠাই খুঁজি!


কখনো সেটা আরামদায়ক শয্যা, কখনো প্রিয় কারো কোল!


বিশ্রামাগারে শুয়ে হঠাৎ ভাবুক মনে প্রশ্ন জাগে


জানালার পাশে উকি দেয়া আকাশের দিকে তাকিয়ে,


অনুসন্ধানী চোখ জন্মের কারণ খুঁজে!


আমাদের জন্মের কি কোন উদ্দেশ্য আছে?


নাকি উদ্দেশ্যহীন বিদ্রুপেই আমাদের জন্ম?


একটি গাঢ় বিশ্বাস আমরা হ্নদয়ে ধারণ করি


জাগতিক সকল পরিণামের পিছনে একটা কারণ খুঁজি;


একটি অদৃশ্য শক্তিকে ভেবে হোঁচট খাই; যা দেখা যায়না।


অদেখা একটা জগতে প্রবেশের ভয়ে আতংকিত হই


নিরাকার ঈশ্বরের আশীর্বাদ আদায়ে মন ব্যাকুল হয়


ধীরে ধীরে অদৃশ্য শক্তি শিকর মেলে ছড়িয়ে পরে আত্মার গভীরে।


জাগতিক মোহ ভেঙ্গে দেখি তারায় তারায় ঘর্ষণে বিদ্যুৎ চমকায়


আঁধারে ডুব দিতে দিতে দেখি,


রুপালী আলোয় ঝলমল করে ধার্মিকতার শান্তি ও গাঢ় চুম্বন!


ঈশ্বর তার পবিত্র রহস্য আড়ালে রাখেন;


রহস্য অনাবৃত্ত করতে আমরা বিশুদ্ধতার অতলে ডুবে যাই


আবার ভেসে উঠি নতুন কিছু রহস্য নিয়ে!


ঈশ্বর তবু নিরাকার আড়ালে সচল।


তার মহিমা ও অপার সৌন্দর্য্যকে ছুঁতে,


শান্তি চুক্তিতে ঝড়ের তান্ডব থামিয়ে দেই!


নামহীন কিছু অস্পৃশ্য ছায়া সুক্ষ অনুগ্রহে আমাদের পাশ কাটিয়ে যায়!


আমরা বিস্মিত হই! ভাবি কে গেল?


আমরা তাদের দেখিনা, তারা অদৃশ্যে যায় আসে!


তাদের স্পর্শ যেন তুষারের উপর তুলোর আস্ফালন।


স্বর্গের অজানা প্রশান্তি,


আমাদের জাগতিক আনন্দ-ব্যাথাকে ঐশ্বরিক মলমে উপষম করে দেয়!


অদ্বিতীয় ভাবনায় শরীরের রক্ত হীম হয়ে আসে


নিজেকে রক্ষা করতে করজোড়ে ক্ষমা ভিক্ষা চাই


মনে হয়, ঈশ্বররুপে অশরীরি কেউ সব দেখছেন!


জন্মের রহস্য, একটি রহস্য হয়েই থেকে যায়


রহস্য উন্মোচনে কেবল আমরা হারিয়ে যাই; জনবহুল পথে


কখনো কন্টকময় পথে!


হারিয়ে যেতে যেতেও রহস্য কাটেনা


নিরাকার ঈশ্বর নীরব থাকেন, আমাদের উত্থান-পতনে চিন্তিত হোন


তবু, জন্মের রহস্য তিনি আড়াল করেই রাখেন।


অবশেষে, বিনাশ দুয়ারে স্থবির


তার ভয়ংকর খরখরে হাতের স্পর্শ আমাদের জানান দেয়;


রহস্য উন্মোচনের সময় এলো!


কী কারনে ছাত্রদের মৃতদেহ পাশের পুকুরে পাওয়া যাচ্ছে? আর তাদের দেহে বীর্য কেন পাওয়া যাচ্ছে? এর পেছনে কী অন্য কোনো রহস্য আছে? 


পরবর্তী পর্ব প্রকাশিত হবে খুব তাড়াতাড়ি। 



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Crime