Baishakhir Golpo

Drama Thriller Others

4.0  

Baishakhir Golpo

Drama Thriller Others

সৌন্দর্য

সৌন্দর্য

3 mins
328


"শ্রীপর্ণা এই পোশাকটায় তোকে ভালো লাগছে না। এটা চেঞ্জ করে আয়।"... বললেন শ্রীপর্ণার মা।


"কিযে বল ও মা!! আউটফিটে কত ভালো লাগছেে বলতো!'.. বলে শ্রীপর্ণা।

"আমার ভালো লাগছে না তুই চেঞ্জ করে আয়।"

মায়ের ধুমকিতে অনিচ্ছাসত্ত্বেও পোশাকটা ট্রায়াল রুুম থেকে চেঞ্জ করে এলো শ্রীপর্ণা। ওর মা বললেন." এই সালোয়ার-কামিজ ট্রাই কর ভাল লাগবে।"


মুুুখ বেজার করে সালোয়ার কামিজটা নিয়ে ট্রায়াল রুমে চলে যায় শ্রীপর্ণা। খুব রাগ হচ্ছিল মনেে মনে। মায়ের সাথে যতবারই শপিং করতে ততোবারই, নিজের পছন্দের পোশাক টা কেনাা হয়নি ওর। এবারও ঠিক তাই ঘটলো। খুব উৎসাহের সহিত একটা টাইট ফিটিং গেঞ্জি এবং জিন্সের প্যান্টট পড়ে ছিল শ্রীপর্ণা কিন্তু ওর মা; উনি পছন্দ করলেন সাদামাটা সালোয়ার কামিজ। 


"ধুুর ভালো লাগেনা!!এইজন্যেই বাবাকে বলেছিলাম আমাকে নিয়ে আসতে! আমি জানি মায়ের সঙ্গে এলে আমার পছন্দের পোশাক তা কোনোভাবেই কিনে দেবে না!"... মুখটা প্যাঁচার মতো করেই শপিং মল থেকে বেরিয়ে আসে শ্রীপর্ণা এবং ওর মা। "মা আমার খুব খিদে পেয়েছে।"...বলে শ্রীপর্ণা।


"কি খাবি!!!.."....বলেন মা।


"মা এবার কিন্তু আমি চিকেন স্যাটে আর চিকেন মাঞ্চুরিয়ান উইথ জিরা রাইস খাব।" মায়ের দিকে তাকিয়ে বলে শ্রীপর্ণা।

ওর মা বললেন

.." মাথাটা খারাপ হয়ে গেছে নাকি!কি সব উল্টোপাল্টা খাবারের নাম বলছিস!চিকেন স্যাটে!কোথাকার খাবার এ!! খিদে পেয়েছে ভালো খাবার খাাবি!উল্টোপাল্টা আমার কাছে আবদার করবিনা।"


মুুুখ বেজার করে মায়ের সাথে একটা হোটেলে  ঢোকে শ্রীপর্ণা। ওয়েটার এসে একটা লিস্ট ধরিয়ে দিলেন। বিভিন্ন রকমের খাবারের নাম লেখা সেখানে। শ্রীপর্ণার মনটা ছটফট করছিল একটুুুু অন্য রকম খাবার খাওয়ার জন্য কিন্তুুু ও জানে ওর মা যখন সঙ্গে আছেন তখন ওর মায়ের পছন্দ করা খাবার খাওয়া ছাড়া ওর কাছে আর কোন উপায় নেই।

অগত্যা মায়ের পছন্দ মত ভাত, ডাল, সবজি আর একটা বড় পাবদা মাছের ঝোল সহযোগে দুপুরের লাঞ্চ কমপ্লিট করল ওরা। ওইটার কাছে বিল মিটিয়ে হোটেল থেকে বেরোতে বেরোতে শ্রীপর্ণার মা বললেন.." এইবার বাড়ি যাবি তো!!"

শ্রীপর্ণা শুধু ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানায় মুখে কিছুুু বলে না।

" মা-মেয়ের শপিং হল না কি!! কি কিনলে এতক্ষণ ধরে!!".... বাড়ির মেইন গেটের তালা খুলতে খুলতে কথাটা বললেন শ্রীপর্ণার বাবা।

"বাপি তুমি চলে এসেছো!"... সহাস্যবদনে বাবার দিকে তাকিয়ে বলে শ্রীপর্ণা।

হ্যাঁ এই তো এসেছিি প্রায় আধঘন্টা মত হল। বাড়িতে ঢুকেই তো জানতে পারলাম তোরা মা-মেয়ে তে মিলে শপিং করতে গেছিস। আমাকে একটা ফোন করে দিতে পারটিস!আমিও তাদের সাথে জয়েন করতে পারতাম। আমাকে তো মঞ্জুরি বলল।"



