শুধু তোমাকে চাই
শুধু তোমাকে চাই
মেয়েটা:- নীল,,,,,,,কোথায় তুমি?। বলতে বলতে মেয়েটা বাগানের দিকে চলে গেলো। বাগানে পৌছে মেয়েটা যা দেখল সেটা দেখার জন্য সে একেবারেই প্রস্তুত ছিল না। আসলে ওই গার্ডেনে নীল অনন্যরকে কোমর জড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে আর কী যেন একটা গল্প করছে। মেয়েটা এবার নীলের কাছে গিয়ে বলল,,,,,,
মেয়েটা:- নীল তুমি আমাকে এইভাবে ঠকালে?। কারোর আওয়াজ শুনে নীল ওই মেয়েটাকে ছেড়ে সমানের দিকে তাকিয়ে একটা মেয়ে নীলের দিকে তাকিয়ে আছে। নীল দেখল মেয়েটার চোখে জল। নীল বলল,,,,,,,
নীল:- নিশু তুই,,,,,এখানে?
অনন্যা:- কে এই মেয়েটা?
মেয়েটা অর্থাৎ নিশা:- আমি ওর স্ত্রী
অনন্যা:- স্ত্রী ছিলে এখন আর নেই
নিশা:- মানে
অনন্যা:- কারণ জানু আমাকে ভালোবাসে শুধু
নীল:- একদম ঠিক আমি আর তোমায় ভালোবাসি না
নিশা:- কীইই!!! তুমি আমায় আর ভালোবাসো না
নীল:- না এখান যাও এখান থেকে
নিশা:- চলে তো যেতেই হবে আমি আর কী করবো। বলে নিশা কাঁদতে কাঁদতে চলে গেলো। নিশা চলে যেতেই নীল তাড়াতাড়ি অনন্যার কাছ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলো আর বলল,,,,,,
নীল:- আজ শুধু মাত্র তোর জন্য আমাকে এইরকম করতে হলো
অনন্যা:- কারণ আমি তোকে ভালোবাসি জানু আই রিয়েলি লাভ ইউ। বলে অনন্যা নীলকে জড়িয়ে ধরল কিন্তু নীল ওকে নিজের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিলো আর ওখান থেকে চলে গেলো। এইভাবেই কিছু দিন চলতে লাগল। নীল নিশাকে আর পাত্তাই দেয় না। একদিন নিশা রান্নাঘরে কাজ করছিল। তখনই অনন্যা এসে বলল,,,,,,
অনন্যা:- এই যে মেয়ে আজকে আমার চিলি চিকেন রান্না করবে
নিশা:- কিন্তু আজ শনিবার আর শনিবার তো আমাদের বাড়িতে মাংস রান্না হয় না
অনন্যা:- এই বেশি বেশি কথা বলতে হবে না যেটা বললাম সেটা করো। অনন্যার চিৎকার শুনে নীল সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে বলল,,,,,
নীল:- কী হয়েছে অনু ডার্লিং?
অনন্যা:- দেখো তো বেবী ওই মেয়েটাকে আমি বললাম যে আজকে চিলি চিকেন খাবো কিন্তু ওই মেয়েটা বলছে যে বানাবে না কারণ আজ স্যাটারডে
নীল:- ঠিকই তো বলেছে
অনন্যা:- তুমিও ওর সাথে
নীল:- আমি ওর সাথে নেই আমি আমার মতো বলছি
অনন্যা:- ধুর ভালো লাগে না। বলে অনন্যা রেগে চলে গেলো। অনন্যা চলে যেতেই নীল নিশার কাছে এসে বলল,,,,,
নীল:- খুব কষ্ট পেয়েছো বুঝি?। নীলের কথা শুনে নিশা কিছুই বলল না। নীল আবার বলল,,,,,
নীল:- কী গো প্রিয়তমা আমার ওপর কী তোমার অভিমান?। নীলের কথায় এইবারেই কিছু বলল না নিশা। নীল এবার নিশাকে নিজের কাছে টেনে নিয়ে বলল,,,,,,
নীল:- নিশু তুমি আমার সাথে কথা বলছো না কেন?
