Sanghamitra Roychowdhury

Romance Classics Inspirational

4.5  

Sanghamitra Roychowdhury

Romance Classics Inspirational

অমৃত যাপন

অমৃত যাপন

7 mins
770


অমৃত যাপন

(সংঘমিত্রা রায়চৌধুরী)

--------------------------------


শুক্লা অষ্টমীর আকাশের চাঁদ তারা ঢেকে খুব ঘন মেঘ করেছিলো, বিদ্যুৎও চমকাচ্ছিলো ঘনঘন... দেখেই শুতে এসেছিলো অংশুমান। রাত প্রায় আড়াইটেয়। পেইন্টিংটা রাতেই শেষ করার চাপ ছিলো। অন্যদিন অবশ্য অম্বিকাও জেগে থাকে যতক্ষণ অংশুমান কাজ করে স্টুডিওতে। স্টুডিও বলতে ওদের ফ্ল্যাটের উত্তরের ঘরটা। বেশ ছোটই। তবুও ইন্টিরিয়র ডিজাইনার অম্বিকা খুব কায়দা করে প্ল্যানিং করে সাজিয়ে দিয়েছে অংশুমানের স্টুডিওটা। এতো সুন্দর হয়েছে! কাজ করার ইচ্ছেটাই কোটি গুণ বেড়ে গেছে। মাঝে একবার হতাশায় ডুবে গিয়েছিলো অংশুমান। অম্বিকা তখন ওকে নিজের সঙ্গে জড়িয়ে নিয়ে ঠেকনা দিয়ে অপরাজিতা লতার মতো সোজা দাঁড় করিয়ে রেখেছিলো। অবশ্য শিল্পীদের জীবনে এমন ওঠাপড়া লেগেই থাকে। যোগ্য সহমর্মী দরকার হয়। পেইন্টিংটা ইজেলসমেত ডাইনিং হলে দাঁড় করিয়ে রেখে অংশুমান শুতে এসে দেখে অম্বিকা ওর বালিশটাকে জড়িয়ে কেমন কুঁকড়ে-মুকড়ে শুয়ে রয়েছে। গভীর ঘুমে কাদা। দূর আকাশে বিদ্যুতের চমক জানালার কাঁচের ওপার থেকে মাঝে মাঝে ওদের বিছানায় এসে পড়ছে। ভারি বৃষ্টি হবে। এসিটা বন্ধ করে জানালাগুলো খুলে ঘরের নীলচে আভার রাতবাতিটাও নিভিয়ে দিলো অংশুমান। অম্বিকার মুখে এসে পড়লো একবার বিদ্যুৎ চমকের উজ্জ্বল আলো। আলতো করে বালিশটা টেনে অংশুমান শুতেই অম্বিকা অংশুমানকে জড়িয়ে ধরলো। অম্বিকা ঘুমের মধ্যেও যেন অংশুমানের গায়ের গন্ধ পায়। ঠোঁটের কোণে হেসে অংশুমানও অম্বিকার মাথাটা নিজের রোমশ চওড়া পুরুষালি বুকে টেনে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়বার আগেই দেখতে পেলো দেওয়াল ঘড়ির ফ্লোরেসেন্ট আলোমাখা সময়... রাত তিনটে।


