Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Arnab Bhattacharya

Drama

3  

Arnab Bhattacharya

Drama

অলীক জন্মদিন

অলীক জন্মদিন

9 mins
17.3K


*এই গল্পের সমস্ত ঘটনা কাল্পনিক । বাস্তবের সঙ্গে কোনো মিল থাকলে তা একান্তই অনভিপ্রেত । চরিত্র ও কিছু প্রেক্ষাপট বাস্তবিক ।*

অনেকদিনের একটা ইচ্ছে কাল পুরণ হতে চলেছে রনির । যদিও সে নিজে ভাবেই নি যে এভাবে তার ইচ্ছে টা হঠাৎ বাস্তবে রূপ নেবে । সকাল এগারোটার জসবন্তপুর এক্সপ্রেস ধরার তাড়ায় আর বিতানের কাছে যাওয়ার উত্তেজনায় তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়লো ।

আজ অফিসে অমানুষিক পরিশ্রম গেছে । বৃহস্পতিবার এমনি তেই চাপ থাকে, তার ওপর হঠাৎ নতুন প্রোডাক্টের পর পর তিনখানা ট্রাক একসাথে ঢুকেছে আর তার যাবতীয় এন্ট্রির দায়িত্ব পড়েছে দু বছরের অভিজ্ঞ এরিয়া সেলস্ কো-অর্ডিনেটর রনদেব সেনের ওপর । উপরি পাওনা তার অধস্তন দুই কর্মীর ডুব, অর্থাৎ পুরো কাজের ভার রনদেব ওরফে রনির কাঁধে । সেসব করে বাড়ি ঢুকতেও রাত এগারোটা বেজে গেছে । তারপর খাওয়া দাওয়া সেরে ব্যাগ গোছাতে বসেছে । কাল ট্রেন ধরতে তাড়াতাড়ি শুতেও হবে । রনি যে কাল বিতানের কাছে যাবে, তার বেষ্ট ফ্রেন্ডের কাছে, তাও আবার নিজের জন্মদিনে!

বিতান তার বাবার চিকিৎসার জন্য দক্ষিণ ভারতে এসেছে মাস চারেক হলো । আসার পর কয়েক মাস যেতেই বোর হয়ে একদিন রনি কে বলেই ফেলে বিতান - "ভাই, একদিন চলে আয় না, ঘুরে যা । এখানে কত কি দেখার, খাওয়ার আছে । সব তো তামিল এখানে, ভালো লাগছে না আর বস্, তোকে খুব মিস্ করছি ভাই ।" বলেই নিজেকে বোঝায় বিতান - নানা, এ কি বিচ্ছিরি আবদার! সে বেচারারও তো অফিস, কত দায়িত্ব । এভাবে বলাটা ঠিক হলোনা । রনিও জানে তার পক্ষে সম্ভব নয় হঠাৎ করে তামিলনাড়ু পৌঁছে যাওয়া, তাও বেষ্ট ফ্রেন্ডকে নিরাশ করতে পারে না, বলে ফেলে - "ভাই, আমিও ভাবছিলাম রে, দাঁড়়া দেখছি, আজই বস্ কে বলবো, ছুটি গুলো পড়ে আছে অনেক ।"

আসলে সারাক্ষণ চিকিৎসা আর অন্য ভাষার মানুষের সংসর্গে বিতানও কেমন হয়ে গেছে, তারপর বন্ধু বান্ধবের সাথে দীর্ঘদিন দেখা নেই, তাই বাধ্য হয়েই বন্ধুর কাছে আর্জি জানিয়ে ফেলে তার কাছে আসার । বিতান যেখানে আছে, সেই ভেলোর শহরে শুধুই রুগী, রুগীর আত্মীয় আর বিশেষ কিছুই নেই । চিকিৎসার বাইরে বিতান যে সময়টা পায় তাতে কাছাকাছি একটা মন্দির নয়তো পাহাড়ের কাছে গিয়ে সময় কাটায়, বা ইডলি বা ধোসার মত কিছু খাবার চেখে দেখে । কিছু কিছু জায়গায় ঘুরতে গিয়ে রনির কথা মনে পড়েছে, নতুন কিছু খাবার খেয়েও রনির কথা মনে পড়েছে ওর - ইস্, যদি রনিকেও খাওয়ানো যেতো, সেও তো বিতানের মতোই খাদ্যরসিক বাঙালি ।

