বিসর্জন
বিসর্জন
পুজোর আর বেশিদিন বাকি নেই।কিন্তু নীহারিকার মন ভীষণ উদাস।প্রতি বছর সে নিজের বাড়িতে ঘটা করে পুজো পালন করতে যেত কলকাতায়।উত্তর কলকাতার বাগবাজার,কুমোরটুলি তাকে পুজোর দিনগুলোতে ভীষণ টানে।তাই সে থাকতে পারেনা সেই কদিন বিদেশ বিভুঁইয়ে।
কিন্তু এবারের অফিসের যা চাপ,কিছুই করার নেই তার।ভেবেছিল অফিসের বস কে বলে কদিনের ছুটি ম্যানেজ করবে, কিন্তু সেটি হবার জো দেখছে না।তাই অগত্যা গোছানো ব্যাগপত্তর সব আবার প্রায় খুলতেই যাচ্ছিল।হঠাৎ মোবাইলের রিং টোন বেজে ওঠে,
"বাজলো তোমার আগমনী",যতই বাইরে থাকুক মনটা কিন্তু পুরোপুরি স্বদেশী।
"হ্যালো মিস সেন,হ্যাভ ইউ কম্পলিটেড দ্য টাস্ক গিভেন টু ইউ,দ্য প্রোজেক্ট ওয়ার্ক ,দ্য রেস্পন্সিবিলিটি অফ হুইছ ওয়াস কমপ্লিটলি ইওয়ার্স?"
নীহারিকা একটু থতমত খেয়ে গেল।হঠাৎ এই রাত বিরেতে বসের ফোন সে একেবারেই ভাবেনি।
"ইয়েস স্যার,আই হ্যাভ ডান দ্যাট,"হঠাৎ ফোনের ওপারে ছোট্ট একটা হালকা হাসি।
নাম্বার না দেখেই ফোন ধরে স্যার এর মতোই গলা পেলো,তাই আর সন্দেহ করেনি।
নীহারিকা ঠিক বুঝতে পারলোনা কি ব্যাপার।
"বাব্বা,কি দায়িত্ব,সব কাজ করে রেখেছি, ওহ,বসের কথায় একেবারে ওঠে বসে",রাতুলের গলা।
রাতুল,ওর কলিগ, আমেরিকার যে কোম্পানি তে ওকে প্রোজেক্ট এর কাজে পাঠানো হয়েছে সেখানে রাতুল ও ওর সঙ্গী,বলতে পারা যায় জীবনসঙ্গী ও বটে।ওরা ভেবেছিল লিভ টুগেদার করবে,কিন্তু নীহারিকার দেশীয় চিন্তাভাবনা ওকে সেই চিন্তা থেকে বিরত করে ।
হঠাৎ করে এত চিন্তার মধ্যে রাতুলের গলা শুনে ও খুব বিরক্ত বোধ করে।কিন্তু পরক্ষণেই বিরক্তি প্রচুর আনন্দে বদলে যায় যখন কানে আসে,"শোনো বস কে বুঝিয়ে সুঝিয়ে কয়েকদিনের ছুটি আদায় করলাম।প্রচুর ঝাড়লো,কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই বাঙালির পুজো তাকে আটকাতে দিলো না দুটো ভোমরাকে।ছাড়তে বাধ্য হলো।"
"কি করে ম্যানেজ করলে?"
