মাতৃত্বের সুখ
মাতৃত্বের সুখ


শাহানা মধ্য বয়সী একজন বিধবা।
তার স্বামী মারা গেছে দশ বছর পূর্বে। তার স্বামী মারা যাওয়ার পর সে আর বিয়ে করে নি।
সে এখন একটা অনাথ আশ্রম চালায়।
তার কোন সন্তান নেই কিন্তু সে মা হতে চেয়েছিলো,
তাই সে অনাথ আশ্রমের বাচ্চা দের লালন পালন করে বড় করে মাতৃত্বের সুখ নিতে চায়।
তারপর সে অনাথ আশ্রম খোলে।
নিজের মনের কষ্ট গুলো ভুলে যাওয়ার জন্য একটা অনাথ আশ্রম খুলে ছোট ছোট বাচ্চা দের সুন্দর করে লালন পালন করে বড় করতে থাকে।
অনাথ আশ্রমের বাচ্চারা শাহানা কে মা বলে ডাকে। এতে শাহানা অনেক শান্তি পায়।
তার অনাথ আশ্রমে ১০-১২ টা বাচ্চা রয়েছে।
খুব যত্ন করে সব বাচ্চা দের বড় করছে।
সে তার আশ্রমের বাচ্চা দের নিয়ে প্রতিদিন বেড়াতে যায় পার্কে।
প্রতিদিনের মত আজকেও আশ্রমের বাচ্চা দের নিয়ে পার্কে ঘুরতে আসে শাহানা।
অনেক সময় পার্কে থাকার পর ওর সহকর্মীকে শাহানা বলে
বাচ্চাদের আশ্রমে নিয়ে যেতে।
ওর বাজারে কিছু কাজ আছে।
বাজারে হেঁটেই যাচ্ছিলো শাহানা।
তখন মনে হয় সন্ধ্যা ৬টা বাজে।
শাহানা তখন বাজারের কাছাকাছি হঠাৎ একটা ছোট বাচ্চার কান্নার আওয়াজ পায় শাহানা।
শুনে মনে হলো কোন সদ্য জাত বাচ্চার কান্নার আওয়াজ।
শাহানা এদিক ওদিক তাকায় কিচ্ছু খুঁজে পায় না।
রাস্তায় তখন তেমন মানুষজন ছিলো না।
তারপর শাহানা খেয়াল করলো পাশেই একটা ময়লার ডাস্টবিন থেকে আওয়াজ আসছে
শাহানা দৌড়ে ডাস্টবিনের কাছে গিয়ে দেখে একটা ফুটফুটে সদ্যজাত মেয়ে বাচ্চা সাদা কাপড়ে জড়ানো ময়লার স্তুপের ওপর।
শাহানা তা দেখে সাথে সাথে বাচ্চা টিকে কোলে তুলে নেয়।
বাচ্চা টিকে দেখে শাহানার খুব মায়া হলো।
আশেপাশে তখন কেউই ছিলো না তেমন। তাই সে কোনকিছু না ভেবে বাচ্চা টিকে নিজের আশ্রমে নিয়ে আসে।
বাচ্চা টিকে নিজের মত করে বড় করতে থাকে শাহানা।
মেয়েটার নাম দেয় মুন্নি।
নিজের সন্তানের মত করে বড্ড আদর যত্নে বড় করতে থাকে মুন্নিকে।
এভাবে দিন যায় মাস যায় বছর যায়
বড় হতে থাকে মুন্নি।
দীর্ঘ ২৫ বছর কেটে গেলো,
মুন্নি এখন ২৪ বছরের যুবতী।
সে শাহানা কে খুবই ভালোবাসে,
শাহানা কখনো মুন্নিকে বুঝতে দেয়নি মুন্নি তার নিজের সন্তান নয়।
মুন্নি এখন পড়াশোনা করে ও ছোটখাটো একটা চাকরী করে এবং ওর মা শাহানার আশ্রম দেখে।
শাহানার বয়স হয়েছে তাই আশ্রমের সব দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছে মুন্নি, মাকে কিচ্ছু করতে দেয় না।
শাহানাকে মুন্নি জান দিয়ে ভালোবাসে।
অন্য বাচ্চারা সবাই বড় হয়ে শুরু করেছে নিজেদের জীবন।
কিন্তু তারাও শাহানাকে খুব ভালোবাসে,
সবসময় খোঁজ খবর রাখে শাহানার।
কিন্তু শুধু মুন্নি শাহানার সাথে আছে।
মুন্নি শাহানাকে কে খুব যত্ন করে ও খুব ভালোবাসে।
মুন্নিকে নিয়েই শাহানা পায় তার আসল মাতৃত্বের সুখ।
এখন মুন্নি হলো শাহানার সুখের দুনিয়া।