জন্মদিনের জন্য ছুটি পেয়েছে শুক্রবার আর শনিবার অবলীলায় বস্ রনির ছুটি অ্যাপ্রুভ করেছে, সাথে রবিবার আর সহজেই শেষমেশ রনির ইচ্ছা পূরণ - বিতানের কাছে যাওয়া হচ্ছে । তার আপাতত মনে অদম্য এক বাসনা আর ভালোলাগা নিয়ে সারাদিনের খাটনির পর রনির চোখে আরামের ঘুম নেমে এলো, জন্মদিনের উইসগুলো ফোন খুলে দেখলোও না, ডুবে গেলো এক গভীর ঘুমে । এক গাঢ় গভীর ঘুমে ।

সকাল সকাল চটপট তৈরী হয়ে হাওড়া থেকে ট্রেন ধরলো রনি । খুব তাড়াতাড়ি পৌঁছেও গেলো রনি কাটপাডি স্টেশনে, ভাবেও নি এতটা শীঘ্র বিতানের কাছে পৌঁছতে পারবে । ট্রেনের ভেতর থেকেই দেখতে পেলো বিতান তাকে রিসিভ করার জন্য স্বাদরে অপেক্ষা করছে । বার্থডে বয় রনি জন্মদিনের সকালে তামিলনাড়ু তে, তার বেষ্ট ফ্রেন্ড বিতানের সঙ্গে । শুভেচ্ছা জানিয়ে বিতান তাকে নিয়ে গেলো তার আস্তানায় । রনির যেন এখনো ঘোর লাগছে, ভাবতেই পাড়ছে না সে সত্যি সত্যি বিতানের কাছে এসেছে । বিতানের খুব ইচ্ছে হলো রনি কে এখানকার জনপ্রিয় পোঙ্গল খাওয়ানোর, সেই মতো দুজনে বেড়িয়ে পড়লো । পরম তৃপ্তিতে রনি পোঙ্গল খেলো, সাথে ডাল বড়া । মুখে একটাই কথা বেড়োলো রনির - "লা জবাব ভাই, ভাগ্যিস এলাম ।"

রনির আর তর সইছে না জন্মদিন উদযাপনের । উত্তেজনা বুকে নিয়ে বলে উঠলো - "বল ভাই, হোয়াট নেক্সট? তোর কথা মত চলে এলাম তাহলে, কি বল?"

এর পরের গন্তব্য ভেলোর ফোর্ট । দুই অভিন্ন হৃদয় বন্ধু মিলে গত কয়েক মাসের না বলা কথায় ভেসে গেলো । দেখতে দেখতে ফোর্ট এসে গেলো । গোটা এরিয়া চষা হলে যথারীতি রনির খিদে পেয়ে গেলো । রনি তার ইচ্ছা ব্যাক্ত করতে বেশি সময় নিলো না - "বিতান, ভাই, পেটে এবার একটু কিছু দিতে হবে ।" যেমন বলা তেমন কাজ । বিতান কোত্থেকে এক প্লেট ইডলি এনে হাজির । রনির প্রথমটা জিনিসটার দিকে তাকিয়ে এক রকম মুখ ব্যাজার করে ফেললো, কারণ ও অফিসে একবার ইডলি খেয়ে খুব ভুগেছিলো । মানে একদমই মনঃপূত হয়নি তার । বিতান বুঝতে পারলো তার অবস্থা । আস্বস্ত করে সে রনিকে বললো - "ভাই, সাউথ ইন্ডিয়ায় এসে ইডলি খাবি না? মুখে পোড়, খারাপ লাগলে আমায় বলিস ।"

খানিকটা ভয় ভয়ই রনি একটা ইডলি তুললো হাতে । সাম্বার আর নারকোল চাটনির সংমিশ্রণে আস্তে করে নরম তুলতুলে ইডলি মুখের ভেতর চালান করতেই চোখ দুটো তার পরম আনন্দে বুঁজে গেলো । এর পরের কয়েক মিনিট রনির মুখ থেকে কোন কথা সড়ে নি যতক্ষণ না তার প্লেট ভর্তি ছখানা ইডলি শেষ হলো । বিতানও খেলো, রনির খাওয়া দেখে খুশিও হলো - "কিরে, বলেছিলাম তো?" রনির তখন আর কথা বলার ইচ্ছাই নেই, সে সবটুকু নিঃশেষ করতে ব্যস্ত ।

