সহজপাঠ ও আমার স্মৃতি কথারা
সহজপাঠ ও আমার স্মৃতি কথারা


সেদিন বাড়িতে গিয়ে দেখি আমার বোনপো বছর ছয়েকের ডোডো বাবু তার মায়ের তত্ত্বাবধানে এবং মাসিমণিকে বাংলা বই কেমন সুন্দর করে পড়া যায় তা শোনাবার উদ্দেশ্যে বেশ জোরে জোরে পড়ছে ঃ "বাদল করেছে । মেঘের রং ঘন নীল। ঢং ঢং করে গীর্জার ঘড়িতে নয়টা বাজল।" এভাবে পড়ে চলল শেষ পর্যন্ত। আমি শুনতে শুনতে ফিরে যাচ্ছিলাম আমাদের ছোটবেলার হলুদ মলাট আর সবুজ বর্ডার দেওয়া গুরুদেবের 'সহজ পাঠ' এ । যেখানে প্রথমেই ছবি ছিল সাদা কালো তে হামাগুড়ি দেওয়া ছোট একটা বাচ্চা। যার কণ্ঠে নিচে র লেখাগুলো যেন প্রতিধ্বনিত হচ্ছে "ছোট খোকা বলে 'অ আ' / শেখেনি সে কথা কওয়া "——— ভাবতে লাগলাম গুরুদেব সহজ পাঠের মাধ্যমে কত সহজে ছবি আর ছড়ার মধ্যে দিয়ে আমাদের বর্ণ পরিচয় করাতে চেয়েছিলেন। ছোট বেলায় 'সহজপাঠ' কিম্বা ' 'হাট' কবিতা অথবা "বীরপুরুষ" কবিতাই রবি কবি কে অল্প অল্প করে কাছে থাকে।
এরপর ঘরের দেওয়ালে টাঙিয়ে রাখা বিশ্বকবির ছবি ভাবতে শেখায় উনি মানুষ না ভগবান। এমন দ্বিধাগ্রস্ত জীবনে ১লা বৈশাখ এলেই মনে মনে আনন্দ জাগে, এই তো এ মাসেই তো ঐ দেওয়ালে টাঙানো দেবতার জন্মদিন ।তার জন্য প্রস্ততি নিতে হবে লাগাতার প্রায় একমাস । এইসব দিনেই মনেপড়ে ছোটবেলা র বন্ধু মান্তার কথা। ওর ছিল অদম্য উৎসাহ। আমরা ছিলাম ওর সহকারি। প্রায় দিন পনেরো রিহার্সাল চলতো। আমাদের সব চেনা গানেই চলতো রিহার্স । কত কত, স্মৃতি আজও অমলিন । ন্যাড়া মাথায় জুঁই এর মালা কিম্বা প্রথম লাল পেড়ে সাদা শাড়ী পরার অনুভূতিতে রয়ে গেছো তুমি দাড়ি বুড়ো সহজ পাঠের মতোন সরল ভাবে।