আমি
আমি
আমি। প্রাতিষ্ঠানিক নই। প্রতিষ্ঠান-বিরোধী হতে গিয়ে নিজেই হয়ে উঠিনি এক প্রতিষ্ঠান।
বড়োজোর তোমাদের অই পারফিউম মাখা আধুনিকতাকে স্রেফ অস্বীকার করেছিলাম।
স্বীকৃতি দিতে চেয়েছিলাম আমার ঘাম আর জমাটবদ্ধ রক্তের দুর্গন্ধকে।
আমি। প্রেমিকাকে বুকে নিয়ে ভাবি গণিকাগমনের কথা।
গণিকালয়ে গিয়ে প্রেমিকার মুখ ভেসে উঠে বোলে অনুতপ্ত হইনি কোনোদিন কারণ আমি জানি- প্রেম ও কাম
এক নয়, কারণ আমি জানি – প্রেম ও কাম আলাদা নয়।
আমি। যাকে প্রতিষ্ঠান বলেছিলো ” সাহিত্যের জারজ”, কারণ আমি কবিতায়
অবমুক্ত করে দিয়েছিলাম শাব্দিক অবদমন।
আমি। মনীষার সংগে প্রেম করতে গিয়ে জেনে গেছি- অধিকাংশ সিঁদুর পরিহিত মহিলার
ধর্ম নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নেই যেরকম আছে সেইসব পুরুষের যারা সিঁদুর পরান এক রমণীকে আর ভালোবাসেন অন্য রমণী।
আমি। কথা বলার সময় পোঁদ ব্যবহার না করে ব্যবহার করি মুখ। মল ত্যাগ করার জন্য
মুখ নয়, ব্যবহার করি পোঁদ। তাই প্রতিষ্ঠান আমাকে ঘোষণা করেছিলো “সাহিত্যের বাতিলমাল”।
আমি। হ্যাঁ, আমি। সুদর্শনাকে ভালোবাসি বোলে বন্ধুরা হয়ে উঠেছিলো ঈর্ষাপরায়ণ,
এ কথা জানবার পরেও যে- সুদর্শনা আমাকে ভালোবাসেনি কোনোদিন।
সুদর্শনাও আমাকে ভালোবেসে ফেললে বন্ধুরা আমাকে ও আমার কবিতাকে খুন ক’রে
এক সংগে চালান করে দিতো সুদর্শনাদের বাড়ির কাছে শ্মশানঘাটায়।
বন্ধুদের ঈর্ষাকাতরতায় আমি এক ধরনের অর্থহীন পরাজয়ের গন্ধ পেয়েছিলাম যেরকম দেবতা পরাজিত হয়ে যায় পূজারীর কাছে!
আমি। না ঘুমিয়ে দুই যুগ কাটিয়ে দিয়েছিলাম শুধু কবিতায় একটিমাত্র সত্যকে আবিষ্কার করতে গিয়ে – “শব্দের নিজস্ব কোনো অর্থ নেই”!
আমি। গার্হস্থ্য জীবন শিখিনি- শিখিনি সন্ন্যাসব্রত। আমি কেবল মৃত্যুর বিনিময়ে পেতে চেয়েছিলাম জীবনের স্বাদ,
যে-জীবন ভালোবেসে আজীবন থেকে যায় ফেরারি আসামি যেমন।
তাই গঙ্গাজল আর সমুদ্রজলের মধ্যে মিঠা-নোনা ছাড়া অন্য কোনো তফাৎ আছে কিনা আমার জানা হলো না আজও!