"আম খাও,কিন্তু গাছের সন্ধান কোরো না"।বেশি কিছু বলতে গেলে রাতুলের এই উত্তর ই হয়।
আসলে রাতুল হলো নীহারিকার একদম পাশের বাড়ির ছোট্টবেলার বন্ধু।খুব ছোটবেলা থেকে দুজনে একসাথে অনেকগুলো মুহূর্ত কাটিয়েছে।আর ও নীহারিকা কে হাড়ে হাড়ে চেনে।ও টেনশন করলে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যায় সে খবর ও রাখে ।তাই সকাল থেকে অফিসে নীহারিকার মুখ ভার দেখেই বুঝেছিলো কিছু হয়েছে।
পুজোতে নিদেনপক্ষে প্রেম করার একটু সময় পাবে।এখানে যা কাজের চাপ তাতে দুবেলা দেখাটাই ভালো করে হয়না।তার ওপর আবার প্রেম।
ফোনের ওপার থেকে উড়ন্ত চুমু দিয়ে আপাতত আজকের রাতের ঘুমের শুরু।
সব টেনশন এর ইতি হয়ে আপাতত আবার ব্যাগ গুছিয়ে শুতে গেল।
বাড়ির কথা আজ নীহারিকার ভীষণ মনে পড়লো।
ভোর থেকে ঢাকের আওয়াজ,হালকা করে রবীন্দ্রসংগীত,তারপর জলখাবারে লুচি বোঁদে,বাড়িতে সবার সাথে প্রচুর আড্ডা রীতিমতো জমে যায় ।
মাঝে বড় জেঠু মারা যাওয়ার কারণে একবছর পুজো বন্ধ ছিল।সে বছর খুব কষ্ট পেয়েছিল সবাই।খুব খুব মিস করছিল সারাবাড়িতে সেই ঢাকের আওয়াজ চারদিন ধরে।
মা বাবার সাথে তো ফোনে বেশি কথাই হয় না।আর এই ব্যস্ততার সময়ে কথা বলবেই বা কি করে,সময় তো নয় দশ ঘন্টার পার্থক্য।ভারতে যখন রাত বারোটা,আমেরিকায় দুপুর দেড়টা।ইচ্ছে থাকলেও বেশ কয়েকদিন পরপর কথা হয়।অতরাত অব্দি মা বাবা কে ও জেগে থাকতে বারণ করে।।আর এই পুজোতে তো মা হাঁ করে পথ চেয়ে বসে থাকে কবে নীহারিকা আসবে ।
যে কয়েকটা দিন বাড়িতে কাটায়, বেশ মজা হয় হুল্লোড়ে কাটে।
ছাদে উঠে ভাই বোনদের সাথে ঘুড়ি ওড়াতে যায়।ঘুড়িটা যখন তলাই যায়,ওর মনে হয় ও ওই ঘুড়ির মত হুরহুর করে ওপরে উঠে যাবে।হাওয়ায় ভাসতে থাকে ওর পুরো আত্মা।নিজেকে এক মুহূর্তের জন্য খুব হালকা মনে হয়।মনে হয় এই এখুনি উড়ে ও মা বাপির কাছেই চলে আসবে।
কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে কোনো হুঁশ নেই নীহারিকার।
পরদিন ভোর ছয় টায় ফ্লাইট।কিন্তু সারারাত আনন্দে আর দু চোখের পাতা এক করতে পারলো না।চোখের সামনে বাড়ির পুজো দালান,ঢাক,ঢাকি, সব ভেসে উঠছে।অদ্ভুত ভাবে চোখ বুজলেও ঘুম এলোনা।সে বুঝলো এগুলো অতিরিক্ত উত্তেজনার ফল।
পরদিন সক্কাল সক্কাল গাড়ির হর্ন।রাতুল এসে গেছে।ফ্ল্যাট এর জানালা দিয়ে উঁকি মেরে দেখলো গাড়ি থেকে হাত নাড়ছে।রেডি হয়ে চললো এয়ারপোর্টের দিকে।
চেক ইন করে ঘন্টা দুই ধরে এদিক ওদিক কফি স্যান্ডউইচ খেয়ে ঘন্টা দুই কাটাবার পর আসে গন্তব্যে পৌঁছানোর সেই বাহন।
ফ্লাইট এ ওদের পাশাপাশি সিট পড়ে না।শেষ মুহূর্তে টিকিট বুকিং এর জন্যই হয়তো এই সমস্যা।সে যাই হোক,নীহারিকা জানলার ধারে সিট পেয়েছে।দেখতে পাচ্ছে উড়ন্ত মেঘ তার সাথে সাথেই চলেছে।নিজের সিট ঠিকঠাক করে পিছনে তাকাতেই ওর চোখ ছানাবড়া।রাতুলের পাশের সিটে কে ওটা!ময়ূরী!ও এখানে কি করে!একরাশ জিজ্ঞাসা নিয়ে ও রাতুলের দিকে তাকিয়ে রইলো।
ময়ূরী রাতুল আর নীহারিকার বন্ধু,মানে কলেজের বন্ধু।কলেজ থেকেই অনেক বার প্রোপোজ করেছিল রাতুল কে।তবে রাতুল পাত্তা দেয়নি।তারপর শুনেছিল কোন এক কোম্পানি তে কাজ নিয়ে চলে যায় বিদেশ।কিন্তু এখানে ও কি করছে!
