নারীকে নিয়ে যত কথা
নারীকে নিয়ে যত কথা
বর্তমানে বাংলাদেশের তরুণ কবি অর্পিতা ঐশ্বর্যের নারী কবিতায় তিনি সুস্পষ্ট ভাবে নারীকে সাহসী, প্রতিবাদী, লজ্জাবতী এবং রুপান্তরকারী বলে আখ্যায়িত করেছেন ।
শুধু তরুণ কবি অর্পিতা ঐশ্বর্য নন কালজয়ী লেখক, লেখিকারা তাদের কবিতার মাধ্যমে নারীকে উচ্চ আসনে রেখেছেন ।
বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে শুরু করে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, জীবনানন্দ দাশের কবিতায় ও ফুটে উঠেছে নারী ।
নারী বিষয়ে বাংলা কবিতার ভিত্তি তৈরি হয়েছিলো ।
□ বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতায় এবং আজও আমাদের মনন সেখানেই আটকে আছে। তাঁর কবিতায় নারী এসেছে সৌন্দর্য, নির্ভরশীলতা, সহনশীলতা ও আনুগত্যের প্রতিমূর্তি হিসেবে।
"আঙিনাতে যে আছে অপেক্ষা করে
তার পরনে ঢাকাই শাড়ি, কপালে সিঁদুর"।
-- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জানতেন, পুরুষের জন্য শ্রুতি সুমধুর নয় স্বয়ংসিদ্ধা নারীর কাহিনী, তবু চিত্রাঙ্গদার মুখে তিনি নারীর আত্মচেতনার গৌরব বাক্য দিয়েছেন;
" আমি চিত্রাঙ্গদা।
দেবী নহি, নহি আমি সামান্যা রমণী।
পূজা করি রাখিবে মাথায়, সেও আমি নই;
অবহেলা করি পুষিয়া রাখিবে
পিছে সেও আমি নহি। যদি পার্শ্বে রাখো
মোরে সংকটের পথে, দুরূহ চিন্তার
যদি অংশ দাও, যদি অনুমতি কর
কঠিন ব্রতের তব সহায় হইতে,
যদি সুখে দুঃখে মোরে কর সহচরী
আমার পাইবে তবে পরিচয়"
□ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর কবিতায় শুধু নারী বা মাতৃভক্তির বর্ণনা দিয়েই সম্পন্ন করেননি বরং কালের অভিরুচি শিল্পী সত্তাকে বরাবরই বিকশিত করেন প্রকৃতির নির্যাসে। মাতৃসমা কিছু নারীর অপরিসীম প্রভাব, তাদের স্নেহ, অপত্য শাসন আর বুকে আগলে রাখার মাতৃত্ব বোধই কবিকে পথের নির্দেশ দিয়েছে;
" তোমার মমতা-মানিক আলোকে চিনিনু তোমারে মাতা তুমি লাঞ্চিতা বিশ্ব-জননী!
তোমার আচল পাতা নিখিল দুঃখী নিপীড়িত তবে,
বিষ শুধু তোমা দহে যথা তব মাগো পীড়িত নিখিল ধরনীর ভার বহে"।
-- কাজী নজরুল ইসলাম ।
নারী পুরুষ নির্বিশেষে সমান অধিকারই সাম্যবাদী দর্শনের মূল চেতনা;
"বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর"।
নারীর প্রতি যে অন্যায় করা হচ্ছে, নারীকে অবমাননা করছে এর জন্য শাস্তি পেতে হবে। যে কথা পুরুষ শাসিত সমাজকে বুঝিয়ে দিয়েছেন কবি নারীর মর্যাদার কথা বলে;
"নর যদি রাখে নারীরে বন্ধী, তবে এর পর যুগে
আপনারি রচা ঐ কারাগারে পুরুষ মরিবে ভুগে
যুগের ধর্ম ।
এই সমাজের সর্বস্তরের নারী যে সন্মানীর তা কবিতায় প্রকাশ করেছেন। সমাজের নারীদেরকে আলোর পথ দেখিয়েছেন।
□ কবি জীবনানন্দ দাশ যাপিত জীবনে চলার পথে মোহাচ্ছন্নতা আর বিভ্রান্তির কথা লিখেছেন ঐতিহ্যের নিবিড় পতনের শব্দ মাধুর্যে। হারিয়ে যাওয়া সভ্যতার গভীর অন্ধকার বিদিশা তার বস্তু পরিচয় ঝেড়ে ফেলে নারীর কোমলকান্তির মোড়ক পরিধান করে নেয় আর প্রিয়তমার চুলের কালোর অতলতার বিভ্রমে আটকে যায় তাঁর চেতনা। প্রেম কাতর পাগল হৃদয়ের জন্য কবি নির্মাণ করেন ভালোবাসা আর আশ্বাসের বিরাট ভূমি।
" হাজার বছর ধরে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে,
সিংহল সমুদ্র থেকে নিশীথের অন্ধকারে মালয় সাগরে
অনেক ঘুরেছি আমি; বিম্বিসার অশোকের ধূসর জগতে
সেখানে ছিলাম আমি; আরো দূর অন্ধকারে বিদর্ভ নগরে;আমি ক্লান্ত প্রাণ এক, চারিদিকে জীবনের সমুদ্র সফেন,আমারে দুদণ্ড শান্তি দিয়েছিল নাটোরের বনলতা সেন।
--জীবনানন্দ দাশ ।
ঠিক তেমনি ভাবে তরুণ কবি অর্পিতা ঐশ্বর্য তার কবিতার মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন,
তিনি মনে করেন একজন নারী সব করতে পারে ,
একজন নারী চলতে চলতে পথে হোঁচট খেলে ,একলা একাই উঠে দারাতে পারে ।
একজন নারী যে সবসময় কান্নার পরে হাসিমুখে কথা বলতে পারে ।
হাজারো কষ্ট পেরিয়ে তারা হিমালয়ের মতো বিশাল পাহাড় জয় করতে পারে ।
হতাশাকে ছুঁড়ে ফেলে স্বপ্ন দেখতে পারে ,
একজন নারী ভালোবাসতে পারে ...
তিনি মনে করেন একজন নারী শুধু একজন সামান্য নারী নন তিনি একজন বাবার কন্যা, স্বামীর ভালোবাসা , সন্তানের জননী
তিনি শাশ্বত, মায়াবী, চিরন্তনী।
তাইতো তরুণ কবি অর্পিতা ঐশ্বর্য ওর নারী কবিতায় ফুটে উঠেছে একজন নারীর কথা যিনি জয় করতে পারে সব কিছু ।
" আমি নারী , আমি কবির কবিতার প্রতীক হতে পারি ।
আমি শঙ্খচিলের মতো ডানা মেলতে পারি ।
আমি লজ্জাবতী ,আমি রুপান্তরকারী,
আমি অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করতে যানি
আমি করিনা ভয় , কিংবা সংশয় ।
আমি চলার পথে হোঁচট খেলে
একলা একাই উঠে দারাতে পারি ।
আমি কান্নার পরে হাসিমুখে কথা বলতে পারি।
হাজারো কষ্ট পেরিয়ে আমি হিমালয় জয় করি"।
-- অর্পিতা ঐশ্বর্য ।