অম্বিকা ঠেলাঠেলি করে জাগালো অংশুমানকে, "অংশু, অংশু, আমার অংশু... আই লাভ ইউ সো মাচ, অংশু। তোকে ছাড়া বাঁচার কথা ভাবতেই পারি না। তুই আমাদের অ্যানিভার্সারির জন্য এই পেইন্টিংটা কখন করলি? লুকিয়ে লুকিয়ে? সত্যিই অংশু এবারে আমাদের মাঝখানে একজন আসবে? ছোট্ট মিষ্টি একটা গোলুমোলু? কী সুন্দর করে তোর কল্পনায় রং ভরেছিস। আমাকে ভরেছিস। আমাদের ভরেছিস। বাস্তবের আকাশ দেখবে তো অংশু আমাদের এই রঙিন স্বপ্নটা?" অংশুমান কনুইয়ে ভর দিয়ে বসে অম্বিকার উচ্ছ্বাস উপভোগ করছিলো এতোক্ষণ। এবারে হাত বাড়িয়ে অম্বিকার কোমর জড়িয়ে টেনে নিলো নিজের বুকে। তারপর ওদের কিং সাইজ মখমলি বিছানায় টেকটোনিক প্লেট নড়েচড়ে উঠলো, ভূমিকম্প হলো, সুনামি হলো, সুপার সাইক্লোন হলো... ভালোবাসাবাসিতে অমন হয়। ওদের এক হওয়ার দিনের বর্ষপূর্তিতে ওরা বাঁধভাঙা। এই প্রথমবার ওরা প্রভাতী আলোর কিরণ গায়ে মেখে মিলিত হলো। ঘামে ভেজা দুজনের শরীর সূর্যের আলোয় চকচক করছে। মিলনক্লান্ত অম্বিকা অংশুমানের বুকে মিশিয়ে রেখেছে নিজেকে। অংশুমান মৃদুস্বরে অম্বিকার কানের লতিতে ঠোঁট ছুঁইয়ে বলে, "সে আসবে, নিশ্চয়ই আসবে। দেখবি সে এসে আমাদের স্বপ্ন সাকার করবে। আমাদের জীবন পূর্ণ করবে।"



দুজন ব্যস্ত মানুষের সংসার। দুজনে হাতে হাত লাগিয়ে সবটা সামলায়। কিন্তু মাঝখানে একটা ছোট্ট প্রাণ এলে অনভিজ্ঞ ওরা দুজন... মানে অংশুমান আর অম্বিকা সামলাতে পারবে তো? তবে উপায় ওরা ভেবেই নিয়েছে। ওরা একজন বয়স্কা অভিজ্ঞ আয়া রাখবে। সেই বাচ্চাটার দেখভাল করবে। চেনাজানা একজন ক্লায়েন্টের মাধ্যমে অংশুমান তেমন একজন মধ্যবয়স্কা ভদ্রমহিলার সন্ধান পেলো। রীতিমতো ইন্টারভিউ করে তাকে বহাল করে নিলো দিনরাতের জন্য। সবসময় থাকবে... সেও পিছুটানহীন। কাজটা পেয়ে তার সুবিধাই হলো। আর ভদ্রমহিলাকে পেয়ে অংশুমান আর অম্বিকাও নিশ্চিন্ত হলো। এবারে তাদের স্বপ্নের গোলুমোলুকে আনতে আর কোনো বাধাই নেই। দুজনেই দুজনের কাজের চাপ সামলে আজ বিকেলে রওনা হলো গাড়ি নিয়ে। অংশুমান ড্রাইভিং সিটে। পাশে অম্বিকা। উত্তেজনায় তোতলাচ্ছে অম্বিকা, "ওওর না-নাম ক্বী রাখবিরে?" অংশুমান কাঁধ ঝাঁকালো। তার মানেটা, "এখনও ভাবিনি!" অম্বিকা স্টিয়ারিং-এর ওপরে অংশুমানের হাতে আলতো চাপ দিলো, "আমি ভেবেছি... আমানত... তোর আমার মানে আমাদের সবার আমানত।" অংশুমান অম্বিকার হাতে ফেরত দিলো মৃদু চাপের আশ্বাস। আজ তাদের সংসারে আমানত আসছে। ভাবনার মাঝেই ওদের গাড়িটা এসেছে "স্বাধিকার অরফ্যানেজ হোম"-এর গেটের সামনে। দারোয়ান এসে গেট খুলে দিয়েছে। গাড়ি পার্ক করে অংশুমান আর অম্বিকা গাড়ি থেকে নেমে হোমের অফিসের দিকে এগিয়ে গেলো। আগেই ফোন করে জানিয়ে রেখেছিলো অংশুমান। দারোয়ানের মুখে শুনেই বেরিয়ে এসেছেন হোমের কেয়ারটেকার ভদ্রমহিলা। অম্বিকা অংশুমানকে অনুসরণ করে হোমের অফিসের দিকে এগোলো। সাদর অভ্যর্থনা জানালেন হোমের ম্যানেজার ভদ্রলোক।



