Silvia Ghosh

Romance

3  

Silvia Ghosh

Romance

হলুদ হয়ে যাওয়া চিঠি

হলুদ হয়ে যাওয়া চিঠি

2 mins
1.5K


ভূতো,

অনেক দিন পর তোকে চিঠি লিখছি লুকিয়ে। মনে পড়ে তোর সেই আমাকে প্রপোজ করার চিঠির উত্তরে আমি তোকে কি বলেছিলাম? জানি,তোর মনে থাকবে না। যা ভুলো মন তোর!  


বলেছিলাম, ইসসস! ভূতো, একটু দেরি করে ফেললি রে! দেবুদার সাথে বাহুবলী-১ দেখতে গিয়েছিলাম। আর সেই দিন দেবুদা আমাকে ওর মনের কথা বলেছিল। আমি না করতে পারি নি রে। আসলে কি বলতো? মানুষটাকে তুই যতটা খারাপ মনে করতিস মানুষটা অতটাও খারাপ নয়। কারণ, ওতো শুধু আমাকেই ভালোবাসার কথা বলে! তোর মতো টেঁপি, বুঁচি, শম্পা, পম্পা, নীলাকে মনের কথা শেয়ার করে না। হ্যাঁ,হতে পারে একটু কালো, টেকো, একটু তোতলা তাতে কি! সোনার আংটি বাঁকা হয় না কি? তুই বল! আমি ওর প্রস্তাবে রাজি হওয়ার পর যে কি ভীষণ খুশি হয়েছে তুই জানিস না। 


সবচেয়ে বড় কথা কি জানিস? বাবা কিছুটা আন্দাজ করেছিল মনে হয় আর বাবা এই সম্পর্কে খুশি মনে হতো। তাই তো পর পর দু দিন দেবুদার সাথে মানিস্কোয়ারে, ভিক্টোরিয়া, নিউ মার্কেট, ম্যাক-ডি'তে লাঞ্চ করতে যেতে দিয়েছিল। কিন্তু এই যদি তুই বলতিস,

'কাকু ভূতিকে নিয়ে দক্ষিণেশ্বরের মন্দির যাবো' ওমনি বাবা হাজারো প্রশ্ন করে যাওয়াটাকেই নাকচ করতো! 

আর হ্যাঁ! দেবুদা সিনেমা হলে ব্যালকনিতে টিকিট কাটলেও  সাইডের সীট নেয় নি! অন্ধকার হলে সভ্য-ভদ্র হয়েই বসেছিল, তোর মতো হাত ধরে....


ওসব কিছু করে নি। শুধু নাক ডাকছিল মাঝে মাঝে, একটু ঠেলা দিতে আবার ঠিক হয়ে বসেই নাকটা ডাকছিল। তবে হ্যাঁ, এই বার ভিক্টোরিয়াতে গিয়ে আমি ভিক্টোরিয়ার আসল ইতিহাসটা জানলাম। তোর সাথে যে ক'বার গেছি সে ক'বার তো বড় গাছ খুঁজতেই সময় লেগেছিল! এবার কিন্তু আমি দারুণ এনজয় করেছিলাম। সারাদিন ঐ ভিক্টোরিয়ার ইতিহাস শুনতেই লেগে গেল। তোতলা হলে কি হবে প্রচুর জ্ঞান মানুষটার!


এই দেখ,আমার কথাই সব বলে গেলাম। কি জানিস ভূতো, যেদিন দেবুদা আমাকে সাইকেল করে টিউশনি থেকে বাড়ি আনছিল, সেদিন তুই রাস্তায় আমাকে চড় মেরেছিলিস বলে তোর সাথে তিন দিন কথা বলি নি। আজ বুঝতে পারি সেদিন এই চিঠির কথাটাই তুই বলতে চেয়েছিলিস। তবে চড় না মেরে মুখে বললেই তো সব মিটে যেত রে। যাক! এর পরে আর ভুল করিস না। নীলা, টেঁপি, বুঁচি যাকে ভালোবাসবি, একদম স্ট্রেটকাট বলে দিবি। নইলে লাড্ডু মিস করবি! সবাই তো আর ভূতি নয়, চড়টা ভালোবাসার জন্যই ছিল জেনে নিয়ে হজম করবে! দু ঘা রাস্তাতেই তারাও দিতে পারে।তাই প্রথমেই সবটা বলে নিলে লাভটা তোরই হবে রে পাগলা। 

   

চলি রে, সংসারের অনেক কাজ বাকী পরে আছে। দেবু দার আর পক্ষের মেয়েটা আমার খুব ন্যাওটা। মা মা করে সব সময়। ভালো থাকিস রে। নতুন খবর থাকলে এই ঠিকানায় জানাস। 

     

 ইতি 

তোর(?????)ভূতি


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance