মনের কোলাজ- সৌগত রাণা কবিয়াল
মনের কোলাজ- সৌগত রাণা কবিয়াল
কড়ি দিয়ে এক্কেবারে যাচ্ছেতাই ভাবে কিনে নিলি তুই আমায়...!
এখন রোদ পোহালেই তোকে চাই..
তারপর, সারাদিন আমি চন্দ্রমুখী সুখ হয়ে
ফুরফুরে উড়ে বেড়াই সেই আলোয়...!
বিশ্বাস কর, এতোটুকুও ক্লান্তি আসে না
বেঁচে থাকার এই নাটকীয় দৈনন্দিনে..
মনে হয়..মনে হয়..
এইতো..আর এটুকুই তো পথ..
তারপর একবার সুখী খরগোশের মতো মাথা গুঁজে
তোর আস্তানায় ঢুকে গেলেই ব্যাস....
এক অদ্ভুত সুখের ঘোর....
তুই-আমি...
আমি-তুই..
আমরা- আমাদের..
আমাদের-আমরা...!
যতটা কথা চুপ করে থেকে বলা যায়,
তার চাইতে অনেক বেশি কিছু বলি আমরা সারারাত জেগে...
বিছানায় বালিশ বদলে যায়..
মশারীর দড়ি ছিড়ে যায়.
প্রচন্ড বৃষ্টিতে জানালা দিয়ে জল এসে
আমাদের সারা ঘর ভাসিয়ে দিয়ে যায়..
সেই জলে পিলপিল করা পা নিয়ে দেয়ালের দিকে এগোয় বিষাক্ত বিছে...
মাকড়সার জালের উপর দিয়ে হেঁটে যায় শিশু মাকড়ের জোড়া...
ঘরের দেয়ালে টিকটিকিগুলো কানামাছি ছুটোছুটি করে বেড়ায়...
মুখে খাবার নিয়ে আমাদের শরীরের ঘাম ঘেঁষে লাল পিঁপড়ে সারিবদ্ধভাবে তাদের ঘরে মজুদ করে প্রতিদিনের সঞ্চয়...
রাত বাড়তেই ক্রমশ ঝিঁঝি পোকাদের অসহ্য কোরাস..
মধ্যবিত্তের জীবনে কর্পোরেশনের বিদ্যুৎ বিভ্রান্ত..
পাশের বাড়ির জানালায় মাঝবয়েসী দম্পতির প্রচন্ডরকম শব্দের কথোপকথন...
আর..আর..আরও.. কতো কি......!
কিন্তু কি অদ্ভুত, আমাদের মাঝে
কেও বিন্দুমাত্র বিরক্তি সৃষ্টি করতে পারে না.....
তন্ময়তা নিয়ে ভালোবাসার ধরণ বুঝি এমনতর হয়..??
এতো কিছু বুঝি না..
জানিসই তো.. মাথা মোটা আছি কিছুটা..
শুধু বুঝি,
অনুভূতির হিমোগ্লোবিন স্রোতে..
'আমরা' শুধুই 'আমাদের' বয়ে নিয়ে চলি..
এক অন্তহীন সময়ের মাঝে...
সেখানে..সেখানে....
যাচ্ছেতাই ভাবে 'আমি' কেমন যেন অদ্ভুতুড়ে 'তুই' হয়ে যাই...
এ যেন এক..এক..
মুখোমুখি পরস্পরের দিকে দাঁড়িয়ে নিশ্চিত তাকিয়ে থাকা
কাদা মাটি মাখা শিল্পীর সামনে দৃষ্টি প্রাণ পেতে
স্বর্গের কোন দেবীর অমৃতা স্বমর্পন....!
মনের কোলাজ...
