কলির রাই কৃষ্ণবিনোদিনী
কলির রাই কৃষ্ণবিনোদিনী
আমি কলিযুগের রাধিকা ।
আমি মনে-প্রাণে কৃষ্ণপ্রিয়া ।
অঙ্গে-অঙ্গে লিখিত আছে কৃষ্ণগাথার স্মৃতি ,
রন্ধ্রে রন্ধ্রে রোপিত আমার কৃষ্ণের প্রেম-প্রীতি ।
কলিযুগের রাধা আমি , ব্যস্ত জীবনের দাসী ,
কোলাহল মাঝে কৃষ্ণ অন্বেষণে ব্যাকুল হয়ে মরি ।
আমি গীতিমালিকা , একাকী গেয়ে চলি বিরহের গান ,
সঙ্গীতসুর তোলে লহরী , জাগে ঐক্যতান ।
তোমার নিমিত্তে এসেছিল ফিরে বিবাগী রাধিকা ,
কৃষ্ণপ্রেমেই কৃষ্ণহীনা অভাগিনী শ্যামহিয়া ।
আমি বাঁধতে না চাই এ কলিযুগের অচির অন্ধমোহে ,
আমি ফিরে যেতে চাই দ্বাপর যুগে তোমার প্রেমের খোঁজে !
বহুরাত্রি করিনি রাস আমার কৃষ্ণবক্ষে ,
করিনি নৃত্য কতদিন তাঁর বাঁশির সুরের তালে !
পঞ্চপ্রদীপ হস্তে রাইয়ের একনিষ্ঠ আরতি ,
নিত্য কৃষ্ণভক্তিতে ভঙ্গ কুসুমকলির সুপ্তি ।
কলিযুগের রাধা কখনো যায়নি যমুনার ঘাটে ,
কাঁখে কলসি নিয়ে কখনো হাঁটে নি কাদামাটির পথে ।
কলিযুগের রাধা কখনো দেখে নি কৃষ্ণতনুর ছায়া ,
পায় নি সে কুঞ্জবিহারীর দিব্য সখ্যমায়া ।
কৃষ্ণপ্রেমী রাধা দেখে দুনিয়ার জাঁকজমক ,
আদিম ঐশ্বর্য তার ভাঙতে চায় এ আধুনিকতার রূপক !
কৃষ্ণসখী কৃষ্ণা প্রেমে পড়ে বারংবার ,
সকলের মাঝে তোমায় দেখে ভ্রমে বিব্রত প্রতিবার ।