জলছবি
জলছবি


বিকেলের লাল আভা ছড়িয়ে পড়েছে আকাশ জুড়ে। ক্যানভাসে তুলির টান দিতে সে বললে, ওই গাছ আর ফুল দেবে না রে। আমার একটা ছবি আঁক না।
দেখলাম তাকে। নয়-দশ হবে। পরনে আধময়লা ফ্রক। মাথায় না আঁচড়ানো ঝাকরা চুল। বেশ কথা বলে। বললে, ড্যাবড্যাবিয়ে কি দেখছিস। মেয়েছেলে দেখিস নাই।
- কি নাম তোর?
- সখি।
- বা! বেশ সুন্দর নাম তো।
- সুন্দর না হাতি।
- পড়াশোনা করিস।.....কি রে বললি না।
- না।
- সারাদিন কি করিস।
কথা শেষ হল না। সে ছুটল। ফুটপাতের ওপর তার সঙ্গীরা খেলছিল। ট্রাফিক সিগন্যাল লাল হতে একটা বিয়ের গাড়ি এসে থামল। নববধূর পরনে লাল শাড়ি। মাথায় ফুলের মুকুট। জানলার কাঁচে তার চোখ। একবার সে ওই ন্যাড়া গাছটাকে দেখল। সিগন্যাল সবুজ হতে বিয়ের গাড়ি রাস্তা পার করে। পাশে একটা স্ট্যাচু। কার মূর্তি তার হয়তো জানা নেই। রঙ ওঠা হাতের চুরিগুলো সে নাড়াচাড়া করে। একটু আনমনা সে। সন্ধ্যের আলো আঁধারে বিয়ের গাড়ির ড্রাইভারের মতো মূর্তিটাকে দেখাচ্ছে। সে ভেংচি কাটে। গাড়ির কাঁচে মুখ দিতে ড্রাইভার বারন করছিল। হেডলাইটের আলোয় সখির দুচোখে জ্বলজ্বল করছে নববধূর সাজ।
একটা লোক আধখাওয়া খাবারের একটা প্যাকেট ছুড়ে ফেললে বাকি ছেলে মেয়েরা ছুটল।
সে এসে বললে, বাড়ি যাবি না। রাত হয়েছে। রাতে কারা সব আসে।.....বউটার মতো সুন্দর একটা ছবি এঁকে দিবি।