প্রাক্তন II
প্রাক্তন II


বসির দা একটা চা,
- কবে এলে তুমি?
-এইত আজ ভোরে, এসে এসে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম এই মাত্র ঘুম ভাঙ্গলো।
-ভালো করেছ অনেক দিন পর দেখা হল তোমার সঙ্গে।
-হ্যাঁ, কোরোনা তে গোটা কলেজ টায় কেটে গেল।
-এনাও তোমার চা আর সিগারেট। সিগারেট এর ব্রান্ডটা দেখছি মনে রেখেছ।
বসির দা হাসল,
- মনেত রাখতে হবে তোমরাত আমার কাস্টমার।
সিগারেটা ধরিয়ে চা এর ভাঁরে চুমুক দিলাম। (যেন ক্যান্সার আর গ্যাসের পারফেক্ট কম্বিনেশন।)
-হঠাং এখানে আসা, কলেজে কিছু কাজ ছিল বুঝি?
-হ্যাঁ...
-তোমার ওই বান্ধবী টাও এসেছিল কাল দেখলাম।
চা এর কাপে দ্বিতীয় চুমুক দিতে গিয়ে হঠাৎ বান্ধবীর নাম শুনে একজনেরই কথা মনে পড়ল রিতু।
রিতু আমার শুধু বান্ধবী না বান্ধবীর থেকে অনেক টা বেশি সে আমার প্রেমিকা।
কলেজের শেষে হওয়ার পর প্রায় বসির দার দোকানে চা খেতে আসতাম।
- আচ্ছা, ও এসেছিল...
শেষ দিন ঝগড়াটা করার পর এক সপ্তাহ হয়ে গেল ফোন করা হয়নি।
চা টা শেষ করে কলেজের অফিসে গেলাম।
বিকেল ৫:৩০, কলেজের থেকে অনেক আগেই চলে এসেছি, এখন যাব আমার প্রিয় প্রেমিকাকে সারপ্রাইজ দিয়ে রাগ ভাঙাতে।
প্রায় এক ঘন্টা ধরে হাতে গোলাপ নিয়ে রিতুর অফিসের সামনের চা এর দোকানে বসে মশা মারছি।
হাত ঘড়িটা দেখলাম ৭:৩০ রিতুর অফিস থেকে বেরোনোর সময় হয়ে এসেছে, তার সঙ্গে আস্তে আস্তে আমার হৃদপিন্ডের স্পন্দন বেড়ে যাচ্ছে, মনে এক রাশ অনুভূতি, দীর্ঘ দুটো বছরের ফোনের ঝগড়াটা আজ শেষ হবে, আজ বুঝিয়ে দেব দূরে থেকেও আমি ঠিক আগের মতই ভালোবেসে গেছি।
অফিস থেকে আস্তে আস্তে লোক বেড়োছে, আমার হৃদস্পন্দন অনুভূতি থেকে শব্দে রূপান্তরিত হয়েছে।
সামনে রিতু একটা কালো টপ আর জিন্স পড়ে কাঁধ সাইড ব্যাগ নিয়ে একটা handsome ছেলের হাত জড়িয়ে ধরে গল্প করতে করতে অফিস থেকে বের হচ্ছে।
রাস্তার এইপাশে চা এর দোকান থেকে আমি দেখছি।
রিতুকে দাঁড় করিয়ে কোথায় যেন গেল ছেলেটা। আমি যাব রিতুর সামনে দ্বন্দ্ব চলছে মনে, এখান সামনে হঠাৎ দাঁড়ালে কি তার সারপ্রাইজটা ভালো লাগবে। ছেলেটা আবার এলো বাইক নিয়ে রিতুর সামনে এসে দাঁড়ালো। রিতু কাঁধে হাত রেখে উঠে পড়লো তার বাইকে। মাথাটা ঘুরিয়ে ছেলেটা কিছু একটা বলে বাইক নিয়ে চলে গেল, আমার প্রেমিকাকে না, প্রেমিকা নয় আজ থেকে আমার প্রাক্তন।