নিশা:- কেন বলবো আপনার সাথে?
নীল:- অভিমান হয়েছে
নিশা:- অভিমান কেন হবে আপনি তো আর আমাকে ভালোবাসেন না তাই জন্য আমি কেন শুধু শুধু অভিমান করবো
নীল:- না নিশু আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি
নিশা:- হুঁ!! মিথ্যা কথা বলবেন না নীল বাবু
নীল:- তুমি কেন আপনা আপনি দিয়ে কথা বলছো আর এটা কী নীল বাবু তুমি প্লিজ এইরকম বলো না
নিশা:- যা বলছি একদম ঠিক বলছি
নীল:- কিন্তু,,,,,,,,। নীলের কথা শেষ হওয়ার আগেই অনন্যা এসে বলল,,,,,
অনন্যা:- নীল বেবী চলো না একটু ঘুরতে যাই
নীল:- না আজ যাবো না
অনন্যা:- প্লিজ,,,,,,,,,
নীল:- আচ্ছা চলো। বলে নীল অনন্যাকে নিয়ে চলে গেলো। নীল যেতেই নিশা সব কাজ শেষ করে নিজের রুমে চলে গেলো। নিশা তাড়াতাড়ি নিজের আলরামি থেকে জামাকাপড় বের করে প্যাকিং করতে লাগল। প্যাকিং করার পর নিশা ওই পুরো বাড়িকে দেখতে লাগল আর কাঁদতে কাঁদতে বলল,,,,,,,,
নিশা:- শেষ বার তোকে দেখে যাচ্ছি আর কখনো দেখা হবে না এই রুম এই বিছানা এই কিচেন আরো কত কী এখন আমি যাই গুড বাই। বলে নিশা একটা চিঠি রেখে চলে গেলো।
সন্ধ্যার সময়,,,,,,,
নীল অনন্যাকে গাড়ি করে নিয়ে বাড়ির সমানে এলো। গাড়ি থেকে নেমে দেখল বাড়ির গেটে তালা দেওয়া আছে। নীল এবার নিজের প্যাকেট থেকে চাবি বের করে বাড়ির দরজা খুললো আর দেখল কেউ নেই। নীল বলল,,,,,,
নীল:- নিশু,,,,,,,নিশু কোথায় গেলে তুমি?
অনন্যা:- তুমি ওকে কেন ডাকছো বেবী?। অনন্যার কথা শুনে নীল কিছুই বলল না। তখনই নীল দেখল টেবিলে একটা চিঠি রাখা আছে। নীল চিঠিটা পড়ে অনন্যা কাছে গিয়ে বলল,,,,,,
নীল:- এটা নিশুর চিঠি
অনন্যা:- তা আমি কী করবো?
নীল:- নিশু আমাকে ছেড়ে সারাজীবনের মতো চলে গেছে শুধু মাত্র তোর জন্য
অনন্যা:- আমার জন্য কেন? আমি তো তোমায় ভালোবাসি জানু
নীল:- চুপ,,,,,,একদম আমাকে জানু বলবে না
অনন্যা:- তুমি ওই মেয়ের জন্য আমাকে বকছো?
