নীলিমা
নীলিমা


মাসে একবার করে ডেটে গিয়ে বেশ কিছুটা সময় কাটানোর পর, পরের দিন ও তার রেশটা থেকে যায়---প্রত্যুষ চ্যাটার্জির।সকাল টাতে চোখ খুললেই মনে হয় এককাপ চা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে নীলা ওঁর সামনে।আর তখন একটানে নীলাকে কাছে টানতে গিয়ে দু দুবার চাকর মন্টুকে টেনেছে হাত ধরে আর পরক্ষণেই ভুল বুঝতে পেরে লাল হয়েছে লজ্জায়৷
আজ সকালে এইরকম একটা ঘটনা ঘটতে যাচ্ছিলোই কিন্তু মন্টু একটা নীলখাম দিল প্রত্যুষ কে।তাই এই যাত্রা সে বেঁচে গেল।
চা টা খেয়ে প্রত্যুষ একটা সিগারেট বের করে ব্যালকনিতে গেল৷চারপাশটা আজ দারুণ লাগছে ।গতকাল অনেকটা সময় কাটিয়েছে সে নীলার সাথে।অনেক আদর ,অনেক অনেক ভালোবাসার আদান -প্রদান ঘটেছে কাল।আজ তাঁর মেজাজটা ফুরফুরে ।
সিগারেট শেষ করে ঘরে নীল খামের থেকে চিঠিটা বের করে দেখল তাতে লেখা আছে------
বাবলান,
আজ একবছর ধরে যে প্রশ্নটা তুমি করে চলেছ তার উত্তর দিতে আমি সহজে পারিনি।আজ মনে হয় উত্তর দেবার সময় হয়েছে।কাল রাত থেকেই আমি
ও তুমি দুজনেই এটা অনুভব করেছি বলে আমার ধারনা ।তোমাকে ছেড়ে আর থাকা সম্ভব নয় আমার ।আমি তোমার প্রশ্নের উত্তরের জন্য তৈরি।
কিন্তু আমার বিষয়ে কতগুলো কথা জানানোর দরকার তোমাকে ---
আচ্ছা ক্লাস ফোরে তোমার পিছনের বেঞ্চে বসা নীলমণি কে মনে পড়ে ? যাকে সারা বছর রং পেন্সিল দিতে ড্রইং ক্লাসে। একদিন ভুল করে রং আনেনি বলে টিচার তাকে বাইরে বের করে দিলেন ।তাই দেখে তুমি কেঁদেছিলে আর পরের দিন থেকে সে কিন্তু রং আনলেও বের করতো না কারণ তোমার দেওয়া রংটা সে ভালবাসত বলে।
তারপর তোমার বাবার বদলীর চাকরি বলে তোমরা চলে গেলে এখান থেকে।নীলমণির কাছে ঐ রংগুলো থেকে গেল।
বয়স সন্ধিক্ষণে কিছু পরিবর্তন আসে সকলের শরীরে । মা আর বাবার সাহায্যে আজ আমি ইন্সপেক্টর নীলিমা রায়।
আমাকে তোমার সহধর্মিনী করতে আর কত সময় নেবে জানিও।প্রমাণ হিসাবে রং-পেন্সিল গুলো পাঠালাম।
ইতি
তোমার নীলা
চিঠিটা পড়ে আর রং গুলো হাতে নিয়ে প্রত্যুষ চমকে উঠল ।