যাইহোক,রাতুলের পাশে বসাটা দেখে নীহারিকার রাগ ধরতে শুরু করে।ঠিক করলো ঝগড়াটা নেমে ভালো করে করবে।
আর কোনদিকে মন না দিয়ে জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে রইলো
নীহারিকার মন এক নিমেষে সাঁতার কেটে গভীর ঘুমের দেশে পাড়ি দেয়।
বেশ কয়েকঘন্টা পর তার সেই চেনা ছোট্টবেলার শহরটা আবার চোখের সামনে এসে পড়ে।সেই ট্রাম,সেই বাস ট্রেনের অদম্য আওয়াজ,সেই এক মুহূর্ত না থামা সময়ের ছবি সেই পুরনো দিনের সব ছোট ছোট স্মৃতি আবার ফিরিয়ে দেয়।
রাতুলের সাথে প্রেমের দিনগুলোয় রি কলকাতা তার চষে খাওয়া হতো।
হঠাৎ এইসব কথা ভাবতে ভাবতেই ওকে জিজ্ঞাসা করলো,"হাঁরে ওটা ময়ূরী না!তোর পাশে ছিল!ও ওখানে কি ব্যাপার?জানিস কিছু?কথা বললি নাকি!"
"বাব্বা দূর থেকে তো সব লক্ষ্য রেখেছিস দেখছি,আর বাব্বা নামতেই প্রশ্নবাণে জখম!
না কথা স
েরকম বলিনি।ওই আর কি ।"
বেশি কথা না বাড়িয়ে মোবাইলে ট্যাক্সি বুকিং করে ডাকলো।
চারিদিকে অদ্ভুত এক পুজো পুজো গন্ধ।কুমোরটুলিতে মা ধীরে ধীরে নতুন রূপে সেজে উঠছেন।কয়েকদিন হাতে ওদের।বাড়িতে ঢুকতেই মায়ের মনমোহনী রূপ দেখে নীহারিকার চোখে ভর্তি জল।সেই ছোট্টবেলার সব স্মৃতি একে একে টানতে লাগলো ওকে।সবটা মিশিয়ে এক চূড়ান্ত নস্টালজিয়া তাও আবার জন্মভূমিতে দাঁড়িয়েই।
রাতুল সারা রাস্তা বেশি কথা বলেনি।একটু হালকা গম্ভীর ছিল।ও জানেনা এর কারণ।তবে কিছু নিশ্চয়ই আন্দাজ করছে।
সে যাই হোক,নীহারিকা ঠিক করেছে এই পুজোর কদিন চূড়ান্তভাবে প্রেম করবে।ব্যাস।আর কোনো কথা নয়।
বাড়িতে এসে সবার সাথে দেদার আড্ডা মেরে এবার ও একটু ক্লান্ত।তাই আর রাতুলকে ফোন করেনি।কিন্তু এটা কি হলো!ও বাড়ি গিয়ে নীহারিকাকে একটাও ফোন করলো না!এতদিনে এরকম তো কোনোদিন হয়নি।এটা ওটা চিন্তা করছিল।কিন্তু শারীরিক ক্লান্তি সব ভুলিয়ে দিয়ে তাকে ঘুম পাড়িয়ে দিলো।
ভোর বেলা মোবাইলটা টুং টুং করে বেজে উঠলো।চোখ রগড়ে একদম প্রায় না খুলতে পেরে মোবাইল টা হাতে নিয়ে দেখে রাতুলের মেসেজ।
"আই আম এক্সট্রিমলী সরি।"
ও ঠিক বুঝতে পারলো না।রাতুল মাঝে মধ্যে পাগলামি করে।তাই অত গুরুত্ব না দিয়ে পাশের বালিশ নিয়ে ওদিকে ফিরে আরো কিছুক্ষণ ঘুম দিলো।
মানুষের অচেতন মনে কিছু কিছু ব্যাপার এমন রয়ে যায় যা সে নিজেও চায় না মনে করতে।আর সেরকম ই ভেসে উঠলো ময়ূরীর মুখ হঠাৎ।নীহারিকা যেন দেখছে রাতুল ময়ূরীকে প্রানপন ভাবে আদর করছে।এটা সে কি দেখছে!কেন দেখছে!এইসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ ওর ঘুম পুরো তছনছ।
কি সব ভাবছে ও!যত্ত সব আলফাল চিন্তা ভাবনা !
