Rukhsana Akhtar

Inspirational

4.3  

Rukhsana Akhtar

Inspirational

ডাইরির সেই পাতাগুলো

ডাইরির সেই পাতাগুলো

3 mins
619



    পর্ব :-২

কলমে :- রুখসা


  ক্লাসে আসতেই হঠাৎ এক কাছাড় খেলাম। খুব বেশি না হলেও একটু তো লেগেইছে। আমাকে পড়তে দেখে অনু(আনিশা), ইপশু(ইপশিকা), বিদু মোটি(বিদিপ্তা), লালা(আইরি) হাসতে আরাম্ব করল। তখন রিদ্ধিমা ম্যাম ওদের দিকে ভ্রু কু্ঁচকে বললো -- 

----- এই অঙ্ক গুলো না করে তোরা হাসছিস কেন?? 

   তখনই ইপশু বলে উঠল--

----- ম্যাম সানা কাছাড় খেয়েছে। 

   আবার হাসছে। আর এদিকে আমি মনে মনে ওদের গাল দিতে লাগলাম -- শালা হারামি, ছুঁচোর বউ, লাল হাতি, নীল কুমির। আমি পড়ে গেছি আর ওনারা ওখানে দাঁত কেল্লাছেন। মন চাইছে ওগুলোকে মেরে উগান্ডায় পাঠিয়েদি। 

   কি আর করার নিজেই উঠে পড়লাম আর জামা ঝারতে শুরু করলাম। তখনই ম্যাম এসে বললেন ---

-----খুব জোরে লেগছে??? 

----- না ম্যাম খুব বেশি লাগেনি। 

----- যা স্যাবলন লাগিয়ে নে। 

 স্যাবলনের কথা বলতেই ওরা আবার আরো জোরে হাসতে শুরু করল। ম্যাম আবার বলে উঠলেন --

-----তোরা আবার হাসিস। মেয়েটা পড়ে গেছে কোথায় সাহায্য করবি না হাসছিস।  

    তখন অনু বেঞ্ছ থেকে বেরিয়ে এলো।ম্যাম বললেন ---

-----থাক ও উঠে গেছে। তোদের আর আসতে হবে না।

  অনু মুখ দেখে যা বুজলাম ও হয় ম্যাম নয় আমাকে গালি দিচ্ছে। 

 হঠাৎ ম্যাম বলল --

-----তা তোরা স্যাবলন নিয়ে হাসছিস কেন??

  তখনই বিদু বলে ওঠল

 ----- ম্যাম হয়েছে কি এর আগের বছর সানার পা মোচকে টেন্ডন কেটে গিয়েছিল তো ও খু্রিয়ে খুরিয়ে চলছিল তা দেখে রুবাই কাকু স্যাবলন লাগাতে বলেছিল। 

  কথাটা বললেই আবার দাঁত ক্যালাতে লাগল। আর আমি যদিও একটু আগে চোখের ইশারায় বলতে বারণ করে ছিলাম তবুও হেসে দিলাম। ইভেন ম্যাম ও হেসে ফেলেছিলেন। সেদিনের মতো অঙ্ক ক্লাস ওখানেই শেষ হয়েছিল। 

  ক্লাস শেষ হতে সবাই আমায় ঘিরে ধরল । তাদের মেন প্রশ্ন আমি টিচার্স রুমে কি করছিলিম।

  তখন আমি ভাবতে লাগলাম ম্যামের বলা কথা গুলি যদি সত্যি ওই টিচার আমাদের বাড়িতে থাকে তবে আমি পড়ব পড়ব মহা ফ্যাসাদে। মা সারাক্ষন পড়তে বসিয়ে রাখতে পারবে। কান্না পাচ্ছে খুব। 

  হঠাৎ মনে হল কেউ মাথায় এক টালা দিল পিছন দিক থেকে আর আমি বাস্তবে ফিরে এলাম। পিছন ফিরে দেখি আমার হারামি দোস্ত গুলো আমার দিকে উৎসুক হয়ে তাকিয়ে আছে। আমি বললাম --

----- হা করে তাকিয়ে আছিস কেন?? 

লালু এতক্ষণ চুপচাপ তাকিয়ে ছিল। এবার বলে উঠলো -

----- রাইসানা তুমি কোন জগৎ এ ছিলে?? আমারা ৫মিনিট ধরে তোমাকে ডাকছি শুনতে পাওনি তুমি?? 

কি হয়েছে?? এমন মন মরা কেন?? 

তারপর অনু বলল --

-----ওই ঢ্যা* চুপ করে আছিস কেন??? 

এবার আমি সবটা খুলে বললাম। এটা শুনে ইপশু বলল --

----- তুই যেখানে যাস কিছু না কিছু ধান্দা নিয়ে বল। 

কথা বলেই হাসিতে ফেটে পড়ল সবাই। দিয়ে বললাম---

----- আমি ধান্দা নিয়ে যাই না ওই হারামজাদা ধান্দা আমার পিছনে আসে। টিচার এর মেয়ে হওয়া যে কতটা দুঃখের তা আমার থেকে কেউ আর ভালো জানে না। 

  হঠাৎ বিদু বলল --

----- ছাড় তো ওসব কথা এমন তো নয় যে তোদের বাড়িতেই থাকবে?? নাও তো থাকতে পারে বাদদে ওসব কথা।

   আমিও দেখলাম মন খারাপ করে কোনো লাভ নেই যা হবার হবে তাই বললাম --

----- Hmm, leave it. ছাড় ওসব। 

   তখনই ইপশু মাথায় এক টালা দিয়ে বলল --

----- কুত্তি যে তুই কবে ওই ইংরেজ গুলোর মতো ইংরেজি বলা ছাড়বি ?? 

অনু হাসতে হাসতে বলল --

----- ও কি করে ছাড়বে ওর বাপ ইংলিশ টিচার ও কী করে ছাড়ে বল!! 

বিদু বলল --

----- ও ইংরেজি ছাড়তে পারবে নাই। 

অনু বলল --

----- ও যদি ইংরেজি বলা ছাড়ে তবে আমরা কাকে ইংরেজি বাঁদরী বলে জালাব?? (এটা জ্বীব কেটে ঘুরে গেল) 

  বাকি সবাই হাসিতে ফেটে পড়ল। আর আমি একটা দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লাম কারন ওদের এসব কথায় আমি অভ্যস্ত। তখন লালু বলে উঠল --

----- রাইসানা একবার ইংরেজ গুলো নকল করো না। 

আমি বললাম - 

----- তুই তো বললি নকল না করতে। তাই করব না। (আমার একটা ফালতু বৈশিষ্ট্য আছে আমি যে কোনো ইংরেজের নকল করতে পারি। আর এটা নিয়েই ওরা খুব মজা করে। ) 

   

   সেদিন স্কুল টাইমটা ওমন ভাবে কেটে গেল। ঘরে ফিরে এসে ড্রেস চেঞ্জ করে নিলাম ফ্রেস হয়ে নিলাম। দিয়ে খেতে গেলাম। খাবার পর আম্মুকে বললাম--

----- মা আজকে রিনা ম্যাম বললেন যে আমাদের স্কুলে নতুন মুসলিম টিচার আসছেন। তো উনি আমাদের বাড়ি ভাড়া নিবেন। 

তখন আম্মু যা বলল শুনেই......


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Inspirational