(মঞ্জুরি শ্রীপর্ণাদের বাড়ির কাজে মাসি। বয়স প্রায় ষাটোর্ধ্বধ। ছেলেপুলে নেই শ্রীপর্ণাদের বাড়িতেই থাকেন।)


" আমি তো মাকে বলেছিলাম বাপিকে ফোন করো। মা তো বললো আজকে তুুুই আর আমি যাই। জানতো বাপি তোমাকে নিয়ে গেলেই ভালো হতো। মা আমাকে আমার পছন্দ মত কিছুু কিনে দেয়নি। এই দেখো".. বলে শ্রীপর্ণা।


"আমিতো জানি তোর মা ভীষণ ব্যাকডেটেড".. বললেন শ্রীপর্ণার বাবা।

ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে শ্রীপর্ণার মা বললেন

" মেয়ে কে বেশি করে আস্কারা দাও। আপডেট কথার মানে আমি ভালো করেই বুঝি। তোমার স্পর্ধা তে এই উল্টোপাল্টা পোশাকগুলো পড়তে পছন্দ্দ করে ও। আমি কেন ওকে বারন করি সময় মত ঠিক বুঝতে পারবে। পোশাক এর স্বচ্ছতা সবসময় ভালো কিন্তু তাই বলে নিজের সম্ভ্রম বজায় রাখা খুব জরুরী তোমার পরনের পোশাকটা যেন অন্যের জীবনে ধ্বংসের কারণ না হয়ে দাঁড়ায় সেদিকে লক্ষ্য রাখা উচিত।"

শ্রীপর্ণার মায়ের দিকে তাকিয়ে চুপ করে থাকলেন শ্রীপর্ণার বাবা। ঘর থেকে বেরিয়ে়ে এলেন মঞ্জুরি। শ্রীপর্ণাকে ছোট থেকে কোলে পিঠে করে বড় করেছেন উনি। মা ও মেয়ের কথোপকথন শুনে শ্রীপর্ণা কে বললেন মা যেটা বলেন সেটা শুনতে হয় ।তোমার মা কি তোমার খারাপ চান বলো! তোমার এখন উঠতি বয়়স!অনেক ভুল করবে!মা তোমাকে সঠিক পথ দেখাবেন!"

উঠতি বয়সী ছেলেমেয়েদের এধরনের কথা মোটেই ভাল লাগেনা! শপিং মলের ব্যাগটা হাতে নিয়ে ঘরে গিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয় শ্রীপর্ণা।


রাত প্রায় দশটা বাজে!! শ্রীপর্ণার মা শ্রীপর্ণাকে ডাক তে গেলেন।" শ্রীপর্ণা খাবি আয়। রাত হয়ে গেছে অনেক। সকালে তোর কলেজ আছে।"


বেশ কয়েকবার ডাকাডাকির পরও শ্রীপর্ণা দরজা খোলে না। শ্রীপর্ণার মা ব্যস্ত হয়ে় পড়েন।" কিগো মেয়ে দরজা খুলছে না এদিকে একটু এসো না!".. শ্রীপর্ণার বাবা বেশ কয়েকবার ডাকলেন। ব্যাপারটা বেগতিক লাগছে!!!দাঁড়াও আমি আশেপাশের লোকজনকে ডাকি দরজাটা ভাঙতে হবে!"...


এই বলে শ্রীপর্ণার বাবা আশেপাশের লোকজনকে ডাকার জন্যয ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন। মঞ্জুরি ঘরে শুয়ে ছিল।শ্রীপর্ণার মা-বাবার চিৎকার চেঁচামেচি শুনে ঘর থেকে বেরিয়ে এসে জিজ্ঞাসা করলেন "কি হয়েছে??"


শ্রীপর্ণা র মা কাঁদো কাঁদো গলায় বললেন.." দেখো না মাসি দরজা খুলছে না মেয়ে। ও একটা জিন্সের প্যান্ট আর একটা টাইপ টপ পছন্দ করেছিল।কিন্তু পোশাকটা ওকে একদম ভাল লাগছিল না! সেই কারনে আমি ওকে সেটা কিনতে দিইনি! আমি কি মা হয়ে ওর খারাপ চাই বলতো!

