SUBHAYAN BASU

Romance

1.5  

SUBHAYAN BASU

Romance

শুধু তুমি

শুধু তুমি

3 mins
1.7K


তোমার জন্য আমি সব করতে পারি. বোমাবাজি কিংবা পকেটমারি. তুমি আমার কন্ডাকটরীর পয়সায় সাত টাকা থেকে এক লাফে দশ টাকা হয়ে যাওয়া এগরোল সাটালেও তাই আমি উদাস না হয়ে তারিয়ে তারিয়ে তোমার ঠোঁটে লেগে থাকা লাল সসের চেটে নেওয়া দেখতে থাকি. গভীর রাতে শুধু মাঝে মাঝে ভীষণ সুরসুর করে হিসি পায়, মনে হয় কন্ডাকটরীর ব্যাগটা খুচরো পয়সার ওজনে এত ভারী হয়ে গ্যাছে যে আর বইতে পারছিনা. ওটাকে ছুড়ে ফেলি, কিন্তু ওর স্ট্রাপ আমার কাঁধ বেয়ে গলায় উঠে আসে, আর হিসহিস করে জড়িয়ে ধরে আমার গলা. দমবন্ধ হয়ে আমার ঘুম ভেঙে যায়. এক গ্লাস জল খেয়ে আমার টালির চালের দিকে তাকিয়ে থাকতে আবার তখন তোমার কথাই মনে পড়ে যায়. কারণ তুমিই আমার বেঁচে থাকার একমাত্র সুখ. ভাবি তোমার সঙ্গে হেঁটে চলে যাব কোদাইকানাল, বা প্যারাসুটে করে ঝাঁপিয়ে পড়ব তোমাকে জড়িয়ে এরোপ্লেন থেকে. অনেক রাস্তা পেরিয়ে অনেক মৃত্যু ডিঙ্গীয়ে তোমার জন্যে আমি মায়াচন্দন আনতে পারি. তোমাকে নিয়ে আমি উদ্দাম উল্লাস বা অবুঝ প্রেম সবটাই করতে পারি কয়েক মিলিসেকেণ্ডে. তোমার কাছে শুধু আমার একটাই চাহিদা. অনেক লড়ে অনেক হেরে, কিছু জিতে অনেক বেচে, আমার চারপাশের নেশাখোর, খিস্তিবাজ অন্ধকার ঠেলে তোমার কাছে শেষমেষ এসে পৌঁছলে, আমার পায়জামার দড়িটা খুঁজে দেবে তো?


দিনরাত শুধু তোমার কথাই ভাবি।তোমাকেই চাই। একঘেয়ে জীবন থেকে মুক্তি, উচ্ছল আকর্ষণীয় কথা, হালকা গরম নিশ্বাস, কপালে জমা ঘাম, শরীরজুড়ে সুড়সুড়ি ।তুমি কি যৌবনের তাড়না ,যৌনতার নেশা? বদলে গেছি আমি। বদলে গিয়েছে সৌন্দর্যের মানে। কোনটা শেষকথা জীবনে? মনের চাহিদা, আবেগ, কবিতা এসব কোথায় গেল? বাস্তব কি এত নিষ্ঠুর? আমার দাম শুধু শরীরে, যৌবনে ?তারপর কি হবে ?কি নিয়ে বাঁচবো আমি?একটা স্থায়ী পরিচয় কি আমার পাওয়া যাবে না? মানুষ? তাই বা বলি কী করে?আমার নিজস্ব বলে কোন সত্ত্বা নেই, কোন মত নেই ,বিচার নেই, বুদ্ধি নেই। আমি চলেছি তালেগোলে ,ভুলে ভালে। এই ক্ষয়িষ্ণু সমাজে আমার কোন ভূমি নেই ,ভূমিকা নেই ।আমার শুধু একটা নাম আছে। ওটা বদলাবে না ।কিন্তু ওটার কোন মূল্য নেই ।ঘাড়ে চেপে থাকবে ফাঁকা শুকনো একটা জন্জাল-মৃত্যু পর্যন্ত ।যে নামের ঠিক মানেই আমি জানি না ।ঐ নামের আমি যোগ্য কিনা তাও জানিনা। ঐ নামটা আমি খাব , না মাথায় দেব ,নাকি ছুঁড়ে ফেলে দেব, তাও জানিনা।ফেলে দেবই বা কোথায় তাও জানিনা।


শুধু বসন্তকাল এলেই আমার বুকটা ধড়পড় করে।মন আনচান শুরু হয়।আসলে আমি সহজেই প্রেমে পড়ে যাই ।এক ঝলক কোন সালোয়ার-কামিজ পরা মেয়ে আমাকে দেখলেই, বুক কেমন করে। মনে হয় ও বোধহয় আমাকে কিছু বলতে চায় ।কোন মেয়ের হঠাৎ মুখোমুখি হয়ে যাওয়া, বাসে পাশের সিটে কোন অচেনা মেয়ে বা পুকুরে চান করতে করতে সরকার বাবুর বাড়ির ছাদে একটা ছায়া- সবাই মনে হয় আমাকে কিছু বলতে চায় ।আমার মনটা খুব নরম আর প্রেমিক প্রকৃতির। আমি কবিতাও লিখি। সব ফালতু কবিতা ,সব নিজের জন্য ,নিজের করে সব মেয়েকে পাবার জন্য বানিয়ে বানিয়ে লেখা। লিখে ফেলে শান্তি, কিছু তো বলা হলো ।বাস্তবে বলতে গেলে তো জিভ শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাবে। কোন মেয়েকে জীবনে প্রেমপত্র দিতে পারব বলে তো মনে হয় না,ফোনে কথা বললেও কথা গুছিয়ে উঠতে পারিনা। শুধু হৃদয়ে ভীষণ অবুঝ প্রেম জেগে ওঠে, হজম হয়না, জেলুসিল আর কত খাব?প্রেমের চোটে ঘুম হয় না ,খিদে কমে যাচ্ছে। আর কতকাল খুঁজবো তোমায়? আসলে নীল রঙটাই যত নষ্টের গোড়া। আজকাল আর নীল রঙয়ের জামাটা পরিনা। আমাদের পাড়ার হারামি মনোজ ডাক্তারের গাড়িটাও নীল রঙয়ের।তুমি তো আমাকে কাঁদিয়ে চলে গেলে- তবু তোমার নীল ওড়নাটা চোখে ভাসে। নীল চোখের সুন্দরী ঐশ্বর্য রাই আমার দিকে কক্ষনো তাকায় না ,কক্ষনো না।তাই নীল রঙটা ভাল না। নীল বলে একটা ছেলে -ভীষণ বোকা,ভীষণ ক্যাবলা।সবাই ওকে ঠকায়। ধুর ছাই।



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance