Sangam Choudhury

Tragedy Inspirational

3.8  

Sangam Choudhury

Tragedy Inspirational

সত্যমেব জয়তে- এক আশা?

সত্যমেব জয়তে- এক আশা?

2 mins
475


খুব জোরে ছুটছিল জয়তী ভাইকে কোলে তুলে। খুব একটা দূরে নয় থানা। 

নাহ্,আজ একটা ব্যবস্থা করবেই জয়তী। সে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ আজ।সে জয়তী মুন্ডা, সে হতে পারে Scheduled Tribe গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত,যাদের এখনও মানুষের চোখে দেখে না বহু তথাকথিত মানুষগোষ্ঠী;তবে জয়তী পারবে না সমাজের তোয়াক্কা করতে আজ,সে পারবে না কিছু এরকম কিছু নেই আজ।তবে এখনই সেটা ভাবার সময় নয়। আগে ন্যায়ের পথে হাঁটতে চায় সে।এসব ভাবতে ভাবতে সে আরো জোরে ছুটতে থাকলো.....

সময়টা বিকেলবেলা, জয়তীর বাড়ির সবাই তখন ভাতঘুমে আচ্ছন্ন।তার একমাত্র ছোট ভাই,বিশু সবার অলক্ষ্যে বাড়ির পাঁচিল টপকে ঘুড়ি টা নিয়ে বেড়িয়ে পড়ল।সে বয়সে পুঁচকে হলেও, ঘুড়ি ওড়ানোতে পাড়ায় তার জুড়ি মেলা ভার। তা হালকা সবুজ রঙের ঘুড়িটা বেশ ওড়াচ্ছে একা একা বিশু। হঠাৎ দমকা হাওয়ায়, টাল সামলাতে না পেরে ঘুড়ির সুতো টা গেলো হাত থেকে ফসকে এবং একটা গাছের বেড়িয়ে থাকা ডালে লেগে গেলো কেটে। কাটা সুতোসমেত ঘুড়ি চললো উড়ে; পড়লো গিয়ে পাশের পাড়ার মুখুজ্যেদের বাড়ির বাগানে।

বিশুও ছুটেছিল সেই ঘুড়ির পেছন পেছন।কিন্তু হায়রে অদৃষ্ট, সেই বাচ্ছাছেলেটি কি জানতো,একটা সামান্য পথচ্যুত ঘুড়িকে উদ্ধার করতে গিয়ে বড় মুখুজ্যের কাছে এহেন গালিগালাজ খেতে হবে তাকে এবং এমন মার খেতে হবে তাকে,যা রাস্তার বিড়াল- কুকুরকেও খেতে হয় না।

রক্তাক্ত শরীর নিয়ে কোনোভাবে যখন বিশু বাড়ির দরজায় হুমড়ি খেয়ে পড়ল, তখনও তার তর্জনীর ডগায় জড়িয়ে আছে রক্তমাখা একটা সবুজ ঘুড়ি।

গেটে অমন আওয়াজ হতেই ,এক ঝটকায় ঘুম ভেঙে গেল জয়তীর। তার ঘুম খুব পাতলা। গেট খুলে ভাই কে অমন অবস্থায় দেখে যেনো আকাশ থেকে পড়লো সে।

ভাইয়ের প্রাথমিক শুশ্রূষা করতে,সবটা শুনলো সে।কিন্তু, সে একা কিবা করবে!ভাই কে মন না চাইলেও একা বেড়িয়ে পড়ার জন্য হালকা ধমক দিয়ে বুকে জড়িয়ে নিয়ে কাঁদতে থাকলো জয়তী।আবারও হেরে গেলো আরেক জয়তী ও বিশু...

ভাবছেন,কিন্তু গল্পের শুরুতে তো তারা হার না মানার ইঙ্গিত দিয়েছিল, তবে এখানে হলো না কি?

এখানে যেটা হলো,সেটা হলো,এক স্বপ্ন যা সব জয়তী রা দেখে,কিন্তু বাস্তব এক অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে।

তারা আবার নিদ্রা যায়...

তাহলে কি এই ধূসর গোধূলির কি কোনো অন্ত নেই?

আছে। আলবাত আছে। তবে,সে ইচ্ছাশক্তির বশবর্তী,আমার আপনার সবার মধ্যে রয়েছে। তেমনই,রাষ্ট্রের কাছেও রয়েছে,খালি জয়তীদের সুবিচারের সুযোগ করে দিতেই হবে। নাহলে,তারা ভরসা হারাবে, এবং এক মাথা নিচু করে বাঁচতে শেখা বিশুদের জন্ম দেবে,যাদের ঘুড়িতে লেগে থাকবে,মানবিকতার ব্যর্থতা।



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Tragedy