" না মা তুমি কেন ওর খারাপ চাইবা, তুমি তো মা?? কোন মা ই সন্তানের খারাপ চায়না। তুমি একটা কথা জানো তো.. কু সন্তান হতে পারে কিন্তু কুমাতা কখনোই নয়। সন্তানের পেট চালানোর জন্য যে মাতা বেঁচে থাকার অন্য উপায় বেছে নেয় সেও মা হয়।"

বললেন মঞ্জুরী। শ্রীপর্ণার বাবা বাবা পাড়ার লোকজন কে ডেকে এনে দরজা ভাঙতে লাগলেন।

একটা ভয়ঙ্কর শব্দ করে দরজাটা প্রায় ভেঙে গেল। দরজা খোলার পর দেখা গেল ওর ঘরে নেই। ব্যালকনি দিয়ে একটা কাপড় ঝুলছে। ওদের কারো বুঝতে বাকি রইল না শ্রীপর্ণা ব্যালকনি থেকে পালিয়েছে।

" ওমা তুই এটা কি করলি। একটা ড্রেস কিনে দিই নি বলে তুই পালিয়ে গেলি। কিগো আমার মেয়েকে এনে দাও যা বলবে আমি তাই শুনবো।" প্রলাপ গাইতে গাইতে কান্না শুরু করে দিলো শ্রীপর্ণার মা।

পাড়ার লোকজন মিলে শ্রীপর্ণার বাবাকে নিয়ে গেলেন থানায়। সেখানে সকলের বয়ানে থানার ইন্সপেক্টর শুভ্র নাথ একটা ডাইরি লিখল।" আপনারা চিন্তা করবেন না। আমি এক্ষুনি লোক নিয়ে খুঁজতে বের হচ্ছি আপনার মেয়েকে। আপনি শুধু বলুন আপনার মেয়ের কোন বন্ধু বান্ধব আছে কি না!! আপনি চেনেন কিনা বা তাদের ফোন নাম্বার আপনার কাছে আছে কিনা সেগুলো আমাকে দিবেন আমার লাগবে।"


শ্রীপর্ণার বাবার কাছে যতটুকু তথ্য জানাচ্ছিল সবটাই ফোনে জানিয়ে দিলেন থানার ইন্সপেক্টর কে।

হঠাৎ ফোন বেজে ওঠে।" হ্যালো নমস্কার হরিনগর থানা থেকে বলছি কে বলছেন!"...

" নমস্কার স্যার আমি শ্রীপর্ণা। আমাকে খোঁজার জন্য মা-বাবা আপনার কাছে গিয়ে থাকবন।আপনি ওদেরকে বলে দিন আমি বাড়ি ফিরব না। যেখানে বেক্তিগত স্বাধীনতা নেই সেখানে থাকার কোন মানে হয় না। আমি চলে যাচ্ছি আমার এক বন্ধুর বাড়ি।আপনাকে জানিয়ে রাখতে চাই ঠিকানা টা কোথায়! যদি কোনো অসুবিধা হয়, আপনি ওখান থেকে আমার নিয়ে আসবেন!যতই হোক আপনি থানার ইন্সপেক্টর! নাগরিকদের রক্ষা করা প্রশাসনিক কর্তাদের কর্তব্য তাই না!!"

শুভ্র ঠিক কি বলবে বুঝতে পারছিল না। এদিকে শ্রীপর্ণা কিন্তু ফোনটা ধরে আছে। শুভ্র শ্রীপর্ণার বাবার দিকে তাকিয়ে বলল." আপনি এখন বাড়ী যা আমি কথা দিচ্ছি আপনার মেয়েকে ঠিক খুঁজে বার করব।"

ঘাড় নেড়ে শ্রীপর্ণার বাবা থানা থেকে চলে গেলেন।

ওদিকে ফোনের ওপার থেকে শ্রীপর্ণার তীক্ষ্ণ কন্ঠস্বরটা ভেসে আসে.." এই মশাই!! আচ্ছা লোক তো আপনি!!আপনাকে যে বলছি ওদেরকে বলে দিতে, আপনি পারবেন না। জান আমি আপনাকে বলব না আমার ঠিকানা!! দেখি কি করে আপনি আমায় খুঁজে বার করেন।"..

শ্রীপর্ণা ফোনটা রাখতে যাবে আমি শুভ্র বলে ওঠে

" আপনার নাম যখন শ্রীপর্ণা তখন আপনি দেখতেও নিশ্চয়ই খুব রূপবতী। অত্যাধুনিকতার সাথে সাথেই আপনি খুব স্মার্ট ও বটে। কিন্তু ম্যাডাম আপনি ভুলে যাচ্ছেন এটা কলিকাল, বিজ্ঞানের কাল, প্রগতি এবং বিকাশের সময়। আপনি যেখান থেকে ফোন করছেন সেই জায়গার লোকেশন অলরেডি আমি ট্র্যাক করে ফেলেছি। আমার লোক গাড়ি নিয়ে রওনা দিয়েছে। আমি চাইলে এক্ষুনি আপনাকে ধরে থানায় নিয়ে আসতে পারি কিন্তু সেটা আমি করব না। আপনি যেখানে আছেন সেখানে এখন চুপ করে থাকবেন। ভয় নেই আমি আপনাকে নিয়ে আসছি। আপনার বাড়িতে নিয়ে যাব না; আপনার সমস্যাটা আগে শুনবো। তারপর সমাধান করার চেষ্টা করব।আমরা পুলিশ হতে পারি; প্রশাসনিক দায়-দায়িত্ব আমাদের আছে, নাগরিকদের লক্ষ্য রাখার দায়িত্ব আছে, তেমনি যদি আমাকে বন্ধু মনে করেন;আপনার সমস্যার সমাধানে কাজে লাগতে পারি।আপনি ওখানেই থাকবেন ম্যাডাম! আমি 10 মিনিটের মধ্যে যাচ্ছি।"... রাধেশ্যাম গাড়ি বার করো।

থানার গাড়িটা নিয়ে শুভ্র একাই রওনা দিল। বেশ খানিকটা দূর যাবার পরে একটা ফোন বুথের সামনে একাকিনী এক রমণীকে বসে থাকতে দেখে শুভ্র র চিনতে ভুল হলো না এটাই শ্রীপর্ণা।

"উঠে আসুন!!".. বলল শুভ্র।

"আপনি তো বিশাল বুদ্ধিমান!!কেমন করে বুঝলেন আমি শ্রীপর্ণা??"

"আরে আমি জাতি তে পুলিশ বুঝলেন! দূর থেকে দেখেই বুঝতে পারি অনেক কিছু। যেভাবে আপনি পুলিশকে নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরাচ্ছেন!! যাইহোক রাগ করবেন না জায়গাটা ভালো না উঠে পড়ুন!"

" বারে আপনিতো পুলিশ! জায়গা ভালো নয় তো কি হয়েছে?"

" এখন কি আমার চাকরির ট্রেনিং এর যাবতীয় নথিপত্র আপনাকে দেখাতে হবে নাকি। বলছি তো জায়গাটা ভালো না উঠে আসুন।"

কথা শেষ হতে না হতেই একদল ছেলে এসে শ্রীপর্ণার দিকে তাকিয়েই কু- মন্তব্য করতে থাকে। ওরা বারবার শ্রীপর্ণার বুকের দিকে তাকিয়ে আকার ইঙ্গিতে ভীষণ বাজে কথা বলতে থাকে। শ্রীপর্ণার পরনে ছিল একটা টপ এবং জিন্সের প্যান্ট। সে এই সব পোশাক পড়ে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। কিন্তু সমাজে এই সব পশু খেকো মানুষ গুলো এই পোশাক পরা মেয়ে গুলো কে সম্মান না দিয়ে তাদের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কে ভালো করে প্রত্যক্ষ করে বারবার কু মন্তব্যে কটাক্ষ করে।

ভীষণ অসহায় লাগছিল শ্রীপর্ণার। আধুনিক যুগের মেয়ে হলেও শ্রীপর্ণা কোন সময় বাড়ি থেকে বেরোবে না। ওর মা-বাবা কেউ না কেউ ওর সঙ্গে থাকত। কু মন্তব্যগুলোও শ্রীপর্ণার কানে বাজতে থাকে।

অভিমানী দৃষ্টিতে শুভ্রর দিকে তাকিয়ে শ্রীপর্ণা বলে

" পুলিশ হয়েও প্রতিবাদ কেন করছেন না কেন আপনি!!! এরা আমায় কি অসভ্য অসভ্য কথা বলছে।"

ছেলেগুলো পুলিশের গাড়ি দেখে চলে যায়। শুভ্র গাড়ি থেকে নেমে শ্রীপর্ণাকে বলে..." আমি যদি ভুল না হই তাহলে একটা কথাই বলবো তোমার পোশাকের স্বাচ্ছন্দ্যর জন্যই তুমি বাড়ি ত্যাগ করেছ!! আমার মনে হচ্ছে তোমার মা বাবা তোমার এসব পোশাক পরা পছন্দ করেন না!!"

শ্রীপর্ণা ভীষণ অবাক হয়। শুভ্রর দিকে তাকিয়ে সে বলে.." আপনি কি করে বুঝলেন!!"

