STORYMIRROR

Sayantani Samanta

Tragedy Inspirational Others

3  

Sayantani Samanta

Tragedy Inspirational Others

এক বেশ্যার মনের গোপনে

এক বেশ্যার মনের গোপনে

9 mins
810

জায়গা সম্পত্তি নিয়ে মারপিট দেখেছি , আধিকার সম্মান নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখেছি, ধর্ম ভেদাভেদ নিয়ে দাঙ্গা দেখেছি কিন্তু আজ শরীর নিয়ে মারপিট প্রথম দেখলাম!এখানে শরীরের অসীম খিদে মেটাতে অনেকেই আসে।আর যাঁদের মধ্যে আমিই হলাম শিকারির হরিণ!এই বেশ্যাপল্লিতে আমাকে রোজ নিলামে তোলা হয়। রোজ নানা দাম ওঠে আমার ; তবে যে বেশি দাম দেয় সেইই পায় আমাকে ভোগ করতে। না না আমাকে নয় পঞ্চভুতের সৃষ্ট শরীরকে, কারণ মন যে আমি কাউকেই দিতে পারবো না শুধু সে ছাড়া!


হ্যাঁ ঠিকই ধরেছেন আমি একজন বেশ্যা। না না শুধু বেশ্যা না কমবয়সী রূপবতী অহংকারী উচ্চদরের বেশ্যা!আমার রূপে ঝলসে যাবে না এমন লোক খুবই কম আছেন। আমার কম বয়স বলে রাত্রে বিছানা গরম করতেও বেশ মজা পায় নরকের কীট গুলো।আর আমি হলাম অহংকারী কারণ আমার রুপ আছে যার মাধ্যমে সক্কলকেই নিজের বশে করতে পারি।।

রোজই আমার দাম পঁচিশ হাজারেরও বেশি ওঠে।তাই এখানকার প্রধান রাধা মাসির পেয়ারের মুন্নি আমি।।



আমার আসল নাম শ্রেয়সী ,না আমার কোনও পদবি নেই।আসলে আমার মা তো নিজেই জানে না কার সঙ্গে একরাত্রের সঙ্গমে আমি আসলাম মায়ের কোলে!


আমার মা ও ছিলেন এই বেশ্যালয়ের নামকরা বেশ্যা।আমার মাকে পাওয়ার জন্য রোজ কত না কুকুর আসতো তা ধারণার বাইরে!তবে মা কে নিলামে তোলা হত না।মা নিজেই সুষ্ঠ সবল সক্ষম পুরুষকে বেছে নিতেন।।ঠিক একিই রকম কোনও পুরুষের ভোগপন্য হয়ে উঠেছিলেন তিনি, তার পরই আমি আসি।। রাধা মাসি চেয়েছিলেন এই অপয়া বাচ্চাকে মেরে ফেলতে কারণ এতে যে মায়ের রূপ নষ্ট হত!শরীরের গঠন ভেঙে যেতো! কিন্তু পারেনি শুধুমাত্র আমার রূপবতী মায়ের দাপটে।কারণ মা চেয়েছিলেন আমি ওনার কোল জুড়ে আসি এই সংসারে, এই নরকতুল্য জীবনে কিছুটা সুখ খুঁজতে চেয়েছিলেন।কিন্তু কখনোই চাননি আমার ওপর এই নরকের ছায়া পড়ুক! তাই আমার জন্মের পড়েই আমি থাকতাম এক অনাথ আশ্রমে।ওখানকার সকল বাচ্চাদের মতোই আমিও জানতাম যে আমার পরিবার মা বাবা কেউ নেই।তবে একটা মহিলা নিজেকে ঘোমটার আড়ালে রেখে আমার সাথে দেখা করতে আসতেন।একদিন আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম,"কে হন আপনি আমার?" 

