উন্নতির সোপান
উন্নতির সোপান
কিছুতেই ই - মেইলটা পাঠানো যাচ্ছে না। শতবার চেষ্টার পরে শুধু পাচ্ছে -
"মেইল ডেলিভারি সাবসিস্টেম, দেয়ার ইজ আ টেম্পোরারি..." -- ওহ্ ভগবান! মাথাটা দুহাতে চেপে ধরে চরম হতাশায় ধপ করে চেয়ারে বসে পড়লো তনু, নাহ্ আর তাহলে হল না, এত পরিশ্রম, করেও সব বৃথা হয়ে গেল... । সস্তার স্মার্টফোনটা প্লাস্টিক মাদুরের উপর ছুঁড়ে ফেলে দশ বাই দশের ভাড়া ঘরটা ছেড়ে বেরিয়ে এল রাস্তায়। স্টেশনের পাশের এই বস্তিতে এখন গলি-ঘুপচি ভরে উঠেছে সস্তার মদ আর জুয়ার আড্ডায়। পূর্ণিমার বিরাট চাঁদটার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে আনমনা হয়ে গেল তনু।
"কাট"- পরিচালক সুনু অধিকারীর মুখে বেশ চওড়া হাসি। এগিয়ে এসে তনুর পিঠটা একটু চাপড়ে দিয়ে বললেন,
-- বাহ, চমৎকার। এবার প্রোডিউসারের সঙ্গে একটু মাখো মাখো হয়ে যাও, ব্যাস জমি পাকা হয়ে যাবে। ম্যাডাম ওইখানে।
সুনু হাজরা একটা ঘরের দিকে ইশারা করে অর্থপূর্ণ হেসে আর একবার পিঠটা চাপড়ে দিলেন তনুর।
-- আজ তোমার নথ ভাঙবে প্রোডিউসার ম্যাডাম।
কানের ভিতরে কথা গুলো বলে গেল সহ পরিচালক আশু ।
চমকে উঠে ব্যপারটা ভাবতেই গা ঘিন ঘিন করে উঠলো তনুর। ঘরের কাছে পৌঁছে একটু ইতস্তত করে দরজায় নক করলো তনু ।
--এসো। খোলা আছে।
ঘরের ভিতর হাল্কা নীল আলোতে যেন স্বপ্ন ভেসে বেড়াচ্ছে। সেই স্বপ্নের সিঁড়ি তনুর থেকে মাত্র কয়েক হাত দূরে স্বচ্ছ পোষাকে পিছন ফিরে দাঁড়িয়ে আছে।
নিস্তব্ধ কয়েকটা সেকেন্ড কেটে গেল। হঠাৎ করেই তনুর দিকে ফিরলেন সেই স্বপ্নমানবী। চমকে উঠলো তনু , এ কাকে দেখছে সে? সমস্ত শরীর মনে যেন আগুন জ্বলে উঠলো তনুর!
--মা? তুমি!
তনুর দিকে তখন ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছেন মাত্র দশ বছর বয়সের তনু আর তার হঠাৎ বেকার বাবাকে ছেড়ে পালিয়ে হয়ে যাওয়া "মা"।
এভাবেই বাঁকা পথে আসা প্রচুর বৈভব কেড়ে নিচ্ছে সমাজের সুস্থতা।