" দেখো লজ্জা হল নারীর ভূষণ। আমি বলছিনা তুমি এসব পোশাক পরবে না। কিন্তু যে পোশাকে তোমাকে অশ্লীল মনে হয় সেই পোশাকটা না পরাই ভালো। মা বাবা এগুলো আগে বোঝেন। এখন সব মেয়েরা এসব পোশাক পরে। কাউকে মানায় কাউকে মানায় না। কিন্তু সবাই কি  সেটা শোনে?

 আমি সমাজে সেই সব মেয়েদের বিরুদ্ধে যাচ্ছি না। যে যেই পোশাক পড়ে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে সে অবশ্য সেই পোশাক টা পড়বে কিন্তু তাই বলে যে পোশাকটায় অশ্লীল মনে হয়, নারীর সৌন্দর্য্যহানি হয়; সেই পোশাক না পরাই ভালো।"

গাড়িতে উঠে বসে শ্রীপর্ণা। শুভ্রর সাথে একটাও কথা বলেনি সে। রাত পৌনে বারোটা নাগাদ শুভ্র শ্রীপর্ণাকে বাড়ি নিয়ে আসে। শ্রীপর্ণা যখন ওর বাড়িতে ঢোকে তখন দেখে ওর মা এবং বাবা ব্যালকনিতে বসে কান্নাকাটি করছেন। মেয়েকে দেখেই উনারা বলে ওঠেন..." কোথায় ছিলি মা!! আমার ভুল হয়ে গেছে রে বাবা!! তুই যা খুশি পড়তে পারিস, তোকে কোন পোশাক নিয়ে আমি বাধা দেব না। কিন্তু তাই বলে মা; তুই ঘর ছেড়ে চলে যাস না!"....

শ্রীপর্ণা কিছু না বলেই ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়ে।

শ্রীপর্ণার মা-বাবার শুভ্র কে ধন্যবাদ জানান।

ঘটনা আরো সাত দিন পর....

" ওমা মা!!আলমারী থেকে তোমার ওই নীল রংয়ের শাড়ি টা বের করে দাও না।".. বলে শ্রীপর্ণা।

" এদিকে ভূতের মুখে রাম নাম! ক'দিন ধরে লক্ষ্য করছি মেয়ের পোশাকে বেশ বদল এসেছে কি ব্যাপার!!" বলে শ্রীপর্ণার মা।

" আহ!! তুমি বার করে দেবে না আমি বার করে নেব"

.. বলে শ্রীপর্ণা।

" দিচ্ছি রে বাবা দিচ্ছি চল".. বলে শ্রীপর্ণার মা।

প্রায় আধঘন্টা পরে বাড়ির গেটের একটু সামনে হাত দশেক দূরে একটি ছেলে বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ছাদ থেকে দেখতে পেলেন শ্রীপর্ণার মা।

" মা আমি আসছি!".. এই বলে শ্রীপর্ণা আমাকে বিদায় জানিয়ে কলেজে যাওয়ার জন্য রওনা হল।

তড়িঘড়ি করে শ্রীপর্ণার মা ছাদে উঠে দেখলেন; সেই ছেলেটি আর কেউ নয় সে থানার বড়বাবু শুভ্র! যে বাইক নিয়ে তার মেয়ের জন্য অপেক্ষা করছে। শ্রীপর্ণা সেই বাইকে বসা ছেলেটির সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।

" দেখতো কেমন লাগছে!".. বলে শ্রীপর্ণা।

" এ আমি কাকে দেখছি!!!এ তো স্বর্গের অপ্সরা!".. বলে শুভ্র।

শ্রীপর্ণার পিঠে একটা চাপড় মেরে বাইকে উঠে বসে। পিছন দিকে তাকিয়ে কি মনে হয়  শ্রীপর্ণা র...ছাদের দিকে লক্ষ্য করে। ও দেখে ওর মা সহাস্যবদনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। শ্রীপর্ণা মুচকি হেসে মায়ের দিকে হাত তুলে টা টা জানায়।......

একটা লম্বা নিঃশ্বাস নিয়ে দুগ্গা দুগ্গা বলে প্রণাম করেন শ্রীপর্ণা র মা।...

"একজন নারী সবসময়ই সৌন্দর্যের অধিকারী। নারী সৃষ্টির উৎস। সৌন্দর্যতা নারীর প্রত্যেকটি অঙ্গে অঙ্গে বিদ্যমান। কিন্তু তাকে এমন হতে হবে যাতে পুরুষ জাতি তাকে দেখে নতজানু মস্তকে বলে "মা আমার মেয়ে আমার"....                      

                             সমাপ্ত



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Drama