PIJUS SARKAR

Classics

4.3  

PIJUS SARKAR

Classics

বুড়ো বর

বুড়ো বর

2 mins
368



ওরা তিন বোন -- শেলি, মিলি আর জুলি। বেশ কয়েকবছর পর বিয়ে হল জুলির। বিয়ের দিনটা হই-হই করে দারুণ আনন্দে কাটল কিন্তু পরদিন কন্যা-বিদায়ের সময় দুই দিদি কেঁদে ভাসাল। কোলের মেয়েকে বিদায়দানের মুহূর্তে তাদের মা-ও কাঁদলেন খুব। একদিকে আনন্দ -- তিনমেয়েকেই তিনি উপযুক্ত বাড়িতে বিয়ে দিতে পেরেছেন কিন্তু ছোটোটিও শ্বশুরবাড়ি চলে যাবার পর তো তাঁদের দুজনকেও গোটা বাড়িতে পরস্পর নির্ভর জীবন কাটাতে হবে। আনন্দ - বিষাদের মাঝে মিলিয়ে গেল বিদায়ের পদধ্বনি। বউভাতের পরদিন থেকে শেলি আর মিলি বাপের বাড়িতেই রয়ে গেল কয়েকটা দিন।

   আটদিন কেটে সেদিন নবম দিন। দ্বিরাগমনে আসবে জুলি নববধূর বেশে সঙ্গে নতুন জামাই রাহুলকে নিয়ে। পূজার ঘরে শেলি আর মিলি হাপুস নয়নে কেঁদে চলেছে। প্রদীপ জ্বেলে ঘরের ঠাকুরকে সাজাতে এসে তাদের মা তো অবাক -- " একি রে! এক্ষুণি জুলি এসে পড়ল বলে, কত আনন্দের কথা আর তোরা কিনা বসে বসে কাঁদছিস ! তোদের দুজনের ব্যাপারটা কী খুলে বল দেখি !"

    চোখ মুছে মিলি বলল, "মা গো -- জুলির সঙ্গে রাহুলের বয়সের ডিফারেন্স মাত্র তিন বছর, সেখানে আমাদের দু'বোনকে দুটো বুড়োর হাতে তুলে দিলে মা !"

মায়ের তো চোখ কপালে --"বলিস কী ! তোরা দু'বোনেই তো মা হয়ে গেছিস সেই কবেই -- আর এখন মনে হচ্ছে আমি তোদের দু'বোনকে বুড়োদের হাতে তুলে দিয়েছি ! তোদের তিনবোনকে যে পড়াশুনো করাতে, বড়ো করতে, বিয়ে দিতে গিয়ে তোদের বাবাও তো বুড়ো হয়ে গেছে -- তা আমি নালিশ জানাবো কার কাছে !"

    এতক্ষণ দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে চুপচাপ সব কথাবার্তাই শুনছিল জুলি। মিষ্টির হাঁড়ি হাতে হাসিমুখে পাশে দাঁড়িয়ে রাহুল। ঘরে ঢুকে এসে জুলি বলল, " ওরে আমার দুই দিদি -- তোরা আর দুঃখ করিস না রে ! জামাইবাবুরা তোদের চেয়ে বয়সের হিসেবে একটু বড়ো ঠিকই কিন্তু তাদের কারোরই চুল-দাড়ি-গোঁফ কোনোটাই এখনও পাকে নি। আর আমার এই কচি বর চুলে কলপ দিয়ে দু-দুটো দাঁত ইমপ্ল্যাণ্ট করে বিয়ে করতে এসেছিল। কালই তো নিজে ওর চুলে ন্যাচারাল ব্রাউন কালার লাগিয়ে ফ্রেশ করে নিয়ে এসেছি। এবার বল দেখি বুড়ো জুটলো কার কপালে !"

           ---------------


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Classics