ফ্রেশ হয়ে রেডি হলো।ভাবলো এবার রাতুলকে একটা ফোন করা দরকার।অদ্ভুত ভাবে কেন ও সকালে ওই মেসেজ করলো জানতে হবে।
যত্ত বার ফোন করছে ফোন ব্যস্ত।
"আরে তোকে কতবার ফোন করেছি দ্যাখ,এতক্ষন ধরে কার সাথে কথা বলছিলি?"
অনেকবার ফোন করার পর যখন রাতুলের ফোনটা পায় তখন এক অদ্ভুত শীতলতা অনুভব করে রাতুলের গলায়।
"হ্যাঁ বল।"
"হ্যাঁ বল মানে!কাল বাড়ি ফেরা থেকে কোনো ফোন করিসনি কি ব্যাপার।আবার সকালে কি সব সরি ফরি বলে মেসেজ,এই কি হয়েছে রে?"
"কিছু না ছাড় বাদ দে।"
বলাবাহুল্য রাতুলের এই ধরণের ব্যবহার সে কখনোই আশা করেনি।
সকাল থেকে ঢাক ঢোল বাজছে।আজ পঞ্চমী।আজ তো নীহারিকার রাতুলের সাথে হোল-নাইট প্ল্যান।মা বাবা প্রত্যেকবারই ঘ্যানর ঘ্যানর করলেও শেষমেষ রাজি করিয়েই ফেলে ওরা।এবারেও তাই হলো।লোকাল সমস্ত ঠাকুর দেখে সাউথ এর দিকে যাবে,একডালিয়ার রাস্তাটা সবে ধরেছে,রাতুলের ফোন বেজে উঠলো।একটু দূরে গাড়িতে এগোতেই নীহারিকার চোখে পড়লো সুন্দরী ময়ূরীর মুখ।ও এমনিতেই সুন্দরী,ফর্সা,চোখগুলো টানা,আর সেজেছে তো আরো সুন্দর লাগছে।
"রাতুল বলিস নি তো ময়ূরী আসছে আমাদের সাথে?"
ও বেশি কথা না বলে পার্কের কাছে গাড়িটা দাঁড়াতে বলে ময়ূরীকে গাড়িতে উঠতে বললো।নীহারিকার কাছে পুরো ব্যাপারটা কিরকম লাগছে একটা।কি হচ্ছে এটা ওর সাথে।
আর এটা সত্যিকারের সেই রাতুল।
না ,নীহারিকার সব কেমন গুলিয়ে যাচ্ছে।ময়ূরী গাড়িতে ওঠার পরই নীহারিকা জানলার দিকে মুখ করেছে।ওরা সমানে গাড়ির মধ্যে হেসে চলেছে।এবার নীহারিকার খুব অস্বস্তি হলো।
"কিরে নীহারিকা ,কেমন আছিস?"উচ্চারণটা একটু পাল্টে গিয়েছিল।কিন্তু যতই বিদেশে থাকো,যতই গায়ে বিদেশি স্নো পাউডার মাখো,স্বদেশী ন্যাকামো যাবে কোথায়!
