ভারতবর্ষ
ভারতবর্ষ
ভারতবর্ষ কাকে বলে ও জানতো !
ও রাতের পর অচেনা রাত,
ভারতের মাঠ, নদী, মেঘ আর বৃষ্টিকে
বুকে নিয়ে ঘুমোতো।
পরবাসী আকাশের নিচে যখন,
ওর বেহালার ছড় ধরতো দেশ-রাগ,
সে রাগ-এ মসজিদের আজান,
মন্দিরের শঙ্খধ্বনি, গুরুদ্বারের কীর্তন
অকুন্ঠায় মিলে মিশে যেত।
ভারতবর্ষ কাকে বলে ও জানতো!
এ স্বেচ্ছানির্বাসনে, মানে-অভিমানে
ক্লান্ত সাগরপারে , দিন-মাস-বছরে
ভারতবর্ষ হয়েছিল আরো কিছু বোধ -
কোনো মায়ের নিঃসংকোচ স্বপ্ন,
অমলিন বেদনায় ঘনিষ্ঠ,
সময়ের দ্বার ধরে এক অপেক্ষা -
ফিরে আশা, ফিরে আসা।
তারপর, এক বিষণ্ণ সন্ধ্যায়
এক স্তম্ভিত মুহূর্ত ওকে শেষবারের মতন
জানিয়ে গেলো ভারতবর্ষ কাকে বলে !
বুক ভাসে, মুখ ভাসে,
জমানো সব স্বপ্নের সিন্দুক ভাসে,
তিলক অথবা পাগড়ি নাকি ফেজ টুপি ভাসে,
সব ভেসে যায় টইটম্বুর লাল পুকুরটাতে
কে গেলো, কি নাম - কেন ? কি এসে যায় ?
উন্মাদ পৃথিবীর শত সংবাদে,
দেশে দেশে প্রতিবাদী মিছিলে -
ওর একমাত্র পরিচয় -
অকারণ অকুণ্ঠিত ঘৃণার শিকার
এক ভারতীয়!
ওই যে পড়ে আছে -
পরবাসের কোনো অজ্ঞাত রাস্তায়
ওকে জিজ্ঞেস করো ভারতবর্ষ কাকে বলে
এখন ও নিশ্চিত বলে দেবে -
ভারতবর্ষ এক অবহেলিত ভালোবাসার নাম;
ভারতবর্ষ অসহ্য বিভেদের মাঝেও
এক হয়ে বেঁচে থাকার বিক্ষুব্ধ স্বপ্নের নাম;
আর, রক্তের দামে কেনা,
পৃথিবীতে ওর সর্বশেষ সম্মানের নাম -
ভারতবর্ষ !