উনি তখন বলেছিলেন,"তোমার রক্ত আমার রক্ত দুটোই এক।"

তখন বুঝিনি কি বলেছিলেন, পরে একটু বড় হয়ে বুঝলাম উনি আমার মা! আমি ওনাকে মা বলে ডাকতেই উনি আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ছিলেন।আমিও কেঁদেছি , জিজ্ঞাসা করেছি কেন এখানে রেখেছেন আমাকে? আমার তো মা আছে তাহলে আমাকে আপনার কাছে নিয়ে চলুন।আমি এখানে থাকতে চাই না।

উনি কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলেন,"না রে মিঠি এ হয় না।সবার আড়ালে তোকে মানুষের মতো মানুষ করছি এটা জানলে লোকে টাকা দেবে না রে। আর যেটা এখন দরকার তোকে মানুষ করতে।"

আমি চুপচাপ সব কথা মেনে নিয়েছিলাম।খুব কষ্ট হয়েছিল নিজের মায়ের মুখে এইসব শুনে।অভিমান করেছিলাম! কয়েকদিন পড়ে আমাকে যখন হস্টেলে ভর্তি করলেন নিজের পরিচয় লুকিয়ে তখন বেশ শ্লেষের সঙ্গেই বলেছিলাম,"যখন মেয়ের দায়িত্বই নিতে পারবেন না।তখন আমার মুখে মা ডাক শুনতেও আসবেন না।"

ব্যাস তখন থেকে মা ডাক বন্ধ করে দিয়ে আপনি করে ডাকা শুরু করলাম।দেখি নি আপনার সজল নয়ন দুটো।নইলে আপনার কষ্ট বুঝতাম!

পড়ে জানলাম সেদিন আপনি পরিচয় লুকিয়েছিলেন কারণ আপনি ছিলেন একজন বেশ্যা!যদি কেউ চিনে যায় তখন তো আমাকে পড়াবেই না!


ধীরে ধীরে বড় হতে লাগলাম।আপনি আসতেন প্রতি মাসে একবার করে, আর এসে মাস মাহিনা দিয়ে আমাকে কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস দিয়েই চলে যেতেন।সারাদিন পড়াশোনা নিয়েই থাকতাম,,কারণ আমি ছিলাম ফার্স্ট গার্ল!যে সব সময় বইতে মুখ গুঁজে থাকে।এভাবেই দিন কাটছিল আমার।ফের একদিন মাধ্যমিকে সব বিষয়ে লেটার নিয়ে উঠলাম ক্লাস ইলেভেন।।এখানেই দেখা হল বাবাইয়ের সাথে।আগে পড়তাম গার্লস স্কুলে এখন ছেলে মেয়ে একসাথে।।বাবাই পড়াশোনায় খুব ভালো না আবার খুব খারাপ ছিল না।কিন্ত ওর মধ্যে যে চরিত্র ছিল যে বিচক্ষনতা ছিল তা সকলকেই ওর দিকে আকর্ষণ করতো।আর আমার বেলাতেও তাইই হলো,, আমিও ওর প্রতি আকর্ষিত হয়ে গেলাম।।বাবাইও আমাকে পছন্দ করতো এটা জানলাম ধীরে ধীরে,,দুজনেই কাছাকাছি আসা শুরু করলাম।একে অপরকে মন দিয়ে দিলাম অজান্তেই।।

তারপর শুরু হল আমাদের প্রেমলীলা ভুলেই গেছিলাম আমার জন্য কেউ আসেন এই হস্টেলে দেখা করতে!অথচ বাবাইয়ের সাথে দিনে একবার দেখা না করলে আমার ঘুম উড়ে যায়! ধীরে ধীরে উচ্চ মাধ্যমিক সামনে এলো ভালো রেজাল্টও করলাম।তবে বাবাইয়ের রেজাল্ট ভালো হলো না। এতে ও কেমন যেন গুমরে যেতে লাগলো। আমার সাথে সময় কাটানোও বেশি বন্ধ করে দিলো।যা কথা না বললেই নয় এমন কথাই বলতে লাগলো।।

আমার সত্যিই খুব কষ্ট হল তাই ওর বাড়িতেই একেবারে চলে গেলাম।বাবাইয়ের বাড়িতে কেউ ছিল না শুধু ও ছাড়া।।আমাকে ওর ঘরে নিয়ে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো,,আমি একটু ভয় পেয়ে জিজ্ঞাসা করলাম,"দরজা দেওয়া কি খুব জরুরি ছিলো? "


"তাহলে আমি দরজা খুলে দিচ্ছি।" বেশ অভিমানী স্বরে বলল বাবাই।।


"না না ঠিক আছে তোমার ভালো লাগলেই হলো।।" আমি মিষ্টি হেসে বললাম।।

বাবাই অদ্ভুত ভাবে হেসে আমার খুব কাছে এসে আমার টপের ভিতরে পেটে হাত দিয়ে আলতো করে চাপ দিতেই আমি ওকে জাপটে জড়িয়ে ধরলাম,,,

"আমার সাথে এই কদিন কথা বলো নি কেন তুমি?"


"কেন আমার পাগলির কি রাগ হয়েছে?"


"না হয়নি , তবে তুমি তো জানো তোমাকে না দেখলে না কথা বললে আমার ঘুম উড়ে যায়।আর তুমিই কিনা আমাকে এড়িয়ে যাচ্ছিলে!"


"আচ্ছা আর করবো না।বাড়িতে বকাবকি করছিলো আমার এই রেজাল্টের জন্য।তাই মনমেজাজ ভালো ছিল না।।"


"একবার ভুল হয়েছে পরের বার থেকে নিশ্চই তুমি খুব ভালো রেজাল্ট করবে দেখবে!"


"আজ বাড়িতে কেউ নেই আর আজ কেউ আসবে না।তোমার হস্টেলেও আজ তেমন কোনো ম্যাম আসেন নি।তাই আজ একটু কাছে এসো না।"


আমার শরীর বেয়ে কথাটা শোনার পরে শীতল স্রোত বয়ে গেলো।আসলে বাবাইয়ের বাবা হস্টেলের হেড টিচার আর ওনার বাড়ি হস্টেলের পাশেই, তাই অনেকেই আসা যাওয়া করে।এখানে আসতে কোনও পেরমিশন নিতে হয় না।।আমি লাজুক লাজুক মুখ করে মাথা নীচু করে হ্যাঁসুচক মাথা নাড়লাম।।



আর সাথে সাথে বাবাই হিংস্র কুকুরের মতো ঝাঁপিয়ে পড়লো আমার শরীরের ওপর। ছিঁড়ে খেতে লাগলো আমায়।আমার চোখ থেকে যে গাল বেয়ে জল পড়ছে সেটা ওর চোখেই গেলো না। ও শুধু আমার শরীরকে চরম মাত্রায় উপভোগ করতে লাগলো । অথচ ও তো আমার চোখে এক ফোঁটা জলটাও সহ্য করতে পারতো না!তাহলে আজ কি হলো!


সঙ্গম শেষে আমি নিজেকে দেখেই চমকে গেলাম সারা বিছানায় রক্তের দাগ,,আমার পুরো শরীরে কামড়ের দাগ আর নখের আঁচড়ের ক্ষত।।

আমি যাই হোক করে শরীর টেনে টেনে ফ্রকটা পড়ে নিলাম।।

বাবাই আমার কাছে এসে আমার চুল টেনে দাঁত চেপে বলল,"বেরিয়ে যা আমার ঘর থেকে অপয়া!কে তুই আমার বাড়িতে কি করছিস!বেরিয়ে যা বলছি।।"


আমি ওর দিকে হাঁ করে চেয়ে রইলাম।কি বলছে বাবাই!এ তো আমার সেই পুরনো বাবাই নয়!এ কোন বাবাই!আমি কার ছলাকলায় পা দিলাম! নিজেকে বোঝাতে লাগলাম এটা হতে পারে না বাবাই আমাকে ভালোবেসে এইসব বলছে কিন্তু মন বলতে লাগলো না এটা ভালোবাসা নয় এটা পৈশাচিকতার প্রকাশ!


বাবাই আমার ঘাড় ধরে দরজা দিয়ে বাইরে ফেলে দিয়ে বলল,"আর কোনও দিনও আমার সাথে দেখা বা কথা বলতে আসবি না।যদি আসিস তবে তোকে ওখানেই শেষ করে ফেলবো।বেরিয়ে যা!"


আমি কাঁদতে কাঁদতে বললাম,

"কি হয়েছে তোমার বাবাই?আমাকে এমন করছো কেন!আমি তো তোমায় ভালোবাসি আর তুমিও তো...."


আমাকে কথা বলতে না দিয়েই বাবাই বলল,,

"কে আমার ভালোবাসা?তুইই....!হা হা হা হা (বিকট হাসি হেসে) তোর মতো মেয়েরা শুধু আমার বিছানা গরম করতেই পারবে আমাকে সুখ দিতে না!তোর না আছে পরিবার আর না আছে সম্পত্তি।তুই আমার ভালোবাসা তো দূর পায়ের ধুলো হওয়ার যোগ্যটুকুও নস।।"

আমি আর পারলাম না কথাগুলো শুনতে,,আমার মাথা ঘুরতে লাগলো শরীরে এই অসহ্য নির্যাতনের পরে অসহ্য ব্যাথা হতে লাগলো।আমি কাঁদতে কাঁদতেই নদীর ধারের পথ ধরলাম।।নিজের অজান্তেই এক রাক্ষসের কাছে নিজের এতো দিনের কুমারীত্ব হারালাম! 

ঠিক করেছিলাম আর হস্টেল ফিরবো না নিজেকে শেষ করে দেবো।কি করে এই মুখ নিয়ে হস্টেল ফিরবো? যেখানে চার দেওয়ালের মধ্যে বন্দি থাকতে হয় সারাক্ষণ।ওখানের থাকলেই তো বাবাইয়ের কথা মনে পড়বে, এর থেকে আমার মতো অপয়া কুলক্ষনা মেয়ের মরে যাওয়াই ভালো! 

এই ভেবে নদীর জলে ঝাঁপ দিতে যাবো শুনতে পেলাম আমারই এক বান্ধবীর গলা।সেদিকে তাকিয়ে দেখলাম সে ছুটতে ছুটতে আসছে আমার দিকে।।আমার কাছে এসে হাফাতে হাফাতে বলে,"তুই এখানে! আর সেদিকে তোকে খোঁজার জন্য তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে।।"


"হঠাৎ আমার খোঁজ পড়ল কেন?"


"তুই তাড়াতাড়ি চল হস্টেল ওখানে দুজন তোকে আনতে এসেছে তোকে নিয়ে যাবে বলে।।"


"কিন্তু কেন!"


"এখানেই সব প্রশ্ন সেরে নিবি?হস্টেল চল ওখানে দরকার তোকে।"

আমি চোখের জল মুছে ওর সাথে হস্টেল গিয়ে দেখি একটা মধ্যবয়স্কা শাড়ী ঘাঘরা করে পড়ে আর সঙ্গে মোটা মোটা সোনার হার গয়না।।ওনার পাশে আর একটা ছেলে দাঁড়িয়ে এই ছাব্বিশ সাতাশ বয়স হবে দেখতেই একটা গুন্ডা গুন্ডা রকমের।

আমাকে দেখেই মধ্যবয়স্কা বললেন,

"আমরা তোমাকে নিয়ে যেতে এসেছি শ্রেয়সী।তোমার মায়ের শরীর খুব খারাপ তোমায় দেখতে চেয়েছে তাই তোমায় নিয়ে এলাম।।"


আমি ওনাকে মা বলে না ডাকলেও ওনার প্রতি মনের কোণে একটা কোমল স্থান ছিল, তাই আর বিলম্বিত না করেই পাকাপাকি ভাবে ওখান থেকে চলে এলাম ওনারা আমাকে যেখানে নিয়ে এলেন।।


ওখানে ঢুকতেই দেখি সকলেই কেমন যেন ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছে, না না ভুল বললাম!আমার দিকে না আমার সূক্ষ্মভাবে তৈরি শরীরের দিকে । যেন প্রত্যেকটা অংশ মেপে মেপে নিচ্ছে!

ওনারা আমাকে একটা ঘরে নিয়ে গেলেন যেখানে বিছানায় ফুল ছড়ানো মদের বোতল পড়ে আছে আর কিছু অন্তর্বাস পড়ে আছে।।

আমি নাক সিটকে জিজ্ঞাসা করলাম,

"আমার মা কই?"


"তোর মা চার দিন হলো মারা গেছে।আর তোর মা ছাড়া তো এই ব্যবসায় পুরো লস হচ্ছে আমার।তখনই মন্টু তোর ছবি দেখিয়ে বলল,' এটা ওর মেয়ে,একেই আনলে তো ব্যবসায় জোয়ার আসবে।'

তাই তো তোকেই আনলাম জলদি।আর বেশি কথা বাড়াস না এক্ষুনি কাস্টমার আসবে।।ওই টুসি একে সাজিয়ে দে।।"

আমি কিছু বলারই সুযোগ পেলাম না।একটা মেয়ে এসে আমাকে পাতলা সিন্থেটিক শাড়ী যার মাধ্যমে শরীরের অর্ধেক খাঁজ স্পষ্ট স্লীভলেস ব্লাউজ সাথে খোলা চুলে রজনীগন্ধা ঠোঁটে গাঢ় লিপস্টিক ও চোখে কাজল।।আমাকে খাটে বসিয়ে বলল,

"এখানে বসে থাকবে কিন্তু!কিছুক্ষনের মধ্যেই উনি এসে যাবেন।।"


"কে আসবেন?"


"দাড়াও না এখনই আসলে বুঝবে।।"

মুচকি হেসেই চলে গেলো মেয়েটা।আমি বাধ্য মেয়ের মতো বসে রইলাম,,সকালে বাবাইয়ের নির্যাতন অপমান লাঞ্ছনা প্রতারণার জন্য কিছুই ভালো লাগছিলো না।আবার এরা এখানে একা বসিয়ে দুয়ে চলে গেলো মনের মধ্যে একটা ভয় কাজ করছে।যদি কিছু খারাপ ঘটে আমার সাথে!


কিছুক্ষন পরে একটা মধ্যবয়স্ক লোক মদ খেতে খেতে হাতে রজনীগন্ধার মালা জড়িয়ে ভিতরে টলতে টলতে এসে বলল,

"কি ফুলটুসি আজ তোমায় নতুন দেখছি!"


আমি একটু জড়োসড়ো হয়ে বসলাম।লোকটা আমার কাছে এসে আমার বুকে জোরে খামচে বলল,

"আহঃ এ যে নতুন এক্কেবারে খাঁটি মাল তো!আজ তোকে নিয়েই সারারাত মজা করবো।"


আমি কেঁদে ফেললাম,

"আমার সাথে এরম করবেন না।আমি কি ক্ষতি করেছি আপনার?দয়া করে ছেড়ে দিন আমায়!"


লোকটা কোনও কথা না শুনে জোর করে আমাকে বিছানায় ফেলে দিয়ে দুহাত দিয়ে চেপে ধরে শরীরের যেখানে সেখানে কামড়াতে লাগলো।আমি প্রাণপণ চেষ্টা করতে লাগলাম কিন্তু পারলাম না শেষে চেচাতে লাগলাম।কিন্তু কেউ এলো না!

তাই বলির পাঁঠার মতো বাচার কোনও উপায় না পেয়ে বেশ্যার মৃত্যুদন্ড মাথা পেতে নিলাম।কারণ এই বেশ্যা জীবনের সাথে জড়িত তারা প্রতি দিন প্রতি রাতে মৃত্যুর সাথে দেখা করে!তাঁদের শরীর থাকতে হয় থাকে শুধু লালসা দেখানোর জন্য।কিন্তু তাদের মন মরে যায় কবেই!