"তুই ড্রিংক করেছিস?"নীহারিকা রেগে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলো।"রাতুল তুই দেখতে পাচ্ছিস না ও কি করছে?ও ড্রিংক করেছে।"
"তুই করিস না বলে কি কেউ করবে না?"রাতুলের নিশ্চুপ উত্তর।
"তোকে বলাই হয়নি।উই আর এনগেজড নাও।"হঠাৎ করে নিস্তব্ধতা ভাঙ্গে ওর কথায়।
"মানে টা কি?কি সব নেশার ঘোরে ভুলভাল বকছিস?"নীহারিকা এক মুহূর্তের জন্য থেমে যায়।
"গতকাল রাতে আমি বাড়ি ফিরিনি।ময়ূরী ওর ফ্ল্যাট এ আমায় ডেকেছিল।"কোনোদিন এই উত্তর শুনতে হবে সে আশাই করেনি।
"কি বলছিস তুই?রাতুল, চুপ কর।কি সব বলছিস?"
"হ্যাঁ ও আমার ফ্ল্যাট এই ছিল।এই তুই ওকে যা দিতে পরিসনি,আমি ওকে দিয়েছি।বুঝলি।এবার ইউ আর এ লুজার।"ময়ূরী খুব জোরে হাসতে লাগলো।
"তোরা কি দুজনে পাগল হয়ে গেলি?"নীহারিকার কেমন একটা শরীর খারাও লাগছে।কপালে টিপটিপ করে ঘাম জমছে।গা টা গুলাচ্ছে।এসব কি শুনছে।
"রাতুল আমায় বাড়ি পৌঁছে দে।আমি বাড়ি যাবো।"ও এর পারছেনা।
"বাড়ি?কে বাড়ি যাবে?আমরা এখন অনেক ঘুরবো।দাঁড়া!"সাথে সাথে রাতুলের উত্তর।
রাতুলের মুখ থেকে মদের গন্ধ বেরোচ্ছে।দুজনেই পুরো ড্রাঙ্ক।আর কারোর সাথে কোনো কথাই বলা যাচ্ছে না ।বাইরের পুজো মণ্ডপ গুলো যেন তার কাছে শ্মশান পুরী মনে হচ্ছে।কেউ যেন তার এত্তো বছরের সম্পর্ক কে মনে হচ্ছে ধরে ধরে চিতায় পোড়াচ্ছে।
নীহারিকা আর সহ্য করতে না পেরে ড্রাইভার কে গাড়ি থামাতে বলে নিজেই নেমে গেল।
"এ কি সেই চেনা রাতুল যার সাথে ভেবেছিল সারা জীবনটা এমনভাবেই কাটিয়ে দেবে যাতে কোনো বিপত্তি আসবেনা।এ কি সেই রাতুল যে বলেছিল ঠিক আছে ছাড়, লিভ টুগেদার দরকার নেই,যা হবে সব বিয়ের পর?"
এ সে কাকে দেখছে।এক মুহূর্তের মধ্যে গোটা মানুষ সত্যি কি বদলে যেতে পারে?
দশমীর দিন সিঁদুর খেলার পর মায়ের বিসর্জন।নীহারিকা বাড়িতে কাউকে কিছু জানায়নি।মনের মধ্যে উথাল পাথাল সে কাউকে এক ফোঁটাও অনুভব করতে দেয় নি।কিন্তু নীহারিকার মা বুঝেছিলো কোনো ব্যাপার নীহারিকাকে কুরে কুরে খাচ্ছে।
ঢাক ঢোল বাজিয়ে মা কে যখন মণ্ডপের বাইরে আনা হলো,"বলো দুগ্গা মাই কী জয়"বলার সাথে সাথে তার বেদনার্ত অন্তরের শোকের ও যেন বিসর্জন হলো।
সময়ের সাথে সাথে খুব চেনা মানুষ ও অচেনা হয়।হয় খুব চেনা সম্পর্কগুলোর এক মুহূর্তে বিসর্জন ,কিন্তু ক্ষত গভীরতম হয়েই থাকে।তার প্রলেপ দেওয়া হলেও দাগ চিরতরে থেকেই যায়।