স্বপ্ন
স্বপ্ন


বিমান মাঝেমধ্যেই একটা স্বপ্ন দেখে। লোকে ভূতের স্বপ্ন দেখে, ডাকাতের, সাপের স্বপ্নও দেখে, বিমান দেখে ওড়ার স্বপ্ন। প্লেনে করে নয়, এমনিই ওড়ার স্বপ্ন- হাঁটা দিয়ে শুরু হয়, তারপর গতি বাড়ানো, একটা ছোট লাফ, ব্যাস-আর মাটিতে পা পড়ে না। অবশ্য বিনা পরিশ্রমে নয়, সাইকেলের প্যাডেল করার মত পা চালাতে হয় বিমানকে, স্বপ্নেই সে বেশ ক্লান্ত হয়ে পড়ে। বিমান লক্ষ্য করেছে, স্বপ্নটা তার খাবারের ওপর নির্ভরশীল নয়- ভাত, গন্ধলেবু দিয়ে ডাল, আলুভাজা খেয়ে বিমান এই স্বপ্ন দেখেছে আবার পরোটা খাসির মাংস খেয়েও বিমান একই স্বপ্ন দেখেছে। জায়গার ওপর ও এই স্বপ্ন আসাটা নির্ভর করে না, বাড়ির বিছানায় দেখেছে, আবার ট্যাক্সির সিটে ঘুমাতে ঘুমাতেও বিমান উড়েছে। তবে ইদানিং বিমানের ধারনা হয়েছে যে তার জীবনে কিছু ঘটলেই বিমান এই স্বপ্ন দেখে, মাধ্যমিকের ফলের দিন দেখেছিল, কলেজ ছেড়ে দেবার দিনও, যেদিন ট্যাক্সি কিনল, সেদিনও বিমান দেখেছিল এই ওড়ার স্বপ্ন। ট্যাক্সি ড্রাইভারের সাথে থাকবেনা বলে নীরা যেদিন ছেড়ে চলে গেল, বাংলা খেয়ে বিমান সেদিন ঠেকের ধারের রাস্তায় পড়ে থাকলেও, স্বপ্নে সে উড়েছিল। ট্যাক্সি চালানোর টাকা দিয়ে বিমান যেদিন নিজের ঘর তুলে মায়ের স্বপ্ন পূরণ করবে, সেদিনও, বিমান জানে, একই স্বপ্ন দেখবে। তবে বিমান হলফ করে বলতে পারে না যেদিন কোন ঘটনা ঘটে না, সেদিনও একই স্বপ্ন আসে কিনা। এসব ভাবতে ভাবতে বিমানের চোখ লেগে গেছিল। আবার সেই এক স্বপ্ন, বিমান উড়ছে। আজ কোন ঘটনা ঘটেনি, বিমানের গবেষণা ভুল, ঘুমন্ত অবস্থাতেই বিমানের মুখে স্মিত হাসি ফুটে উঠল।
রামাধির দেখছিল সে দেশে গেছে, বউটাকে সোহাগ করছে, হঠাৎ এক বিকট আওয়াজে তার চটকা ভাঙল। ভাল স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ায় বিরক্ত রামাধির দেখল একটা গাড়ি এসে ডিভাইডারে মেরেছে। তড়িঘড়ি ছুটল অন ডিউটি কনস্তেবল রামাধির সিং। ড্রাইভার মৃত, পকেটের লাইসেন্সে রামাধির পেল ড্রাইভারের নাম- বিমান বাগচি।