পরের দিন নিজেকে ঠিক সেই একিই অবস্থায় দেখে চমকে যাওয়ার বদলে মনে হলো ভগবানকেই প্রশ্ন ছুড়ে দিই,,যে কেন আমাকে এই নরকের জীবন দিলো?যেখানে শুধুই কষ্ট দুঃখ?


নিজের অবশ শরীর নিয়ে বাথরুমে গিয়ে শাওয়ার চালিয়ে কাঁদতে লাগলাম।যাতে আমার কান্নার আওয়াজ কেউ শুনতে না পায়!আর পেলেও কেউ আসবে না এটা আমি জেনে গেছিলাম গত রাত্রেই।।


বাইরে বেরিয়ে দেখি একটা কুর্তি রাখা আছে।ওটা পড়ে নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে নীচে গিয়ে ওই মধ্যবয়স্কার ঘরে ঢুকতে যাবো শুনতে পেলাম,

"মাসি কাল কাস্টমার খুব খুশি হয়েছে।এমন ভরা যৌবনের মেয়েটাকে পেয়ে।"


"হুম রে মন্টু,,আমাদের ভালোই লাভ করে বিদায় নিয়েছে মোহিনী।এমন মেয়ে জন্ম দিয়ে তো আমাদের ব্যাবসায় জোয়ার আনার ব্যবস্থা করেছে।"


আমি থমকে গেলাম তার মানে আমার মা মোহিনী একজন বেশ্যা?তাই সে লুকিয়ে থাকতো? তারমানে আমি এক বেশ্যার মেয়ে!

এটা শোনার পরে একছুটে ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে বিছানায় লুটিয়ে পড়ে অনেকক্ষন কাঁদলাম।আমার জীবন নরকে পরিণত হয়েছে এই ভেবে!!

কাঁদতে কাঁদতেই কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম জানি না যখন ঘুম থেকে উঠলাম সামনে রাধা মাসি হাতে শাড়ী নিয়ে আর পাশে কিছু মেয়ে দাঁড়িয়ে,,

রাধা মাসি লাল হয়ে যাওয়া দাঁত নিয়ে হেসে বলল,

"তৈরি হয়ে নে আজ বড় বাবু এসেছেন তোকে নিয়ে একটু রাত্রে নেশা করবে বলে।।"

আমি সময় দেখলাম রাত্রি নটা, আয়নায় নিজেকে দেখলাম ভালো করে... চোখের জল শুকিয়ে গেছে কালি পড়ে গেছে আঁচড়ের দাগ গত রাত্রের সিগারেটের ছ্যাঁকা। নিজেকে দেখে নিজের মনেই হেসে বললাম,"দাও আজ আমি নিজেই তৈরি হবো।আর চিন্তা করো না বাবুর নেশা আজ একটু বেশিই হবে।তাই রাত্রে ওনাকে বাড়ি পাঠানোর জন্য ব্যবস্থা রেখো!"




হ্যাঁ মেনে নিয়েছিলাম এই জীবনকে যেটা এখন আমার নিত্যসঙ্গী। কারণ বুঝেছিলাম আমি চাইলেও পালাতে বা বাচতে পারবো না এখান থেকে।।আর এই নরকের জীবন থেকে বেরিয়ে সভ্য সমাজে গেলেও আমি যে ভালো করে বাচতে পারবো না এটা আমি অনেক আগেই বুঝেছি।তাই ভাগ্যের লিখন মেনে নিয়েছি!

এখন যাই ডাক পড়লো যে আমার, আবার নতুন কাস্টমার!এখন আর কলম চালালে হবে না।এখন শরীরের খেলায় মাততে হবে!আবার যদি সময় পাই আমার অতীত নাহয় তুলে ধরবো এই গোপন কলমে



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Tragedy