আশ্রিতা
আশ্রিতা


রঞ্জনবাবুর বাড়ির ড্রইংরুমটা গল্পে মুখর হয়ে উঠেছে। সপরিবারে সুবিনয়বাবু এসেছেন , ছেলে আদিত্যর বিয়ের সম্বন্ধ নিয়ে রঞ্জনবাবুর ছোট মেয়ে সুমির জন্য। আলোচনার মাঝে সুমি হঠাৎ চিৎকার করে উঠল-
- না । রেখার সাথে আদিত্যর বিয়ে হতে পারে না। ও আমার দিদি নয়, এ বাড়ির আশ্রিতা।
তারপর ছুটে নিজের ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিল।
এরপর কয়েকটা ঘন্টা কেটে গেল। নার্সিংহোমের বেডে শুয়ে আছে সুমি। হাতের শিরা কেটে সুইসাইড করার চেষ্টা করেছিল। তার জন্য 'ও' নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত পাওয়া যাচ্ছেনা। বাবা- মা কারোর রক্তই ম্যাচ করেনি। এবার রেখার টেস্ট হবে।
ঘটল এক আশ্চর্য ঘটনা বাবা-মার রক্ত করেনি অথচ রেখার রক্ত ম্যাচ করেছে।
সবাই অবাক হয়ে রঞ্জনবাবুর দিকে তাকিয়ে আছে এবং তিনি বললেন
- সদ্যোজাত সুমিকে নিয়ে পাঁচ বছর বয়সি রেখা এসেছিল কাজের খোঁজে। তাদের কোন সন্তান না থাকায় এই দুই বোনকে নিজের মেয়ের মতো মানুষ করেছেন তারা। ওরা কেউই এবাড়ির সন্তান নয়।
ইতিমধ্যেই সুমীর জ্ঞান ফিরেছে রেখার রক্তে । তারপর সব কথা শুনল। কিন্তু রেখাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। হঠাৎ বাইরে কোলাহল শোনা গেল। একটা 23-24 বছর বয়সী মেয়ে নার্সিংহোমের কাছেই রোড এক্সিডেন্টে স্পটডেথ হয়েছে। তাকে এই নার্সিংহোমে আনা হয়েছে।
ঘটনাটা বুঝতে কারো বাকি রইল না।
নার্সিংহোমের কেবিনে সুমি আরেকবার চিৎকার করে উঠলো-
- দিদি , ফিরে আয় । শুধু তুই না আমিও এবাড়ির আশ্রিতা।