বিতান তাড়া দিয়ে ঠেলে তুললো তাকে - "ভাই, পাহাড়ে যাবি না? চল, চল, ওঠ্ ।" রনির সম্বিত ফিরলো - "ও হ্যাঁ, তাই তো, চল, চল ।" দুজনে মিলে হাঁটা লাগালো পাহাড়ের দিকে । আজ দুজনেই খুব খুশি, এত দিন ধরে বিতান কেবল ভেবেইছে যদি রনি একবার আসতো! রনিও বারবার ভেবেছে যাওয়া সম্ভব নয়, তবু বিতানকে নিরাশ করে মুখের ওপর না কখনো বলেনি । আজ সেই দুজনের মিলিত ইচ্ছা যে এভাবে সফল হবে তা ভাবতেই পারছে না কেউ । স্বপ্নের মত লাগছে । কোলকাতার দুই বাঙালি সন্তান নিজ বসতির থেকে এতো দুরে তামিলনাড়ু তে এসে যেন নিজেদের চেনা ছন্দে ফিরে এসেছে ওরা । অনেক জমা কথা, ইয়ার্কি, গল্প করতে করতে পাহাড়ের সামনে এসে পড়লো দুই বেষ্ট ফ্রেন্ড । কয়েক প্রস্থ ছবি তোলা হলো দুজনের । পাহাড়ের ওপর মন্দিরটায় আরতি হচ্ছে । কি অপূর্ব এক সুগন্ধ ভেসে আসছে । দুজনে সিঁড়ি ভেঙে উঠলো আস্তে আস্তে । মন্দিরটার সামনে বেশ খানিকটা ছড়ানো জায়গা আছে, সেখান থেকে প্রায় পুরো শহরটা বেশ ভালো মতো দেখা যায় । ওরা ওখানে দাঁড়িয়ে প্রাণ ভরে ঠান্ডা বাতাস নিলো । রনি বললো - "ভাই, এরকম জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকতে পারলে আর কিছু চাই না, কোথায় লাগে এসির হাওয়া ।" বিতান খানিকটা উদাস - "সত্যি রে, এখানে দাঁড়িয়ে আকাশটা দেখতে যে কি ভালো লাগে! কোথায় আমাদের কোলকাতা, বাড়ি, ঘর আর কোথায় এখন এই ভেলোর! কবে যে শান্তি করে সব মিটিয়ে বাড়ি ফিরবো? আর ভালো লাগছে না এই বিদেশ বিভুঁইয়ে ।" রনি বিতানের পিঠে হাত রাখলো - "সব ঠিক হয়ে যাবে বন্ধু । খুব তাড়াতাড়ি কাকুকে নিয়ে কোলকাতা ফিরবি তুই, দেখিস!" রনির গান মনে পড়ে যায় একটা, গান পাগল রনি গেয়ে ওঠে - "আমি গাই, ঘরে ফেরার গান... উতলা কেন এ প্রাণ... শুধু যে ডাকে, ফিরে আমাকে... বিদেশ বিভুঁইয়ে পড়ে আছি, তবু ছাড়েনা কেন ছাড়েনা পিছু টান...।" - বিতানও গলা মেলায় ।

