একটুর জন্য ভুল বুঝে
একটুর জন্য ভুল বুঝে
একটি ছেলে ও একটি মেয়ে ছিল সবচেয়ে ভালো বন্ধু। নাম বিকাশ ও তিথি।
তারা ফোনে তাদের সমস্ত সময় ব্যয় করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলতে পারত। এবং যখন তারা একে অপরের সাথে কথা বলতো তখন মনে হোতো যে তাদের নিজস্ব পৃথিবীতে কিছুই ভুল নেই, সব ঠিকঠাক চলছে। তারা সেই মুহুর্তগুলিতে খুব সুখী মনে হোতো।
হঠাৎ একদিন সব কেমন দুজনের জন্য ওলোট পালট হতে লাগলো।
একদিন, বিকাশকে তিথি টেক্সট করেছিল এবং সে উত্তর দেয়নি যা সবচেয়ে অস্বাভাবিক ছিল। সে আবার চেষ্টা করল কিন্তু কোন লাভ হল না। অবশেষে, তিথি বিকাশকে কল দিলো কিন্তু কোন উত্তর নেই।
পুরো একটা দিন কেটে গেল এবং ছেলেটিকে ফোন বা টেক্সটের মাধ্যমে পাওয়া গেল না। মেয়েটি চিন্তিত হতে শুরু করে যে কিছু একটা নিশ্চয়ই ভুল হয়েছে।দুরুদুরু মনে অনেক আশঙ্কার ঝিলিক দিয়ে যাচ্ছে, যা তিথিকে রোজকার কাজ স্বাভাবিক ভাবে করতে দিচ্ছেনা।
মা বাবা ভাই বোন তার এই আনমোনা স্বভাবের সাথে অবগত ছিলেন না আগে। সবাইকে তিথি একই উত্তর দিয়েছে, ওহ্ কিছু না।
পুরো আরো একটা দিন কেটে গেল এবং বিকাশকে ফোন বা টেক্সটের মাধ্যমে পাওয়া গেল না। তিথি চিন্তিত হতে শুরু করে যে কিছু একটা নিশ্চয়ই ভুল হয়েছে। সেই দ্বিতীয় রাতে, মেয়েটি ঘুমাতে পারেনি এবং সারা রাত চিন্তিত ও কাঁদতে থাকে। তখনই সে বুঝতে পেরেছিল যে ছেলেটি আসলে তার কাছে কতটা গুরুত্বপূ্র্ণ। পরের দিন সকালে অবশ্য তার ফোন আসে। বিকাশ ছিল! তিথি খুব খুশি হয়েছিল এবং যত তাড়াতাড়ি সে কলটি ধরল…
বিকাশ:- আরে! কেমন আছো?
তিথি:-তোমার কথা শুনে খুব খুশি হলাম, কি হয়েছে? ফোন বন্ধ?
বিকাশ:- আমি… আমি… ব্যস্ত ছিলাম।
[মেয়েটি জানত যে কিছু সে কিছু গোপন করছিল কিন্তু সে জিজ্ঞাসা করতে পারেনি।] [নীরবতা]
বিকাশ: আপনি কি জানেন, আমাদের এই সম্পর্কটা এখন থামানো উচিত। আমাদের আর কথা বলা উচিত নয়।
তিথি:- [ স্তব্ধ নীরবতা ] কি? কেন?
বিকাশ:- সরি। বিদায়। [বিকাশ কল কেটে দেয়। তিথি, মেয়েটি এটি বিশ্বাস করতে পারে না, যেন সে তার একটি অংশ হারিয়েছে।
তাদের অতীতের সব কথোপকথন তার চোখের সামনে ভেসে উঠল। সে কাঁদতে লাগলো, তার মুখ দিয়ে অশ্রু ঝরছে। তিথি হারিয়ে গিয়েছিলো এবং বিভ্রান্ত ছিলো।
তিথি ভাঙ্গা, দু: খিত এবং একা বোধ করলো। তারপরে তিথি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো যে তিথি বিকাশকে আবার বোঝাতে চেষ্টা করবে।
[সে তার নম্বর ডায়াল করল]
তিথি:- আরে,ফোন কাটলে কেন।
বিকাশ: তুমি আমাকে কিসের জন্য কল করেছিলে?
তিথি:- আমাকে কিছু বলতে হবে।
বিকাশ:- যাও,ভালো লাগছেনা।
তিথি:- আমি শুধু একটা কথাই বলতে চেয়েছিলাম... [তার কন্ঠ চেপে গেল। "সে আমাকে পাত্তা দেয় না," সে ভাবল।]
বিকাশ: বলো তো! বলো!শুনি!
তিথি:- তুমি ঠিক আছো? [নীরবতা] তার মুখ দিয়ে আবার অশ্রু প্রবাহিত হচ্ছিল। সে ফোন কেটে দিল, এবং একটি চিরকুট লেখার সিদ্ধান্ত নিল এবং তা নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।
[ছয় ঘণ্টা কেটে গেল]
[বিকাশের ঘরের ফোন বেজে উঠল]
এটা তিথির মা ফোন করেছে। তিনি তাকে বলেন যে মেয়েটি যখন বিকাশের কাছে যাচ্ছিলো, যাওয়ার পথে একটি গাড়ির সাথে ধাক্কা খেয়েছিল এবং তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিকাশ কাল বিলম্ব না করে পৌঁছে তার নামে ডাকলো, তিথি তার চোখ খুললো।
বিকাশ:- ভালো থেকো, আমি দুঃখিত।
তিথি :-তুমি এমন করলে কেন?
বিকাশ:- আমার হার্টের সমস্যা আছে, সদ্য জানলাম এবং আমার এই অবস্থার জন্য ডাক্তার আমায় ওপেন হার্ট সার্জারির কথা বলায় আমি ভয় পেয়েছিলাম, তোমাকে ব্যাথা দিতে চাইনি, বিয়ে করে যদি আমার কিছু হয়ে যায়, তার থেকে তোমার থেকে দূরত্ব নিয়ে সরে এসেছিলাম।
আমি ভাবছি যাক একটুর জন্য ওদের প্রেমটা বেচে গেলো। দুদিন আগে তিথি বিকাশদের বাড়ি গিয়েছিলাম, বেশ আছে। ওদের একটা ফুটফুটে মেয়ে হয়েছে, নাম দিয়েছে এলেক্সা, উহু উত্তর দেয়না, কেবল প্রশ্ন করে।একেবারে তুবড়ি।