টেরাকোটা
টেরাকোটা
রঙের মিস্ত্রি নরেশ আজকাল টোটোও চালায়।
সেদিন নরেশের কাজ হয়নি তখনও শেষ,
কথা ছিলো যে ওর টোটোতেই
বান্ধবী দোলা বাড়িতে ফিরবে বেশ।
সন্ধ্যে হতে তো বাকি ছিলো তখনো খানিকটা,
ততক্ষণে হয়তো শেষ হবে ওর কাজটা।
ভেবেছিলাম প্লাস্টার বিহীন পাঁচিলের রঙটা,
হবে যেন অনেকটা আগেকার দিনের টেরাকোটা।
কিন্তু সকলে সহমত না হলে যা হয়,
কেউ বলে রঙটা যেন লাল না হয়,
কেউ বলে দেখতে চোখে যেন,
ক্যাট ক্যাট না করে একেবারে !
সবার মন্তব্য শুনে শুনে বেচারার অবস্থা নাজেহাল।
ঘাবড়ে গিয়ে হয়ে দিশেহারা,
দোকানের কম্পিউটার এর ওপর করেনি ভরসা।
বানিয়েছে রঙ সবুজ আর হলুদ মিশিয়ে,
বিদঘুটে কেমন এক সবুজাভ হলুদ, ভাগ্যিস দুপুরে,
সেদিন চোখে পড়েছিলো ব্যাপারটা।
দেখে তো আমাদের সকলের চক্ষু ছানাবড়া।
কিছুতেই এই রঙ চলবেনা,
টেরাকোটা রঙটাই যে আমার চাই!
নিয়ে এলো লাল আর কালো স্টেইনার,
একবার লাল, আরেকবার কালো, ঐ সবুজাভ হলুদের সাথে মেশাতে মেশাতে ছেলেটা কাহিল,
টেরাকোটা রঙের আর কোনো দেখা নেই,
সার হলো রঙ মেশানো টাই।
কখনো হয় রঙটা গোলাপী, কখনো গেরুয়া।
এতো রকমারি রঙ মেশাতে মেশাতে একসময়,
শেষমেশ মাটিমাটি কেমন একটা রঙ এসে দাঁড়াল।
কি আর করা যাবে, লাগাতে হলো ওটাই,
মনে হচ্ছে যেন মাটির দেওয়াল পুরোটাই।
বাড়ির পাঁচিল না মনে হয়ে,
বাড়িটাকে আশ্রম বলে মনে হচ্ছে অনেকটাই।
খোঁজ নিয়ে জেনেছি, টেরাকোটা ওয়েদার কোট,
দোকানে পাওয়া যায় সহজেই।
মেশাতে হয় না অল্প জল ছাড়া আর কোনও কিছুই।
কিছুদিন পর আনতে হবে ওটাই,
ঠিক করে নিতে হবে প্রাচীর এর দেয়ালের রঙটা,
আমি যেহেতু রাঙাতে ভালোবাসি যে কোনো কিছুই,
এ্যাডজাস্ট করতে হবে যতটা পারা যায় আমাকেই।