সবই আগে থেকেই কথাবার্তা বলে নির্ধারিত করা ছিলো। আপাতত এখন শুধু কাগুজে নিয়ম-কানুন পালন করে ওদের স্বপ্নের সেই অমৃতের সন্তানকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া। আগেই এসে একদিন অম্বিকা আর অংশুমান সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো আমানতকে নিয়ে যাবার। ছোট্ট তুলোর পুতুলের মতো আমানত। হোমে অবশ্য শিশুটি রিন্টু নামে পরিচিত। তবে এবার রিন্টু পরিবার পাচ্ছে... নাম পাচ্ছে... পরিচয় পাচ্ছে। এখন ওর নাম আমানত। অংশুমান আর অম্বিকার আমানত। অংশুমান আর অম্বিকা আজকাল আর পদবী ব্যবহার করে না। অংশুমান শিল্পী... চিত্রকর ও ভাস্কর। ওটাই তার পরিচয়। আর অম্বিকাও আজকাল আর পদবীর ধার ধারে না। ওর ইন্টিরিয়র ডিজাইনিং কোম্পানির নাম অম্বিকার গৃহকোণ। ওতেই গড়ে উঠেছে অম্বিকার পরিচয়। আত্মপরিচয়। সুতরাং অংশুমান আর অম্বিকা আমানতকে সেভাবেই মানুষ করবে... যাতে আমানতও একদিন নিজেই নিজের পরিচয় গড়ে নিতে পারে। অম্বিকা সাদা তোয়ালে দিয়ে মোড়া আমানতকে নিজের বুকের কাছে সযত্নে জড়িয়ে বসলো গাড়িতে। কাগজপত্রের ফাইল নিয়ে অংশুমান গাড়িতে রেখে স্টার্ট দিলো গাড়িতে। আমানত আরামে ঘুমোচ্ছে অম্বিকার উষ্ণতা ভরা কোলে। আজ ওরা পূর্ণ হলো। অংশুমান আর অম্বিকার মাঝখানে এক শক্তপোক্ত সেতুবন্ধন হলো... ওদের আমানতের আগমনে।



আয়ামাসী অম্বিকার কোল থেকে আমানতকে নিয়ে স্নেহভরা গলায় বলে, "ডাকনাম কী রাখলে গো? ছেলে না মেয়ে?" অংশুমান আর অম্বিকা মুহূর্ত মাত্র বিলম্ব না করে দুজনেই একসাথে বলে, "শিশুর আবার লিঙ্গ কী? শিশু তো শিশুই... শিশু শুধুই এক সন্তান! ওর নাম আমানত! আমাদের আমানত। ওর কোনো লিঙ্গ নেই। ও তৃতীয় লিঙ্গ।" আয়ামাসী তাকিয়ে আছে বিস্ফারিত চোখে। এরা কেমন মানুষ? যাদের ঘরে তৃতীয় লিঙ্গের সন্তান জন্মায় তারা তো আপদ বলে টান মেরে ফেলে বিদায় করে... আর এরা কত যত্ন করে এমন শিশুকে নিজেদের করে ঘরে নিয়ে এলো?" আয়ামাসীর চোখ ছলছল। সেই কত বছর আগে "হিজড়ে বিয়োনো"র অপরাধে স্বামীর সংসার থেকে বিতাড়িত। তারপর তো ঠোক্কর খেতে খেতে, উঞ্ছবৃত্তি করতে করতে, এঘাট সেঘাট ঘুরে ঘুরে... তবে না এই আয়ামাসীর কাজে। তাওতো অনেকবছর। তার পেটেরটাকে কোলে তুলে নেবার জন্য যদি এদের মতো কোনো দেবতা উদয় হতো তখন। বুকের সবখানি ওম দিয়ে আয়ামাসী বুকে জড়িয়ে ধরে আমানতকে। এযে তারও আমানত... নিজের সন্তানকে রক্ষা করতে না পারার কিছুটা প্রায়শ্চিত্ত যদি হয় আমানতকে যত্নআত্তি করে বড়ো করে তোলায়। আমানতের সঙ্গে সঙ্গে অংশুমান আর অম্বিকা একজন বয়োজ্যেষ্ঠা সদস্য পেলো ওদের স্বপ্নের সংসারে। দিনরাত এক করে আয়ামাসী বুকে করে বড়ো করছে আমানতকে। আর দিনরাত এক করে অংশুমান আর অম্বিকা পারিবারিক উপার্জন বাড়াচ্ছে। সেরার থেকে সেরা করে তাদের আদরের আমানতকে মানুষ করে তুলতে টাকা যে বড়ো বেশি প্রয়োজন। আমানতের গায়ে আঁচটি পর্যন্ত ওরা লাগতে দেবে না। কী পারিবারিক আর কী সামাজিক!



