মুঠোফোন
মুঠোফোন
"সারাদিন ধরে মাথা নিচু করে ঐ হাতের খেলনার মধ্যে যে কি টুক টাক করিস কিছুই বুঝি না,তোদের ঐ বোবা যন্ত্রই দেখবি একদিন সর্বনাশ করবে।"
হতচকিত হয়ে তাকিয়ে দেখি আমাদের পাড়ার রমেনবাবু কথাগুলো আমার উদ্দেশ্যেই বলছে।কিছুটা সম্বিত হয়ে বললাম
"আরে জেঠু কেমন আছেন??"বলতেই উনি বলে উঠলেন - "এখনকার দিনে আর কে কার খোঁজ খবর রাখে বাবা, কারোরই হাতে আর সেই সময় নেই যে দু দণ্ড দাঁড়িয়ে একটু কথা বলবে।"
ওনার যত ক্ষোভ দেখলাম আমাদের মুঠোফোনের ওপর। ওনাকে বোঝানোর চেষ্টা করলাম যে আমরা বর্তমান প্রজন্মও অনেক কিছু করার ইচ্ছে থাকলেও সর্বক্ষেত্রে করে উঠতে পারি না।ওনার সাথে সামান্য কিছু বাক্যালাপ করে আমি চলে গেলাম।তবে ওনার কথাগুলো সারাদিন আমার মাথায় ঘোরপাক খেতে লাগলো। যাতায়াতের পথে লক্ষ্য করলাম ট্রেনে বাসে সবাই স্মার্ট ফোনের মধ্যে যেনো ডুবে রয়েছি।ফোন থেকে নিজেকে একটু সরিয়ে রাখার চেষ্টা করলাম কিন্তু সে কাজে ব্যর্থ।
বাড়িতে ফিরে রাতে শোবার সময় চিন্তা করলাম তাহলে কি আমরা আগের থেকে একটু বেশি আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পরলাম?ছোটবেলায় বিকেল হলেই আমরা মাঠে যাবার জন্য যে পাগলামি করেছি,এখনকার ছোটদের কিন্তু সেই উৎসাহ আর দেখি না।সেটা গ্রাম বাংলার মাঠের দিকে তাকালেই বোঝা যায়।বরং সেই সময়টা তারা এই মুঠোফোনের মধ্যে ঢুকে যায়।এটা অস্বীকার করার জায়গা নেই যে এরা অনেক প্রতিভাবান। যুগের সাথে তাল মিলিয়েই তো চলতে হবে,নইলে পিছিয়ে পড়তে হবে।
আমরা এই প্রযুক্তির মাধ্যমে অনেক এগোতে পারলাম বা পারছি ঠিকই কিন্তু সার্বিক বিকাশ কি হচ্ছে আমাদের?এই প্রশ্নটা কিন্তু মনের মধ্যে থেকেই যাবে।