ইউনিভার্স টু
ইউনিভার্স টু


নীল ভেসে চলেছে মহাকাশে , সাথে বন্ধু আন্দ্রে আর, সক্রেটিস। তাদের রকেটের নাম স্যার স্টিফেন হকিং। মহাবিশ্বের কাছে ব্ল্যাক হোলের গূঢ় তথ্যটি সঠিক ভাবে পরিবেশন করতেই নীলদের এই যাত্রা। সামনেই যে গ্রহটি আসছে তাকে দেখে আন্দ্রে বলল "লুক লুক দ্য মুন "। নীল আর সক্রেটিস রকেট কে নির্দেশ দিতেই সেটি ধীরে ধীরে প্রবেশ করলো দ্য মুনে। এরপর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির অভাব হতে পারে ভেবে ওরা দুজনে অ্যাস্ট্রোনট স্যুটটা পরে নিল।
রকেট থেকে নেমেই দুজনে অবাক ! একি এখানে তো, মহা বিশ্বের মতোন ভেসে থাকতে হচ্ছে না বরং পা পড়ছে পৃথিবীর মাটিতে যেমনটি পড়ে ঠিক তেমনটি। তাহলে নিশ্চয়ই ওরা দিক ভ্রষ্ট হয়েছে। এটা চাঁদ নয়। চাঁদ হলে সেখানে মানুষের ওজন কম হবে, ভেসে থাকতে হবে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির অভাবে। দুজনেই যেন একটা বড় সড় রহস্যের গন্ধ পেয়ে গেলো আর তাই কমোর বেঁধে অনুসন্ধানে নেমে পড়লো। নতুন গ্রহ আবিষ্কারের নেশায় তারা যে সময় বুঁদ ঠিক সে সেময় সক্রেটিস বলে উঠল স্যার আইনস্টাইনের সেই মতবাদ মনে আছে নীল, আমাদের ইউনিভার্সের মতোন আরেকটি ইউনিভার্স অবশ্যই আছে মহাবিশ্বে। এই গ্রহটিই যদি সেই গ্রহটা হয়ে থাকে তাহলে ? ভাবো নীল ! আমাদের এই আবিষ্কার কতটা যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে বিজ্ঞান-জগতে। আমরাই হবো সেই ভাগ্যবান অ্যাস্ট্রোনট যারা পৃথিবীতে ব্ল্যাক হোলের বদলে নতুন গ্রহের আবিষ্কারক ! না না নতুন গ্রহ নয় বলে ওঠে নীল ! এ যে অবিকল আরেকটি ইউনিভার্স। কী নাম দেবে সক্রেটিস এই গ্রহের?
সক্রেটিস নাম দেয় "ইউনিভার্স টু" ।
এর পরে সক্রেটিসের নির্দেশে ওরা দুজন ভাগ হয়ে গেলো দুটি দিকে, যাতে গ্রহটাকে চষে ফেলা যায়। পীঠের ব্যাগে পর্যাপ্ত পরিমান খাবার দাবার নিয়ে চলেছে তারা। হাতে আছে নিজের নিজের দেশের পতাকা।
কেমন যেন নীলের মনে হতে লাগলো অনেক রহস্য রয়েছে এই গ্রহের ভিতরে। অক্সিজেনের অভাব না থাকলেও শ্বাসটা নিতে একটু কষ্ট হচ্ছেই। একটা চেনা অথচ বিকট গন্ধ ভাসছে বাতাসে। সেই গন্ধের উৎস কে খুঁজতে খুঁজতে নীল পৌঁছছে পাহাড়ে ঘেরা এক আদিম মানুষের ডেরায়। চেহারায় যাদের সাথে নীল মিল পেল যাদুঘরে দেখা সেই বহু যুগ আগের ইনকা সভ্যতার । তাহলে এই গ্রহটি কি সভ্যতায় পিছিয়ে আছে ইউনিভার্সের চেয়ে ? না কি এটি কোন স্পেশাল স্পেস স্টেশন যেখানে এলিয়ানরাই বসবাস করে? এরা কি হিংস্র , নরখাদক না কি মানুষের মতোন বিচার বুদ্ধি সম্পন্ন? এই প্রশ্ন গুলো মাথাতে ঘোরা ফেরা করতে করতেই কখন যে তাদের সামনে এসে পড়েছে তার টের পায়নি। এ কি কাণ্ড! এরা যে কাপাকোচা। হঠাৎ তার দিকে এগিয়ে আসছে হাতে মশাল নিয়ে তাকে মোমি বানাবে না কি বলি দেবে কোন দেবতার উদ্দেশ্যে কে জানে? এখান থেকে পালাবার উপায় কি হতে পারে? ওদের হাতে কোকা জাতীয় মাদক দ্রব্য যাতে নেশার বস বানাতে পারে অন্যগ্রহের জীবকে। নীলের ব্লু ট্রুথ ওপেন হয়েগেছে। রেসকিউ করতে সক্রেটিস আসছে প্যারাসুট নিয়ে। তাকে ঘিরে উদ্দাম নৃত্য করছে আদিবাসীরা। চিৎকার করছে নীল বাঁচাও বাঁচাও করে...
রুম মেট ডঃ পীটার প্রায় ধাক্কা দিয়ে নীল মানে ডঃ নীলাদ্রি শেখর ব্যানার্জী কে বলে উঠলেন মিস্টার নীল, মিস্টার নীল হ্যাভ ইউ এনি প্রোবলেম? সেমিনার অ্যাটেন্ড করতেই তো ফ্লোরিডা তে গিয়েছিলো নীল, যাবার পথে অবশ্য আর্জেন্টিনার যাদুঘরটা ঘুরে এসেছিল। গাইড সক্রেটিস ইনকা সভ্যতার কাপাকোচাদের অনেক কথা তাকে বুঝিয়ে দিয়েছিল যে... আর আন্দ্রে তার আর্জেন্টিনিও ড্রাইভার ছিল। ঘুম ভাঙতেই কেমন যেন ঘাম দিয়ে জ্বরটা ছাড়ল নীলের মানে ডঃ নীলাদ্রি শেখরের।