আমানতের জন্মদিনে গত তিনবছর ধরে ওরা দুঃস্থ শিশুদের জন্য কিছু করতে চেষ্টা করে... নিজেদের নাম গোপন রেখে বিভিন্ন এনজিও বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে। আমানতকে এবার স্কুলে ভর্তি করা হবে। ফর্ম ফিলাপ তো হলো অনেক ঝড়ঝঞ্ঝা পার করে। আমানতকে নিয়ে আর ওর বার্থ সার্টিফিকেট ও ফিজিক্যাল ফিটনেস সার্টিফিকেট নিয়ে অংশুমান আর অম্বিকা হাজির হলো নির্দিষ্ট দিনে স্কুলে ভর্তির ইন্টারভিউতে। একসময় ডাক পড়লো ওদের। আমানতকে বিশেষ কিছু জিজ্ঞেস করেনি স্কুলের সিলেকশন কমিটি। অংশুমান ও অম্বিকার দিকে তাকিয়ে ঐ স্কুলের প্রিন্সিপাল ম্যাডাম জানতে চান, "আমানতের মা কোথায়? মা'কে দেখছি না তো! আর আপনাদের মধ্যে আমানতের বাবা কে? আই মিন কোনজন?" অংশুমান কিছু বলতে যাচ্ছিলো, অম্বিকা হাত নেড়ে থামিয়ে দিলো অংশুমানকে, "ম্যাম, অ্যাকচুয়ালি উই বোথ আর দ্য পেরেন্টস অফ আমানত। আমরা কেউই ওর বাবা বা মা নই... আই মিন বায়োলজিক্যাল বাবা বা মা নই। আমরা আমানতকে অ্যাডপ্ট করেছি। সমস্ত আইনি নিয়ম-কানুন মেনেই দত্তক নেওয়া হয়েছে আমানতকে। এবারে আসি আমাদের কথায়। উনি অংশুমান... পিতৃদত্ত নাম অংশুমান ভট্টাচার্য্য। আর আমি অম্বিকা... পিতৃদত্ত না অম্বিকাপ্রসাদ সেনগুপ্ত। দুজনেই আর্ট কলেজে একসাথে পড়তাম। বিভাগটা যদিও আলাদা ছিলো। অংশুমান পুরুষ শরীরের রহস্য খুঁজতো। ওর তুলি ক্যানভাসে ফোটাতো পুরুষের শরীরের পেশির খাঁজ, সিংহের মতো কোমর, চওড়া লোমশ বুক। ওর আঙুলের ছোঁয়ায় ওর ভাস্কর্যের পুরুষ দেহগুলো প্রাণ পেতো। অংশুমান শিহরিত হতো দশভূজার মূর্তি তৈরির সময়ে অসুরের নির্মাণে, কার্তিকের অবয়ব গঠনে, গণেশের অঙ্গুলির বিভঙ্গ প্রদানে। অংশুমান একদিন আমাতে আকৃষ্ট হলো। আমিও হলাম। আমরা নারীশরীরে আকর্ষণ বোধ করি না। আমরা দুজনেই সমকামী... আমরা 'গে'! জানাজানি তো হয়েই গেলো। আমরা পরিবারের কাছে, সমাজের কাছে অস্পৃশ্য অচ্ছ্যুত ব্রাত্য হয়ে গেলাম। অংশুমানের নিষ্ঠাবান ব্রাহ্মণ পরিবার অংশুমানের এই অনাচারী আচরণ মেনে নেয়নি। অংশুমান বাড়ি থেকে বিতাড়িত হলো। আর আমার উচ্চশিক্ষিত সম্ভ্রান্ত আধুনিকতার বুলি কপচানো পরিবারও মেনে নেয়নি অম্বিকাপ্রসাদ সেনগুপ্ত নামের মাদুলি গলায় ঝুলিয়ে আমি মেয়েলি হয়ে থাকবো, কানে দুল পরবো, নিয়মিত পার্লারে যাবো, বা নিজে একজন পুরুষ মানুষ হয়েও একটা মুশকো জোয়ান ছেলের প্রেমে আর শরীরে হাবুডুবু খাবো। কেউ মানতে পারলো না। নিজের রাস্তা নিজে দেখে নেওয়ার হুকুম পেলাম। তারপর শুরু হলো এক অন্য লড়াই। না, আমি সেক্স চেঞ্জের অপারেশন করিনি। কারণ আমরা বিশ্বাস করি প্রেম ভালোবাসা মনের গভীরেই হয়... শরীরটা একটা মাধ্যম মাত্র।" একদমে একটানা কথাগুলো বলে থামলো অম্বিকা। প্রিন্সিপাল ম্যাডামসহ পুরো সিলেকশন কমিটির মেম্বাররা অবাক বিস্ময়ে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে। 



কোনো লজ্জা, সংকোচ, জড়তা... কিচ্ছু নেই ওদের মধ্যে। সততার সঙ্গে মাথা উঁচু করে বাঁচার শপথ নিয়েছে অংশুমান আর অম্বিকা। ওরা যেমন ওরা তেমনই থাকতে চায়। দীর্ঘ লড়াই চালিয়েছে এলজিবিটি গোষ্ঠী। ওরাও সামিল ছিলো লড়াইয়ে। অবশেষে এলজিবিটি গোষ্ঠীর জিত হয়েছে। ওদের দাবী পূরণ হয়েছে। আইন ব্যবস্থা থেকে ৩৭৭ ধারার অবলুপ্তি হয়েছে। আর সমকামীরা পেয়েছে নিজের মনের মানুষের সাথে গাঁটছড়া বাঁধার স্বাধীনতা। এই আইন প্রনয়নের পরেই অংশুমান আর অম্বিকা আইনি জটিলতা কাটিয়ে সংসার পেতেছিলো। ওদের সেই সংসার পাতার দিনটি ওরা বেছেছিলো দেশের স্বাধীনতা দিবসের দিনে। এর থেকে পুণ্যের দিন ওদের কাছে আর কিছু হতে পারে না... দেশের স্বাধীনতা আর ওদের জীবনযাপনের স্বাধীনতা দুইই স্মরণীয় করে রাখতে। অংশুমানের সেই বিশেষ পেইন্টিংটা বিক্রি হয়ে গেছে। অম্বিকা ওটার শিরোনাম দিয়েছিলো "অমৃত যাপন"... ক্যানভাসের উপরে দুটি পুরুষ শরীর মুখোমুখি, আর তাদের মাঝখানে এক পরিত্যক্ত শিশু লিঙ্গবিহীন, শিশুটির অবিচ্ছিন্ন নাভিরজ্জু দুদিকে ভাগ হয়ে পুরুষদুটির নাভিমূলে গিয়ে মিশেছে। দুই পুরুষেরই একচোখে মাতৃস্নেহ, অপরচোখে পিতৃস্নেহ। শিশুটির দুচোখে শুধু স্নেহের কাঙালিপনা। এইতো অংশুমান আর অম্বিকার জীবন, ওদের অমৃত যাপন... আমানতকে ঘিরে।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance