Bijaya Ghosh

Crime Drama

2  

Bijaya Ghosh

Crime Drama

পাশবিক

পাশবিক

2 mins
11.8K


ট্যাক্সি ধরলাম অফিসের সামনে থেকে। ক্লান্ত তাই উঠেই শরীরটা এলিয়ে দিলাম। অনেক রাত হয়ে গেল আজ। ড্রাইভারের সিটের পিছনে লেখা ট্যাক্সির নম্বরটা চোখে পড়লো। চমকে উঠলাম।বুকের ভিতরটা ঢিপ ঢিপ করছে। কিন্তু সাহস হারালে চলবে না। মোবাইলটা বের করে সন্তর্পনে ডায়াল করলাম নম্বরটা।

"মণি, মনে হচ্ছে খবর পাওয়া যাবে । উল্টোডাঙার মোড়ে থাকিস। মিনিট কুড়ির মধ্যে পৌছে যাব। "

মনে পড়ছে রুমালীর মুখটা। বহুতল আবাসনের একটা ফ্লাটে থাকি।

একেবারে নিচের তলায় থাকে দারোয়ান । তার অনেকগুলো মেয়ের মধ্যে রুমালী

একটা। লিফটে চড়ে উপর নিচ করাটা ওর প্রিয় খেলা ছিল। গত সপ্তাহে হটাৎ লিফটের মধ্যে অজ্ঞান হয়ে যায় মেয়েটা।

ডাক্তার দেখাবার কথা বলাতে আপত্তি করে ওর বাবা। এমনকি বিনা পয়সার সরকারী হাসপাতালে পাঠাতেও নারাজ । " আমদের ডাক্তার আছে , তিনিই পরীক্ষা করবেন। আপনাদের সাহায্যের দরকার নেই " বেশ কাটা কাটা শব্দে উত্তর দিয়েছিলো ওর বাবা।

দারিদ্রের অহংকার ! কিন্তু কোন মা বাবা তার সন্তানের অসুখে বিচলিত হয় না? অবাক হয়েছিলাম একটু।

দুদিন পর লিফটের কাছে রুমালীকে দেখে কাছে ডাকলাম।

" তোর্ কি হয়েছিল রে ? সেদিন অজ্ঞান হয়ে গেলি ?"

"কিছু না। ইনজেকশন দিলে এরকম হয়।"

" ইনজেকশন ? কেন?"


" সুন্দর হতে গেলেতো সবাইকে ইনজেকশন নিতে হয়।"

রুমালীকে ভালো করে দেখি। মেয়েটা যেন কদিনেই অনেকটা বড় হয়ে গেছে।

"সবাইকে?"

" শুধু মা বাবা বাদ।

"সে কিরে ! সুন্দর হবার ইঞ্জেকশনও বেরিয়ে গেছে! একটা ইনজেকশন আমায় দেখাতে পারিস?"

পরদিন রুমালী একটা শিশির দেখায় । লেবেল দেখে চমকে উঠি। পশু চিকিৎসায় ব্যবহৃত হরমোন !

সন্দেহ দানা বাধে।সুযোগ পেলেই মেয়েগুলোর ছবি তুলি।

পাশের ফ্লাটের ঠাকুমা থাকেন একলা সারা দুপুর। মেয়েগুলোর সাথে ওর সখ্যতাও আছে। দুপুরটা উনি বারান্দায় বসে কাটান। ওকে বলি রুমালির উপর দৃষ্টি রাখতে। কিন্তু দুদিন পরেই পুরো পরিবার নিখোঁজ।

ট্যাক্সির নম্বর ঠাকুমাই টুকে রেখে ছিলেন।

বন্ধু মণিদীপা সাংবাদিক। ওকে বললাম। বলল " থানায় জানালে কাজ হবে না - হাতে নাতে ধরতে হবে।"

মণিদীপার আসতে দেরি হবে। তাই ট্যাক্সিওলাকে এদিক ওদিক ঘুরতে বলে সময়টা কাটাই।

উল্টোডাঙার মুখে ট্যাক্সিতে উঠে এলো মনিদীপা। উঠেই ট্যাক্সি ড্রাইভারকে শুরু করলো জেরা করা। মোবাইল-ক্যামেরায় তোলা রুমালীদের ছবি দেখিয়ে জানতে চাইল দুদিন আগে

এদেরকে সে কোথায় নিয়ে গিয়েছিল।

ঘন্টা দুই পরে ট্যাক্সিটা এসে দাড়ায় এক খ্যাতনামা ব্যবসায়ীর বাড়ি। পরদিন বর্তমানে ছাপা হয় চাঞ্চল্যকরদশ বছরের অবোধ শিশুকে দিয়ে যৌন বাণিজ্য। নাবালিকাকে হরমোন ইনজেকশন দিয়ে বয়ঃ সন্ধি ঘটানোর অভিযোগে ধৃত অভিজাত ডাক্তার দম্পতি ।


Rate this content
Log in

More bengali story from Bijaya Ghosh

Similar bengali story from Crime