মুসলিম নারীর খ্রিস্টান হওয়ার গল্প
মুসলিম নারীর খ্রিস্টান হওয়ার গল্প
উনিশ শতকের এক বাঙালি বিদেশফেরত ম্যাজিস্ট্রেটের বিয়ে হল ১০ বছরের এক বালিকার সঙ্গে।এবং সেই সময়ে নারী শিক্ষা বলতে গৃহের কাজ শেখা এবং কোরআন পড়া ও কোরআন খতম দেয়া কে নারী শিক্ষা বলা হতো।বালিকাটিও সেই সময়ের নারী শিক্ষায় শিক্ষিত ছিল।
আরবি ভাষায় কুরআন পড়ার শিক্ষা দেওয়া হলেও ইসলামকে বুঝার মতো কোনো শিক্ষা দেওয়া হতো না। ইসলামি জ্ঞান চর্চা করতে শুধু কোরআন পড়াকে বোঝানো হতো।ইসলামের গভীর এবং সঠিক শিক্ষা হতে বাঙালি নারীরা বঞ্চিত হত।মুসলিম নারীরা ইসলামের সৌন্দর্য এবং গভীর স্বাদ উপভোগ করতে পারতো না।মুসলিম নারীদের গুরুজনরা যে আমলগুলো করত নবীনরাও যুগের পর যুগ তাদের অন্ধ অনুসরণ করতো। ইসলাম মুসলিম নারীদের কেন নামাজ পড়তে বলে কেনো কোরআন শরীফ পড়তে হয় কেনো পর্দা করতে বলা হয় এবং এই আমল গুলো করলে যে সুখের প্লাবনে ডুবে থাকা যায় তা সেকালের মুসলিম নারীরা জানতো না।এক কথায় বলতে গেলে তারা ইসলামকে বুঝে বুঝে আনন্দের সাথে পালন করতো না।
মূল গল্পে ফেরা যাক।ম্যাজিস্ট্রেটের এক ছেলে এবং এক মেয়ে হলো ছেলের বয়স যখন ছয় বছর তখন তার স্ত্রীর মরণ ব্যাধি হলো এবং তাকে হাসপাতালে ভর্তি না করলে কোন ভাবে বাঁচানোর উপায় নেই। সেই সময়ে মুসলিম নারীদের কোনোভাবেই হাসপাতলে নিয়ে যেতে দিতো না তাও আবার হাসপাতালটি ছিল বিধর্মী খ্রিস্টানদের। ম্যাজিস্ট্রেটের মাতো কোনোভাবেই বৌমাকে হাসপাতালে পাঠাবে না জীবনে প্রথমবার ম্যাজিস্ট্রেট মার কথা অমান্য করল এবং বউকে হাসপাতালে ভর্তি করলো এটাই সবার জীবনের কাল হয়ে উঠলো। স্ত্রী নওমী ধীরে ধীরে সুস্থ হতে শুরু করলো এবং তাকে সম্পূর্ণভাবে সুস্থ হতে কয়েক মাস হাসপাতালে অবস্থান করতে হলো। নওমিকে যে সকল খ্রিস্টান নার্স দেখাশোনা করতো তারা মুসলিম নারীকে খ্রিষ্টান করার মতো সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে আনন্দিত হলো। খ্রিষ্টান নার্স যীশুর গুনাগুন এবং খ্রিস্টান ধর্মের মহত্ব বোঝাতে থাকলো।একসময় তাদের প্রচেষ্টা সফল হলো নৌমি মুসলিম থেকে খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহন করলো সোনার সংসার,স্বামী, সন্তান ত্যাগ করে। নাউজুবিল্লাহ। নওমী যে খ্রিস্টান হলো ইসলাম ধর্মের সুন্দর স্বাদ পেয়েও পেলো না।
"হাইরে নিয়তি তুমি কত খেলা খেলো সুখের শিখরে নিয়ে দুঃখ কূপে ফেলো।"(বেগম রোকেয়া)।
গল্পটি বেগম রোকেয়ার"সুলতানার স্বপ্ন"উপন্যাসের সত্যঘটনা অবলম্বনে লেখা।
নওমীর খ্রিস্টান হওয়ার অন্যতম কারণ ছিল ইসলাম ধর্ম কে কখনো সঠিকভাবে জানতে বা সঠিক শিক্ষা গ্রহণ করতে না পারা।আমরা এই আধুনিক যুগে কতটা প্রকৃত শিক্ষা অর্জন করতে পেরেছি আমাদের যুগে শিক্ষার কোনো বাধা নেই বাধা নেই নারীদের কোন কিছু জানতে ও বুঝতে তাহলে কেনো আমরা নওমীর মত অজ্ঞ আছি? কেনো এতো সুযোগ থাকতে আমারা ইসলাম সম্পর্কে সঠিক শিক্ষা গ্রহণ না করে বিধর্মীদের অন্ধভাবে অনুসরণ করছি?নঈমীর মতো কোনো খ্রিষ্টান যদি আমাদের খ্রিষ্টধর্মে ধর্মান্তরিত করতে আসে এবং আমাদের সঠিক ইসলামিক জ্ঞান না থাকায় দৃঢ় ঈমানের অভাবে যদি আমাদের মুসলিম নারী সমাজের কেউ কেউ ভুল পথে পরিচালিত হয় তাহলে আমি অথবা প্রকৃত মুসলিম সমাজ এতোটুকু অবাক হবো না এই যুগে এসে বঙ্গ মুসলিম নারীসমাজ কতটুকু প্রকৃত শিক্ষা অর্জন করতে পেরেছে? আমাদের যুগের সাথে সেকালের মুসলিম নারীদের কি কোন পার্থক্য আদৌ হয়েছে?