নীল:- হ্যাঁ
অনন্যা:- কেন?? আমি তো তোমায় ভালোবাসি জানু
নীল:- কিন্তু আমি ভালোবাসি না আমি শুধু নিশুকে ভালোবাসি
অনন্যা:- কিন্তু,,,,,,,
নীল:- আমি শেষবারের মতো বলছি আমি তোমাকে আগেই পছন্দ করিনা আর এখনোও করবো না
অনন্যা:- নীল প্লিজ আমার কথা শোনো
নীল:- দেখো অনন্যা তোমাকে ভালোবাসি না আর দেখো ভগবান মনে হয় সেটা চাই না তাই জন্য প্লিজ তুমি এখান থেকে চলে যাও
অনন্যা:- তুমি একদম ঠিক বলেছো নীল আমি মনে হয় জোর করেই তোমার ভালোবাসা পেতে চাইছিলাম আমি এখান বুঝতে পেরেছি এবার থেকে আর আমি নীল নিশার মাঝে আসবো। বলে অনন্যা খুশি হয়ে চলে গেলো। নীল আর বেশি সময় নষ্ট না করে তাড়াতাড়ি নিজের গাড়িটা বের করে নিশাকে খুঁজতে চলে গেলো। এইদিকে নিশা গার্ডেনে বসে আছে। নিশা কাঁদতে কাঁদতে বলল,,,,,,
নিশা:- হে রাধাকৃষ্ণ তুমি কী আমাকে ছাড়া আর কাউকে কষ্ট দাও না কেন,,,,? শুধু আমাকেই দাও,,,?আমার কি ভাগ্য একজনকে আমি বিশ্বাস করতাম কিন্তু সেও আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলো,,,,,,। তখনই নিশার কাঁধে কেউ হাত রাখলো। হঠাৎ কারোর স্পর্শে নিশা নিজের চোখের জল মুছে পিছন ফিরে দেখল নীল দাঁড়িয়ে আছে। নীলকে দেখে নিশা মুখ ঘুরিয়ে নিলো। নীল বলল,,,,,,
নীল:- আমার নিশুরানীর কী রাগ হয়েছে?। নীলের কথা শুনে নিশা কিছুই বলল না। আবার নীল বলল,,,,,
নীল:- সরি নিশু,,,,,,
নিশা:- কী হয়েছে??
নীল:- সরি
নিশা:- সরি বলছো কেন?? আর আমার তোমার সাথে কোনো কথা নেই
নীল:- প্লিজ রানী ক্ষমা করে দাও
নিশা:- হুঁ!!
নীল:- আর কখনোও এইরকম করবো না
নিশা:- তুমি তো অনন্যাকে ভালোবাসো
নীল:- ওইসব নাটক
নিশা:- কিইই!!
নীল:- হ্যাঁ গো আমি ওকে পছন্দ করি না কিন্তু ও আমার কাছে সবসময় আসে তাই আমি ওর অভিনয় করেছিলাম তারপর ওকে বোঝাতেই অনন্যা চলে গেলো
নিশা:- ও এই ব্যাপার
নীল:- এবার আমাকে ক্ষমা করে দাও
নিশা:- মাপ করলাম কিন্তু অভিমান তো আছে তোমার ওপর
নীল:- সে তো আমি জানি কী করে আমার নিশুর অভিমান ভাঙাতে হয়
নিশা:- এই না একদম না। নিশার কথা শুনে নীল কিছু না বলে নিশাকে নিজের কাছে টেনে নিলো। নিশা বলল,,,,,,,
নিশা:- এই ছাড়ো তো। নিশার কথাই নীল কান দিলো না সোজা নিশার ঠোঁটে কিস করে দিলো। নীলের এমন আচরণ দেখে নিশা অবাক হয়ে বলল,,,,,,,
নিশা:- এটা কী হলো?
নীল:- কিস দিলাম ডার্লিং
নিশা:- জানো নীল আজকের দিনটা আমার কাছে ভীষণ ভীষণ স্পেসাল
নীল:- আমার কাছেও
নিশা:- আমি তো শুধু তোমাকে নিয়েই থাকতে টাই আর কিছুই চাইনি
নীল:- আমিও তো শুধু তোমাকে চাই তুমি ছাড়া আমি কিছু না নিশু
নিশা:- আমিও নীল আই লাভ ইউ নীল। বলে নিশা নীলকে জড়িয়ে ধরল নীল ও তার প্রিয়তমাকে জড়িয়ে ধরল।
💙শুভ সমাপ্তি💙