দুপুর গড়িয়ে আসছে, বিতান আগেই জানিয়েছে দুপুরে তারা হোটেলে খাবে, আর জন্মদিনের জন্য লাঞ্চটা রনিই খাওয়াবে । রনিরও আনন্দের শেষ নেই, নিজের জন্মদিন যে বাড়ি থেকে এতো দুরে এইভাবে বিতানের সাথে সেলিব্রেট করতে পারবে, অন্য ভাবে, তা ভাবতেই পারেনি, যেন স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে কোনো অজানা দেশ দেখার মতো মনে হচ্ছে । রনি আর বিতান পাহাড়ের ওপরের চওড়া, ছড়ানো জায়গাটা থেকে নেমে আসার তোড়জোড় করছে । এদিকে ইডলি কখন হজম হয়ে গিয়ে লাঞ্চের ডাক আসতে শুরু করেছে দুজনেরই পেটে । হঠাৎ রনির ইচ্ছে হলো পাহাড়ের আর একটু ওপরে ওঠার - "ভাই, উঠবি একটু?" বিতানকে বিশেষ উৎসাহী মনে হচ্ছে না - "না ভাই, যদি নামতে না পারি!" রনি উৎসাহে ফুটছে - "আরে এটাই তো অ্যাডভেঞ্চার । চল, চল ।" দোনোমনা করতে করতে বেশ খানিকটা ওপরে উঠে পরলো দুজনে, পাহাড়ের কিছু অসমতল ধাপে ধাপে পা রেখে । এবার বিতান বাধা দিলো - "ভাই, অনেক হয়েছে, এবার নামা যাক ।" রনির চোখে একটা দুষ্ট হাসি, ভাবখানা এমন যেন আরও একটু ওপরে উঠবে । তবে বিতানের কথায় সায় দিয়ে নামতে সচেষ্ট হলো । বিতান আগে আগে নামতে শুরু করলো, বলা ভালো চেষ্টা করতে লাগলো নামার । ওঠার সময় যে ধাপ আর গ্রিপ গুলো ধরে উঠেছে সেগুলা যেন নামার সময় কোথায় হারিয়ে গেছে । বিতান বুঝতে পারছে না কোথায় পা টা দিলে কোথায় পরের পা টা রাখার জায়গা পাবে কারণ পুরো ব্যাপারটা তার কাছে এখন শুধুই ঢাল, কোনো সমতল বা সমান পা রাখার জায়গা তার চোখে পড়লো না । ভেতর ভেতর বলতে থাকলো এই জন্য উঠতে চাইছিলাম না, রনিটা জোর করে তুললো । উফ্, কি ফ্যাসাদ! এদিকে পাহাড়ে আর কোনো লোকও নেই রনি ছাড়া, যার হাতটা ধরে নামতে পারে । বিতানের পা দুটো কাঁপতে আরম্ভ করেছে, বুকের ভিতরের কম্পন টাও টের পেলো বেশ জোরে । রনি বুঝতে পারলো কিছুটা যে বিতান নামতে পারছে না, আর ও না নামলে সে নিজেও নামতে পারবেনা, আর কোনো বিকল্প রাস্তাও তো নেই । মনের জোর দিতে রনি চেঁচালো - "কিরে, নাম । ভয় কি! যেভাবে উঠলি সেভাবেই নাম পাগল ।" বিতান রেগে গিয়ে চেঁচিয়ে উঠলো - "ধুর, একটাও গ্রিপ নেই, পা স্লিপ করলে গড়িয়ে যাবো একদম ।" চোখে মুখে দুজনেরই এক অজানা আশঙ্কায় শরীর ঠান্ডা হয়ে গেলো । বিতান কিছু একটা ধাপ বোধহয় খুঁজে পেয়েছে । পা টা বেশ লম্বা করে বাড়ালো । রনিও দেখলো একটা বেশ দুরের ধাপের দিকে বিতান পা বাড়িয়েছে কিন্তু পা ফস্কালে সব শেষ । বিতান পা বাড়ালো । পা টা ধাপটার দু ইঞ্চি সাইডে পড়লো । বিতান একটা বড়ো পাথরে ধরে থাকা হাতটা ছেড়ে দিয়েছে, যে ধাপে তার ব্যালেন্স নিয়ে গিয়ে দাঁড়ানোর কথা তার থেকে সরে গেল তার পা, পুরো শরীরটা ছিটকে পড়লো একটা পাশের বড়ো পাথরের চাঁইয়ের ওপর । সেখান থেকে সেকেন্ডের গতিতে আরো নিচের একটা পাথরে ধাক্কা খেতে গড়িয়ে চলে গেলো বিতানের শরীর । সেকেন্ডের মধ্যে ঘটে যাওয়া এই সাংঘাতিক দৃশ্য রনির চোখ বন্ধ করে দিলো ।

হতভম্ব রনি পাহাড় কাঁপিয়ে চিৎকার করে উঠলো - "বিতাআআআআন!"

