Avik Koley

Comedy Horror

4.0  

Avik Koley

Comedy Horror

ভয় পাওয়া ভয়ঙ্কর

ভয় পাওয়া ভয়ঙ্কর

3 mins
290



আজ থেকে বেশ কয়েক বছর আগের কথা। আমি তখন ক্লাস নাইন এ পড়ি । সপ্তাহের প্রায় পাঁচ দিন রাতে কোচিং ক্লাস থাকতো।

আমার পাঁচজন বন্ধু একসাথে পড়তে যেতাম। আমি,রতন, অমিত, অর্জুন, আর বিকাশ।

এরকমই একদিন রাতে স্যারের শরীর খারাপ থাকায় । স্যার সেদিন আর পড়াননি।

বাড়ি ফিরে আসার সময় অমিত বলল "এত তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরবো কেন? চল আজ একটু এদিক ওদিক ঘুরে আসি"।

বিকাশ বলল "এই সন্ধের সময় কোথায় ঘুরতে যাবি রে? তার চেয়ে চল বাড়ি ফিরে যাই"।

অমিত বলল "এত তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরবো না।সেইতো গিয়ে আবার পড়তে বসতে হবে।"

তার চেয়ে চল ওই ইটভাটায় গিয়ে আড্ডা মেরে তারপর বরং বাড়ি যাবো।

এবার রতন বলল "তোরা আবার ইট ভাঁটার দিকে যাবি? না বাবা আমি শুনেছি যে রাতের বেলা জায়গাটার অনেক বদনাম আছে।

কথাটা শেষ করার পর অমিত বলে উঠল "থাক তোকে আর যেতে হবেনা। "

"তুই একটা ভীতুর ডিম।তুই বরং বাড়ি গিয়ে ঘুমোগে যা।"

শেষ অবধি সকলেই যেতে রাজি হয়ে গেলাম। সাইকেলে চেপে গল্প করতে করতে আমরা পাঁচজন চললাম ইটভাটার দিকে।

আমাদের তিনজন বন্ধু বেশ অনেকটা এগিয়ে গেছে। আমি আর অর্জুন পিছিয়ে পড়েছি গল্প করতে করতে।

জোরে সাইকেল চালাতে লাগলাম ওদের কাছে পৌঁছনোর জন্যে .......

এর মধ্যে আমরা অনেকটা পথ চলে এসেছি।

রতনই বলল "আরে আমরা গল্প করতে করতে তো অনেকটা পথ চলে এসেছি রে বাড়ি ফিরব কখন?"

অর্জুন বললো কিন্তু ইটভাটা।আমি বললাম "গুলিমার তোর ইটভাটা তে।"

অর্জুন জিগ্যেস করল কটা বাজছে বলত? কিন্তু আমাদের কারোর কাছেই কোন ঘড়িও ছিল না আর কোন মোবাইল ও নেই।তাই ঠিক কটা বাজছে তা বলা কঠিন ।

আমি বললাম ধারে কাছে তো কোনো দোকান পাট কিছুই চোখে পড়ছে না !

হটাৎ অর্জুন বলল ঐ দেখ দূরে মাঠের মধ্যে একটা আলো দেখা যাচ্ছে।

অমিত বললো ওদিকে তো ছোট বেলতলার শ্মশান। মনে হয় কোন মড়া এসেছে বোধহয়। বোধহয় তার দাহকার্য চলছে।

তারমানে আমরা অনেকটা রাস্তা চলে এসেছি প্রায় ৪-৫ কিলোমিটার। আমিই বললাম চল সবাই ফিরে যাই।এতটা পথ যেতে হবে আবার।

সবে আমরা সাইকেল গুলো ঘুরিয়েছি।এমন সময় হঠাৎই একটা বিশাল ঝড় উঠল। ঝড়ের এত বেগ যে সাইকেল নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতেই পারছিনা ।

বহু কষ্টে কিছুটা যাবার পর হটাৎ ই বিকাশের সাইকেলের চেনটা পড়ে গেল । চেন লাগাতে গিয়ে আরো কিছুক্ষণ সময় নষ্ট হল ।

ততক্ষনে ঝড়টা থেমে গেছে।ঝড়টা এসেছিল যেমন আচমকা থেমেও গেল সেই ভাবে।চারদিক কি রকম নিস্তব্ধ।চারিদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার আর অন্ধকার।

কি রকম একটা ভয় ভয় করছিল আমাদের।কি যেন একটা হতে চলেছে।অনুভব করতে পারছি কিন্তু স্পর্শ করতে পারছি না।

ধীরে ধীরে অন্ধকারের মধ্যে আমরা পাঁচজন একসাথে এগোতে লাগলাম আমাদের গ্রামের দিকে।

আমি সবার সামনেই ছিলাম। হঠাৎই দূরে তাকাতেই দেখলাম কে যেন একটা সাদা কাপড় পরে দাঁড়িয়ে আছে ।

একটু ভয় ভয় করছে । সাইকেলটা আস্তে করে পিছন দিকে তাকাতেই দেখি আমার বাকি বন্ধুরা আমার থেকে বেশ অনেকটা পিছনে রয়েছে। 

ইসারায় ওদের সকল কে ডেকে দেখালাম । অমিত দেখে ভয়ে আমার হাতটা টেনে ধরল ।

আমার এবার ভয়ে গোটা গা দিয়ে ঠান্ডা জল বেরোতে থাকল ।

রতন একটু সাহসি ছিল । ও ওই ভুত প্রেত এ বিশ্বাস করত না ।

রতন বলল "আরে ও সব কিছুই নেই সব তোদের মনের ভুল । চল তোদের যেতে হবেনা আমিই আগে যাচ্ছি দেখি কে ওটা ।"

অর্জুন বলল "যা তুই তারপর তোর..."

রতন এগোতে লাগল । আমরাও ওর পিছন পিছন যেতে লাগলাম ।...

সাদা কাপড়ের কাছা কাছি গিয়ে টর্চ টা জ্বেলে দেখলাম যে রাস্তার পাশে জমিতে ওটা একটা কাকতারুয়া ।

সাদা কাপড় জড়িয়ে রাখা, মাথায় একটা কালো হাঁড়ি তাতে চুন দিয়ে দুটো চোখ আঁকা যা কিনা হালকা চাঁদের আলোয় চক চক করছিল ।



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Comedy