চোখ খুলে উঠে বসলো ধরমরিয়ে । সারা শরীর ঘামে ভিজে এই ডিসেম্বরের ঠান্ডাতেও । রনির চিৎকার শুনে মা দৌড়ে এসেছেন পাশের ঘর থেকে । রনি মা কে দেখে অবাক চোখে তাকিয়ে রইলো । হালকা জড়ানো কন্ঠে একটু আতঙ্কের স্বরে বলে উঠলো - "বিতান, বিতান কোথায়!" কাকিমা ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললেন - "বিতান এখানে কোথায়! ও তো ভেলোরে । কিরে, রনি, বিতান বলে ওরম চেঁচালি কেন? স্বপ্ন দেখেছিস?" কাকিমা বুঝতে পারলেন যে ছেলে তাঁর স্বপ্ন দেখেছে নিশ্চিত । এবার রনির একটু সম্বিত ফিরেছে । সেও বুঝতে পারলো এতক্ষণ সে যা দেখলো তা সবই স্বপ্ন তার । আশেপাশে কোথাও বিতান নেই, পাহাড় নেই, নেই সে ভয়ংকর, বিভীষিকাময় দৃশ্যও । আস্তে আস্তে ভোরের আলো ফুটছে, যাক, ভাগ্যিস এ সব সত্যি নয়, ওফ্ কি দৃশ্য, কেন যে এমন একটা স্বপ্ন দেখলো । রনি একটু স্বাভাবিক হতে কাকিমা উঠে যাচ্ছিলেন । রনি আঁচল টেনে ধরলো - "মা, ভোরের স্বপ্ন সত্যি হয় মা?" - রনির গলায় যেন কেমন এক ভয় মিশ্রিত বেদনার টান, যেন এক আকুতি । কাকিমা অবাক হলেন - "তুই কবে থেকে এসব বিশ্বাস করছিস?" - বলে হেসে ফেললেন । রনি ঝাঁঝিয়ে উঠলো - "আহ্, বলোই না ।" কাকিমা এসে বসলেন - "বলতো কি দেখেছিস?" রনি দ্রুত বলে গেলো তার স্বপ্ন । কাকিমা পিঠে হাত রাখলেন - "পাগল, তুই তো এখানে, যাস তো নি, কিচ্ছু হবেনা । যা ঘুমো । বিতানকে ফোন করিস সকাল হলে, যা, ঘুমোতে চেষ্টা কর বাবা একটু ।"

কোন এক অস্বস্তিকর স্বপ্ন রনির মনটাকে ভারী করে দিয়েছিলো, বড়ো কষ্ট হচ্ছিলো বেষ্ট ফ্রেন্ড কে নিয়ে এরকম একটা স্বপ্ন দেখে । রনির যেন মনটা এতক্ষণে হালকা হলো মায়ের কথায় । সত্যিই তো বিতান ওখানে, আর সে তো কোলকাতার বাড়িতে লেপ মুড়ি দিয়ে শুয়ে । একসাথে তো দুজনে নেই, স্বপ্ন তো স্বপ্নই হয় ।

ভোরের আলোয় কাকে দের কলতান শুরু হচ্ছে ধীরে ধীরে । এক নতুন দিন শুরু হওয়ার অপেক্ষায় । আর এ হলো সেই দিন যার তারিখ ২০১৭ সালের ১৫ই ডিসেম্বর । আজ রনির জন্মদিন । অফিস ছুটি, এক নিশ্চিত শান্তির ভাব মনে আসতে পারছে না যেন । রনির ফোনে অজস্র বার্থডে উইসের ভিড়, দেখতেও ইচ্ছা করছে না সেসব । আর ঘুম এলো না রনির । ছোটো থেকে ঈশ্বরে অবিশ্বাসী রনোদেব সেন একবার ঘরে টাঙানো লোকনাথ বাবার ছবির দিকে তাকালো । মনে মনে বললো - বিতান, ভালো থাকিস, তাড়াতাড়ি ফিরে আয় ।

সত্যি কি আজ ঠাকুরের কাছে বললো কথাটা, না নিজের মনকেই বোঝালো! রনি জানেনা তা, সত্যিই জানেনা ।।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Drama